শুরুর কথা:
২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন’স
নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-
অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস
তাঁকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম
প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক
কারারক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ
করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার
প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন
১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট
জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন’স স্মরণে ১৪ই
ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন। (সূত্র:
উইকিপিডিয়া)
[বি:দ্র: ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব
নিষিদ্ধ হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন উৎসব পিউরিটানরাও
একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন করা থেকে বিরত
থাকার জন্যে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া,
হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস
প্রত্যাখ্যাত হয়।]
বাংলাদেশে আমদানি:
১৯৯৩ সালের দিকে আমাদের দেশে ভালোবাসা দিবসের
আবির্ভাব ঘটে। সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব শফিক রেহমান
পড়াশোনা করেছেন লন্ডনে। পাশ্চাত্যের রীতিনীতিতে
তিনি ছিলেন অভ্যস্ত। দেশে ফিরে তিনিই ভালোবাসা
দিবসের শুরুটি করেন। এ নিয়ে অনেক ধরনের মতবিরোধ
থাকলেও শেষ পর্যন্ত শফিক রেহমানের চিন্তাটি নতুন
প্রজন্মকে বেশি আকর্ষণ করে। সে থেকে এই আমাদের দেশে
দিনটির শুরু। (সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪)
হুজুগে বাঙালীর অবুঝ নীতি:
হুজুগে বাঙালীদের সবচেয়ে বড় মূর্খতাটি যেখানে প্রকাশ
পায় তা হলো নিজেদের বুদ্ধিমত্তার বিসর্জন । আর উপরের
ঘটনা দুটি খেয়াল করলেই তা অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যায় ।
(উদযাপনের দিক দিয়ে) প্রায় দেড় হাজার বছর পেছনে
থেকেও তারা (বাঙ্গালীরা) হঠাৎ ভালোবাসার
জোয়ারে ভেসে উঠে অনেককে পেছনে ফেলে পূর্ণ
মাতাল হতে সক্ষম হয়েছে । যেখানে পশ্চিমা
অপসংস্কৃতমনা জাতিগুলোও এই মেকি দিবসকে বর্জন করতে
সক্ষম হয়েছে আর সেখানে বাঙালীরা তার পূজা শুরু
করেছে । যা নেহায়েত সময় ও আবেগর অপচয় ছাড়া কিছুই না
।
একটু মাথা খাটাই:
দেড় হাজার বছর আগের ইতিহাস যদি হঠাৎ করে এসে
অনেককিছু পরিবর্তন করে ভালোবাসায় ভাসিয়ে দিতে
সক্ষম হয়, তাহলে কেন নিজের শৈশবকাল থেকে প্রাপ্ত
সার্বক্ষণিক আদর, স্নেহ আর ভালোবাসার স্মৃতি থেকে নিজ
পিতা-মাতা একটু ভাল আচরণ থেকে শুরু করে বৃদ্ধকালীন
নিরাপত্তাটাও পাচ্ছে না? কেন নিজ সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ
বুঝতে পেরেও তাঁর আনুগত্যে করা হচ্ছে না? কারণ মূলত
একটাই, আমরা পৃথিবীর চাকচিক্য ও ধোকায় পড়ে বাস্তব
সত্যকে হারিয়ে ফেলছি আর নিজেদেরকেও বানিয়ে
নিচ্ছি বোকাদের অনুসারী । যারা দেখেও (সত্যকে)
দেখে না, বুঝেও (সত্যকে) বুঝে না । যারা বধির, মূক ও অন্ধ ।
উপরের কথাগুলো নিয়ে যে কোন বাঙালী চিন্তা করতে
পারেন এবং সত্যকে খুঁজে নিতে পারেন (ইন শা আল্লাহ্) ।
তবে যখন কোন বাঙালী নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিয়ে
আল্লাহর প্রশংসা করবেন, তখন নিজ সুবিধার্তে নিচের
কথাগুলোও অন্তরে গেঁথে নিবেন (ইন শা আল্লাহ্) –
ভালোবাসা:
ভালোবাসা শব্দটির সর্বোচ্চ সঠিক ব্যবহার কেবল ইসলামেই
হয়েছে । ভালোবাসার মত উৎস্বর্গকারী বিষয়টি কেবল
একটি রূপকথার কাহিনী শুনিয়ে হাজার হাজার বছর অতিক্রম
করার শিক্ষা ইসলাম দেয়নি । বরং প্রতিটা জীবনের
প্রতিটা মূহুর্তের সাথে ভালোবাসাকে জড়িয়ে নেওয়ার
শিক্ষাই ইসলাম দেয় । আর এই ভালোবাসা কখনই একপাক্ষিক
হয় না । অর্থাৎ আমি কেবল ভালোবেসেই যাবো আর এর
প্রতিদানে কিছু পাবো না, এরকম স্বার্থপরতা কিংবা
সন্দেহপূর্ণ আচরণ ইসলাম শিক্ষা দেয় না । বরং ইসলাম এর
প্রতিদান আরো বাড়িয়ে দেয় । তাই ভালোবাসা বুঝতে
হলে, ইসলাম থেকেই বুঝতে হবে । অন্য কোথাও থেকে
ভালোবাসার নামে ধোকা ক্রয় করার মধ্যে কোন
বিচক্ষণতা নেই, বরং বোকামীর চরম পর্যায় ।
সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায় ‘একমাত্র আল্লাহ্ সুবহানওয়া
তা’আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাঁর সকল হুকুমকে মেনে নিয়ে,
তাঁর প্রতি নিজের দাসত্ব প্রমাণ করে, পরকালীন জীবনে
সুখ-শান্তির আশা করে অন্তরের মধ্যে একটি উষ্ণ অনুভুতি
ভালোবাসার দৃষ্টান্ত:
১.
একজন রানী, পার্থিব বিষয়াধিতে কোন অভাব ছিলো না
তাঁর, স্বামী পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষমতাশীল ছিলো,
লোকেরা তার গোলামী করতে কোন দ্বিধাবোধ করতো
না । কিন্তু হঠাৎ এক আগুন্তকের কথা শুনে নিজের
চিন্তাশক্তিকে পৃথিবীর বাহিরেও (আখিরাতে) নিয়ে
গেল । চিরন্তন সত্তার (আল্লাহর) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলো
। পৃথিবীর রাজপ্রসাধ ছেড়ে জান্নাতের একটি বাড়ি ক্রয়
করে নিলো । আর স্থাপন করলো তাঁর প্রভুর সাথে একটি সফল ও
উত্তম ভালোবাসার দৃষ্টান্ত । আর এমন সৌভাগ্যের
অধিকারিণী হয়েছিলেন হযরত আসিয়া (আ:) । তার চাওয়া
ছিলো- ‘হে আমার পালনকর্তা! তোমার নিকটে জান্নাতে
আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ কর! আমাকে ফেরাঊন ও তার
পারিষদবর্গের হাত থেকে উদ্ধার কর এবং আমাকে যালেম
সম্প্রদায়ের কবল থেকে মুক্তি দাও’ (তাহরীম ৬৬/১১)
২.
লোকটি বাপ-দাদার অনর্থক কর্মকান্ড লক্ষ্য করলো,
তাদেরকে সত্যের দিকে আহ্বান করলো । কিন্তু তারা
তাঁকে না বুঝেই তার প্রতি অত্যাচার শুরু করলো এবং তাঁকে
জ্বলন্ত আগুণে নিক্ষেপ করলো । সে তাঁর প্রভুর প্রতি বিশ্বাস
রাখলো, আর তাঁর প্রভু (আল্লাহ তা’আলা) তাঁকে
ভালোবেসে আগুণ থেকে রক্ষা করলো । আর প্রকাশ পেলো
আরো একটি উত্তম ও সফল ভালোবাসার দৃষ্টান্ত । আর এই
সৌভাগ্যের অধিকারী হয়েছিলেন পিতা ইবরাহীম (আ:)
এরই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: ‘’তোমাদের জন্য
ইবরাহীম ও তার সাথীদের মধ্যে উত্তম আদর্শ নিহিত
রয়েছে। যখন তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল, আমরা
সম্পর্ক ছিন্ন করছি তোমাদের সাথে এবং তাদের সাথে
যাদেরকে তোমরা পূজা কর আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে। আমরা
তোমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করছি এবং আমাদের ও
তোমাদের মাঝে স্থায়ী শত্রুতা ও বিদ্বেষ বিঘোষিত হ’ল
যতদিন না তোমরা কেবলমাত্র এক আল্লাহর উপরে বিশ্বাস
স্থাপন করবে। … প্রভু হে! আমরা কেবল তোমার উপরেই ভরসা
করছি এবং তোমার দিকেই মুখ ফিরাচ্ছি ও তোমার নিকটেই
আমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল’’ (মুমতাহানাহ ৬০/৪)
৩.
তাদের সমাজে ছিলো না সৃষ্টিকর্তার একত্ববাদ, পুরো
সমাজ ব্যবস্থা ছিলো মূর্তি পূজায় ভরপুর । কিন্তু তাঁদের
বিবেক জেগে উঠলো, তাঁরা এসব আচরণ থেকে দূরে
থাকলো । বাদশাহ্ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা
করলো । তাঁর স্বদেশ ত্যাগ করে গুহাতে আশ্রয় নিলো । আর
তাঁদের প্রভু তাঁদেরকে ভালোবাসে ঐ গুহাতে
নিরাপত্তা নিশ্চিত করলো । আর এভাবে কেটে গেলো
কয়েকশত বছর । আর এই ভালোবাসা লাভের সৌভাগ্য
হয়েছিলো, সেই আসহাবে কাহফের যুবকদের । যাদের কথা
বর্ণিত হয়েছে কোরআন মাজীদের সূরা কাহফের ৯ থেকে
২৬ নং আয়াতে ।
৪.
ছোট্ট একটি সম্প্রদায়, হঠাৎ করে সমাজে প্রচলিত বহু
কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বলতে শুরু করলো, সমাজে পরিচিত
মিথ্যা দেবতাদের বিরোধিতা করতে থাকলো ।
ফলশ্রুতিতে তাঁদেরকে (ঐ ছোট্ট দলটিকে) দেশ থেকে
বিতাড়িত করলো, তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো ।
কিন্তু ঐ ছোট্ট দলটি তাদের আদর্শে অনড় থাকলো । বিশাল
বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হলো । সংখ্যায় তিনগুণ
অধিক শত্রুর মোকাবেলা করতেও পিছপা হলোনা । মৃত্যু প্রায়
নিশ্চিত জেনেও আল্লাহর প্রতি ভরসা ও ভালোবাসা
প্রদর্শন করলো । আল্লাহ্ তাঁদের এই ভালোবাসা কবুল করে
তাদের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করলেন এবং জান্নাতের
সুসংবাদ দিয়ে দিলেন । আর এ সৌভাগ্যের অধিকারী
হয়েছিলেন বদর প্রান্তরে অংশ নেওয়া মুসলিমদের সেই
ছোট্ট দলটি । যা আজও মুসলিমদেরকে তাঁর প্রভুর প্রতি
ভালোবাসা রেখে নিজেকে উৎস্বর্গ করতে প্রেরণা দেয়
।
৫.
কোন মহাজন যখন তাঁর গোলামকে ভালোবাসার কথা বলে,
তখন ঐ গোলামের আনন্দে নেচে উঠাটাই স্বভাবিক । আর যখন
সমস্ত জাহানের মালিক আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা’আলা তাঁর
বান্দাকে ভালোবাসার ঘোষণা দেয়, তখন ঐ বান্দার জন্য
এর চেয়ে বিশি কিছু আর পাওয়ার থাকে না । আর এরকম কিছু
ঘোষণা যাদের জন্য-
“যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে,
তাদেরকে দয়াময় আল্লাহ ভালবাসা দেবেন”। -(মারিয়াম
৯৬)
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাওবাকারী ও পবিত্রতা
অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন।’’ -(সূরা আল-বাকারা:২২২)
‘‘আর নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন।’’ -(সূরা
‘‘তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত
ঈমানদার না হবে, তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ
পর্যন্ত না পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপন
করবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের কথা বলব না, যা
করলে তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত
হবে ? সাহাবীগণ বললেন, নিশ্চয় ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (তিনি
বললেন) তোমাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে সালামের প্রচলন
কর।’’ -(মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং ৮১)
মধ্যখানের কিছু কথা বলার মূল উদ্দেশ্যই হলো ইসলামে
ভালোবাসার অস্তিত্ব এবং ইহাই শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম প্রমাণ
করার চেষ্টা । আর এই অল্প কথায় ইসলামে ভালোবাসার
দৃষ্টান্ত সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট করা সম্ভব হবে না এটাই স্বাভাবিক ।
তবে এতটুকু নিশ্চিত থাকা যায় যে ‘ভ্যলেন্টাইনের’ একটি
ইতিহাসের জন্য যদি একটি দিন নির্ধারণ করা হয়, তাহলে
ইসলামে যে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত আছে এর জন্য শুধু
প্রতিদিন নয় বরং প্রতিটা মূহুর্তই নির্ধারণ করতে হবে । কারণ
মুসলিমদের জন্য তাঁর প্রভুর পক্ষ হতে রয়েছে প্রতিটা মূহর্তেই
নৈকট্য লাভের বিশেষ সুযোগ ।
তথাকথিত ভালোবাসা দিবস সম্পর্কে ইসলাম যা বলে:
ইসলাম সবসময়ই এমন কিছু কথা বলে, যা তার অনুসারীদের
(মুসলিমদের) জন্য নিঃসন্দেহে কল্যাণকর । তাই
ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুসলিম এই কথাগুলো উপেক্ষা করতে
পারে না । আর এজন্যই ভালোবাসা দিবসের পটভূমি, উদযাপন
ও ফলাফল নিয়ে ইসলাম যা বলবে তা কোনভাবেই উপেক্ষা
করা যাবে না ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
মদিনাতে আগমন করলেন তখন মদিনা বাসীদের দুটো দিবস
ছিল, যে দিবসে তারা খেলাধুলা করত৷ রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন এ দু
দিনের কি তাৎপর্য আছে? মদিনা বাসীগণ উত্তর দিলেন :
আমরা মূর্খতার যুগে এ দু দিনে খেলাধুলা করতাম৷ তখন
রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহিও য়াসাল্লাম বললেন :
‘আল্লাহ রাববুল আলামিন এ দু দিনের পরিবর্তে তোমাদের
এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন৷ তা হল ঈদুল আজহা ও
ঈদুল ফিতর৷’ (বর্ণনায় : আবু দাউদ)
আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা’আলা বলেন:
‘যারা বিশ্বাসীদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার পছন্দ করে,
তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি
রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।’ (সুরা আন নুরঃ
১৯)
রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেন:
‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই
জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে’ (আবূ দাঊদঃ ৪০৩১)
আর যারা ইসলামকে ছেড়ে অন্য কোন আদর্শের অনুসরণ করলো,
তাদের উপর হতে ইসলাম তাঁর দায়িত্ব উঠিয়ে নিয়েছে ।
আর ইসলাম যখন কারো থেকে নিরাপত্তা তুলে নেয়, তখন ঐ
ব্যক্তি পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন সে অনিরাপদ ও
ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে ।
রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেন:
”সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে আমাদেরকে ছেড়ে অন্যদের
সাদৃশ্য অবলম্বন করে ।” -(তিরমিযী)
উপরোক্ত কিছু বানী আমাদেরকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে
দিচ্ছে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’র মতো বিজাতীয় (অমুসলিমদের)
অনৈতিক আচরণের প্রতি কোন মুসলিম ন্যুনতম সম্মানও
দেখাতে পারে না এবং এটাকে পালনের চিন্তাও করতে
পারে না । বরং নিজের পরিচয় ধরে রাখতে এগুলোকে
ঘৃণার চোখে দেখাই উত্তম । এবং যথাসম্ভব এসব সামাজিক
বেহায়াপনা সম্পর্কে মানুষদের সচেতন করে এর বিরুদ্ধে
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী ।
পরিশেষে আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা’আলার পক্ষ হতে আমাদের
প্রতি সতর্কতা স্বরূপ অবতীর্ণ একটি স্পষ্ট বানী শুনিয়েই
লিখা শেষ করছি-
“এবং যে কেউই ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবন-ব্যবস্থা
আকাঙ্খা করবে, তা কখনোই তার নিকট হতে গ্রহণ করা হবে
না, এবং আখিরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন ৷” (সূরা
আলে ইমরান, ৩:৮৫)
আল্লাহ্ আমাদেরকে মুসলিম হিসেবে কবুল করুন এবং সকল
প্রকার অশ্লীল কর্ম হতে দূরে রাখুন । আমীন ।