আজ দিশেহারা। মানুষগুলো যেন
মরীচিকার পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরছে।
চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে যথেষ্ট ব্যবধান
আর অতৃপ্তির মাত্রা যেন বেড়েই
চলছে। কোথাও শান্তির কোনো আভাস
মিলছে না। শুধুই হতাশা উদ্বেগ আর
উৎকণ্ঠায় কালাতিপাত করছে
মানুষগুলো। তারা ভেবেই পাচ্ছে না,
কী হচ্ছে? কী হতে যাচ্ছে? কোথায়
মানবতা? কোথায় সুখ? কোথায় শান্তি?
এসব প্রশ্ন আজ বিশ^ সভ্যতার এই যুগের
মানুষগুলোকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে
দিয়েছে।
আলহামদুলিল্লাহ, এরই মধ্যে বিশে^র
দেশে দেশে ইসলাম সম্পর্কে জানা
আর মানার আগ্রহ ও প্রবণতা বৃদ্ধি
পেয়েছে। বিবেকবান শিক্ষিত
লোকেরা ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে
পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়
জীবনের সব পর্যায়ে মানবতার অবক্ষয়
থেকে মুক্তির উপায় আর দুনিয়ায়
শান্তি ও সুখ তালাশ করছে।
বিবেকবান শিক্ষিত মানবদরদি
লোকেরা মানবতার মুক্তি আর দুনিয়ার
শান্তি ও সুখের সন্ধানে দস্তুরমতো
ব্যাপক চিন্তা গবেষণা ও অধ্যয়ন শুরু করে
দিয়েছে। আণবিক বোমা, পারমাণবিক
আর রাসায়নিক বোমা বা অত্যাধুনিক
মারণাস্ত্র পৃথিবীতে মানবতার মুক্তি,
শান্তি আর সুখ এনে দিতে পারবে না
এ বিশ্বাস থেকেই নতুন পথের সন্ধানে
গবেষণা শুরু করে দিয়েছে। কোথায়
মানবতা লুকিয়ে আছে আর কিভাবে
দুনিয়ায় শান্তি ও সুখ খুঁজে পাওয়া যায়
এটাই এখন গবেষণার বিষয় হয়ে
দাঁড়িয়েছে। আল্লাহ সোবহানাহু ওয়া
তায়ালা সূরা আল আ’রাফের ৯৬ নম্বর
আয়াতে বলেছেন, ‘আর এই জনপদের
লোকেরা যদি (আল্লাহ তায়ালার
ওপর) ঈমান আনতো আর আল্লাহকে ভয়
করে চলতো, তাহলে আমি তাদের জন্য
আসমান ও জমিনের যাবতীয় বরকতের
দুয়ার খুলে দিতাম।’ আলহামদুলিল্লাহ,
বিশ্বের বিবেকবান সমাজ সচেতন ও
জ্ঞানী লোকেরা এখন আল্লাহ
তায়ালার ঘোষিত এই সুখের সন্ধানে
চিন্তা গবেষণা শুরু করে দিয়েছে।
আমেরিকা-ভিত্তিক এক গবেষণা
সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে,
সুখের খোঁজে পশ্চিমা দেশগুলোতে
চিন্তা, গবেষণা আর অধ্যয়ন
ব্যাপকহারে শুরু করে দিয়েছে।
পশ্চিমা বিশ্বে গবেষণা আর অধ্যয়নের
ক্ষেত্রে বিশেষ করে আমেরিকাতে
সর্বাধিক গবেষণার জন্য পঠিত বা
অধ্যয়নকৃত গ্রন্থের নাম হলো নবী মুহাম্মদ
সা:-এর ওপর নাজিলকৃত মহাগ্রন্থ আল
কুরআন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নবী
ঈসা আ:-এর ওপর অবতীর্ণ গ্রন্থ ইনজিল বা
খ্রিষ্টানদের দেয়া নাম ওল্ড
টেস্টামেন্ট, নিউ টেস্টামেন্ট বা
বাইবেল আর তৃতীয় স্থানে আছে নবী
মুসা (আ:) এর ওপর অবতীর্ণ গ্রন্থ তাওরাত।
তা ছাড়া ত্রিপিটক, গীতা, উপনিষদ,
বেদসহ আরো অনেক ধর্মগ্রন্থও অধ্যয়নের
তালিকায় আছে। গবেষকদের মধ্যে
অনেকেই স্বীকার করেছেন যে, নবী
মুহাম্মদ সা: ও তাঁর ওপর নাজিলকৃত
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ব্যাপারে প্রায়
সব গ্রন্থেই ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।
আর এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯/১১ বা
নাইন-ইলেভেনের পর অর্থাৎ
আমেরিকার গর্ব টুইন টাওয়ার ধ্বংস
হওয়ার পর থেকে এ যাবৎ প্রায় ৩৭ লাখ
ইহুদি, খ্রিষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন
ধর্মের লোক ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
আনুপাতিক হারে আমেরিকার
সর্বাধিক সংখ্যক মানুষ ইসলাম গ্রহণ
করেছেন। গত মে মাসে আমেরিকার
ভার্জিনিয়া স্টেট
ইউনিভার্সিটিতে ‘নারীর অধিকার ও
ইসলাম’ বিষয়ের ওপর আন্তঃধর্মীয়
বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
হয়েছে। ওই প্রতিযোগিতায় বিশেষ
করে খ্রিষ্টানদের সাথে বিতর্কে
ভার্জিনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির
ইসলামি দাওয়া বিভাগ তথা
মুসলমানেরা জয়ী হয়। সাথে সাথে
সেখানে মা-মেয়েসহ তিনজন নারী ও
একজন পুরুষ ভার্জিনিয়া স্টেট সিটি
মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে
ইসলাম গ্রহণ করেন। ভার্জিনিয়া স্টেট
সিটি মসজিদের ইমাম তিনিও একজন
নওমুসলিম, ৯/১১ ঘটনার পর তিনি ইসলাম
গ্রহণ করেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলামের
প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। আল্লাহ
তায়ালা সূরা ইয়াসিনের ৬৮ নম্বর
আয়াতে বলেছেন, ‘প্রত্যেক সৃষ্টিকে
দীর্ঘ সময় দানের পর আমি সৃষ্টিগত দিক
থেকে তাদের প্রাথমিক অবস্থায়
ফিরিয়ে নেই।’ সূরা বাকারার ২৬৯
নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা
ঘোষণা করেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা
যাকে চান তাকে একান্তভাবে
বিশেষ জ্ঞান দান করেন, আর যে
ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালার এই
বিশেষ জ্ঞান দান করা হলো তাকে
সত্যিকার অর্থেই প্রচুর কল্যাণ দান করা
হলো, আর প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া
আল্লাহ তায়ালা এসব কথা থেকে
কেউ কোনো শিক্ষাই গ্রহণ করতে
পারে না।’
জেনে খুশি হবেন যে, আল্লাহ
তায়ালার এই অমিয় বাণী ও নিয়ম
মেনেই যেন বিশ্বের দেশে দেশে
যারা আল্লাহর বিধান লঙ্ঘনের শেষ
সীমায় পৌঁছেছিল, যারা বিবস্ত্র
বা অর্ধবসনে থাকতে পছন্দ করত, যাদের
মধ্যে মানুষের স্বভাব চরিত্র, আচার
আচরণ, পারিবারিক বা সামাজিক
জীবন বলতে কিছুই ছিল না, যাদের
মধ্যে স্বামী-স্ত্রী আর পিতৃপরিচয় ছিল
না, মায়ের পরিচয়ে যারা পরিচিত
হতো, তারাই আজ ইসলামের ছায়াতলে
আশ্রয় গ্রহণ করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেনের এক
আদালতে পিতৃপরিচয় জানতে এক
কিশোর মামলা করেছিল। আদালত তার
মাকে তার পিতৃপরিচয় ঠিক করে
দিতে নির্দেশ দেন। তার মা
যথারীতি জনৈক পুরুষকে তার পিতা
বলে পরিচয় করিয়ে দিলে সে কিশোর
তা মানতে রাজি হয়নি। আদালত
তাদের ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ
দিলে তা ল্যাবরেটরি টেস্টে মিল
খুঁজে না পেলে তার মাকে আবারো
আদালতে হাজির করা হয় এবং তার
পিতার সঠিক পরিচয় দিতে বললে তার
মা অন্য একজন পুরুষকে সে কিশোরের
পিতা বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। সে
কিশোর তাও মানতে রাজি না হলে
আবারো আদালত তাদের ডিএনএ
পরীক্ষার নির্দেশ দেন। এবারো সে
পরীক্ষায় গরমিল দেখা দিলে
আবারো তার মাকে তার পিতার
পরিচয় কী হবে জানতে চাইলে তার
মা অপর এক পুরুষের কথা বলে এভাবে
বেশ কয়েকজন পুরুষের ডিএনএ পরীক্ষার
পর সে কিশোর তার পিতার আসল
পরিচয় পায়। তখন সে কিশোর আদালতেই
বলে উঠে, পিতৃপরিচয় জানার জন্য
যেখানে আদালতে আসতে হয়, ডিএনএ
পরীক্ষা করতে হয়, সে পিতা আর সে
মা দিয়ে আমার কী হবে? এমনই অবস্থা
বিরাজ করছে পশ্চিমা বিশে^র দেশে
দেশে।
সুনিতা উইলিয়ামস যিনি দ্বিতীয়
চন্দ্র্রারোহী মহিলা। ২০১১ সালে
তিনি চাঁদে আরোহণ করেন। চাঁদে
অভিযানের আগে তিনি ব্যাপকভাবে
কুরআন নিয়ে গবেষণা করেছেন। চাঁদে
আরোহণের পর তিনি কোনো এক
অন্ধকার রাতে চাঁদে কোনো কিছু
অনুসদ্ধানে বের হয়ে পড়েন। রাতের ঘুট
ঘুটে অন্ধকারে তিনি টেলিস্কোপের
সাহায্যে চাঁদে কিছু অনুসন্ধান
করছিলেন। হঠাৎ তার দৃষ্টিতে একে
একে দু’টি উজ্জ্বল আলোর রেখা ধরা
পড়ল, একই সাথে কী যেন আওয়াজও তার
কানে ভেসে এলো। তিনি ভালো
করে দেখতে লাগলেন, তার দৃষ্টি তখন
মূলত আরব উপত্যকার দিকে। সামান্য
ব্যবধানে তিনি যে দু’টি উজ্জ্বল
আলোর রেখা দেখতে পেলেন তা
ছিল মূলত মক্কা আল মোকাররমা ও
মদিনা আল মনোয়ারা। আর যে আওয়াজ
শুনতে পাচ্ছিলেন তা ছিল মূলত মক্কা
আল মোকাররমা ও মদিনা আল
মনোয়ারার আজানের আওয়াজ। তিনি
অভিভূত হলেন। তিনি ভাবতে লাগলেন
আমার গবেষণা ও অভিযান সফল হয়েছে।
আলহামদুলিল্লাহ, সুনিতা উইলিয়ামস
পৃথিবীতে অবতরণের পর ইসলাম গ্রহণ
করেন। তার আগেও চন্দ্র্রারোহী নীল
আর্মস্ট্রং ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
পশ্চিমা বিশ্বের দেশে দেশে
ইসলামের প্রতি মানুষের আগ্রহ
বেড়েছে, বিশেষ করে মহিলাদের
মধ্যে ইসলাম গ্রহণের প্রবণতা বেশি।
ব্রাজিল সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা
আছে, নৈতিকতার দিক থেকে
ব্রাজিল তার চেয়েও নিম্নে অবস্থান
করছে। যেখানে পিতার পরিচয় নেই
বললেই চলে। তারপরও যা আছে তাতে
দেখা গেছে, নিজ কন্যাসন্তানকে
পিতা-মাতা পতিতাবৃত্তিতে ঠেলে
দিচ্ছে। পিতা-মাতাই তাদের কন্যার
জন্য খরিদ্দার জোগাড় করে দিচ্ছে।
ব্রাজিলে পতিতাবৃত্তি বা দেহব্যবসা
বৈধ! সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে
চিন্তা চেতনার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন
লক্ষ করা গেছে। ব্রাজিলের
সানপাওলো শহরে ছোট্ট একটি
মাসজিদ আছে। এই মাসজিদকে কেন্দ্র
করে সানপাওলো শহরে ইসলামি
দাওয়া নামের একটি সংগঠনের
দাওয়াতে এক খ্রিষ্টান পরিবারের
মা-মেয়ে আর এক মডেল অভিনেত্রীসহ
তিনজন নারী ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
ব্রিটেনেও নারী-পুরুষ দলে দলে ইসলাম
গ্রহণ করছে। ফ্রান্সের এক গানের
শিল্পী সাম্প্রতিক সময়ে ইসলাম গ্রহণ
করেছেন। তার নাম ছিল সুজাউ বর্তমান
নাম হচ্ছে মারইয়াম সুজাউ।
অতিসম্প্রতি ইসলাম গ্রহণ করেছেন,
ভারতের তামিলনাড়ুর বিখ্যাত
অভিনেত্রী মনিকা। তিনি পিসটিভি
ও ডা: জাকির নায়েকের বক্তব্য থেকে
বাস্তবতার নিরিখে তার ধর্মের
বিভিন্ন অসঙ্গতি আর ইসলামের সঙ্গতি
দেখে ইসলাম গ্রহণ করেছেন বলে
তিনি জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন
বিশ^বিদ্যালয়ের দুই নারী শিক্ষিকা
এ বছরের প্রথম দিকে মালয়েশিয়া
সফরে এসেছিলেন। তাদের দু’জনের
চেহারায় যথেষ্ট মিল আছে। দেখলে
মনে হয়, মা-মেয়ে অথবা আপন দুই বোন।
তারা মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক
রাজধানী পুত্রজায়া মাসজিদ দেখে
অভিভূত হন। তারা দু’জনই ছিলো প্রায়
চাইলে সেখানকার খাদেমেরা
তাদেরকে হিজাব পরতে বললে তাতে
তারা প্রথমে আপত্তি করেন।
তাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিতে
মাসজিদের পবিত্রতা রক্ষা ও গুরুত্ব
সম্পর্কে বোঝানোর পর তারা হিজাব
পরে মাসজিদে প্রবেশ করেন। মসজিদে
প্রবেশ করে তারা দেখতে পেলেন
যারাই মাসজিদে প্রবেশ করছেন
তারাই দুই রাকাত সালাত আদায়
করছেন। তারা জানতে চাইলেন এটা
কী হচ্ছে? বা এ লোকগুলো কী করছে?
মাসজিদের খাদেম ও গাইড তাদেরকে
বুঝিয়ে বললেন যে, মাসজিদের
পবিত্রতা রক্ষার জন্য মসজিদে
প্রবেশকারীরা দু’রাকাত সালাত
আদায় করছেন। এ কথা শুনে তারাও
সালাত আদায়কারীদের মতো করে দুই
রাকাত সালাত আদায় করলেন। তারা
মসজিদ পরিদর্শন শেষে যাওয়ার পথে
মসজিদের খাদেম ও গাইড তাদের দুই
জনকে দু’টি আরবি-ইংরেজি ভার্সন
কুরআন শরিফ হাদিয়া হিসেবে প্রদান
করেন। তারা এহেন হাদিয়া পেয়ে
মহাখুশি। তারা দু’জনই সে খাদেমের
সাথে প্রতিজ্ঞা করলেন যে, আল
কুরআনে কী আছে তা তারা
ভালোভাবে দেখবেন।
আলহামদুলিল্লাহ, তারা দু’জনই কুরআন
স্টাডি করে প্রকৃত ওহির জ্ঞানের
ভিত্তিতে আল্লাহর রহমতে ইসলাম গ্রহণ
করেছেন।
থাইল্যান্ড সম্পর্কে আমাদের মধ্যে
অনেকেরই খারাপ ধারণা আছে।
আসলেই থাইল্যান্ড দুনিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব
এশিয়ার একটি আনন্দফুর্তিরই দেশ।
পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে যা প্রয়োজন সবই
এখানে আছে। আশার কথা বা ভালো
ধারণার কথা হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ,
থাইল্যান্ডে সাম্প্রতিক সময়ে ‘আল
ফাতুনি’ নামে একটি ইসলামি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আরো ভালো খবর হচ্ছে, থাইল্যান্ডে
একটি ইসলামি ব্যাংক ‘ইসলামি
ব্যাংক অব থাইল্যান্ড’ নামে চালু
হয়েছে। যার বেশির ভাগ গ্রাহকই হচ্ছে
অমুসলিম আর ডিপোজিটও সন্তোষজনক
বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তা ছাড়া
থাইল্যান্ডে হালাল ফুড ইন্ডাস্ট্রিও
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের সেরা
‘রেড বোল’ নামে এই পানীয়টিও
হালাল ফুড ইন্ডাস্ট্রিজেরই একটি পণ্য।
আলহামদুলিল্লাহ, এমনিভাবে বিশ্বের
বিবেকবান আর সচেতন মানুষগুলো আজ
ইসলামের দিকে দারুণভাবে ঝুঁকছে।
আল্লাহ তায়ালা মাফ করুন, ভাবতে
অবাক লাগে বাংলাদেশে যেখানে
৯২ থেকে ৯৫% মানুষ মুসলমান সেখানে
দিন দিন ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব,
প্রচার-প্রচারণা, ইসলামি অনুশাসন
মানতে বাধা দান করা হচ্ছে।
ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলামি
শিক্ষা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা
হচ্ছে। প্রকৃত ইসলামি জ্ঞান তথা কুরআন
ও সুন্নাহর জ্ঞানের অভাবেই আজ
বাংলাদেশের মুসলমানেরা
নাস্তিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে বা
ইসলামবিদে¦ষী মনোভাব পোষণ করছে
আর ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এ
জন্য প্রথমত, দেশে আলেম সমাজ;
দ্বিতীয়ত, শাসক ও শাসনব্যবস্থাই দায়ী
থাকবে।
আলেমদের দায়িত্বের ব্যাপারে সূরা
আল বাকারার ১৪০ নম্বর আয়াতে
আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ‘আর তার
চাইতে বড় জালেম আর কে হতে পারে
যার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত
(সত্যের) সাক্ষ্য জ্ঞান (কুরআন ও সুন্নাহর
জ্ঞান) মজুদ আছে আর তারা তা গোপন
করে।’ সূরা আলে ইমরানের ১৮৭ নম্বর
আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে যে, ‘আর
স্মরণ করো আল্লাহ তায়ালা এই
কিতাবধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে
(যাদেরকে কিতাবের জ্ঞান দান করা
হয়েছে) প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছিলেন,
(তিনি তাদের বলে ছিলেন) তোমরা
একে (আল্লাহর কিতাব বা আল
কুরআনকে) মানুষের কাছে বর্ণনা করবে
আর একে (এই কিতাবকে) গোপণ করবে
না, কিন্তু তারা তাদের এ প্রতিশ্রুতি
পেছনে ফেলে রাখলো আর অত্যন্ত
সামান্য মূল্যে তা বিক্রি করে দিলো,
বড়ই নিকৃষ্ট তাদের এই বেচাকেনা যা
তারা করলো।’
শাসকদের দায়িত্বের ব্যাপারে সূরা
আল হাজ্জের ৪১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ
তায়ালার ঘোষণা হচ্ছে, ‘আমি যদি
আমার এ জমিনে (মুসলমানদেরকে
রাজনৈতিক) প্রতিষ্ঠা (শাসনক্ষমতা)
দান করি, তাহলে তারা (প্রথমে)
সালাত প্রতিষ্ঠা করবে, (দ্বিতীয়ত)
জাকাত আদায় (এর ব্যবস্থা) করবে আর
(তৃতীয়ত) দেশের নাগরিকদেরকে
তারা সৎ কাজের আদেশ দেবে আর মন্দ
কাজ থেকে বিরত রাখবে, তবে এসব
কাজের চূড়ান্ত পরিণতি একান্তভাবেই
আল্লাহ তায়ালার এখতিয়ারভুক্ত।’
লেখক : মানবাধিকারকর্মী