গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আগমনে মানুষের
প্রস্তুতি হয় জাকজমক পূর্ণ। মাসাধিককাল
পূর্বেই শুরু হয় প্রস্তুতি। পূর্ণ সময়ব্যাপী
চলতে থাকে নানা আয়োজন। ব্যক্তি যত
গুরুত্বপূর্ণ হন তার আগমনপূর্ব প্রস্তুতিও হয় তত
গুরুত্ববহ। শুধু ব্যক্তি কেন, সামাজিক
কোনো গুরুত্বপূর্ণ পর্ব-প্রবচন বা অনুষ্ঠান
নিকটবর্তী হতে শুরু করলে তা বরণের জন্য
সমাজের মানুষ সর্বতভাবে নানা
আয়োজন করে সে উপলক্ষে। দীর্ঘ
সময়কাল যাবত প্রস্তুতি গ্রহণ করে সেটি
উদযাপন করার জন্য।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবার
সৃষ্টিকর্তা। তিনি মহামহিম। মহান তাঁর
বাণী। মহাগ্রন্থ পবিত্র আলকুরআনই তাঁর
বাণী। যে মাসে পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ
হয়েছে সে মাসটিও মহিমান্বিত। সে
মাসের একটি রজনী সহস্র মাস অপেক্ষা
মূল্যবান। ওই রজনীটি পাবার আশায়
মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) রমজান
মাসের পক্ষকালের অধিক সময় মসজিদে
ইতিকাফ করেছেন। শেষ বয়সে করেছেন
রমজানুল মুবারকের এত মূল্য।
সমাহীন গুরুত্ববহ ও মাহমূল্যবান এই মাসের
প্রস্তুতিকল্পে প্রিয় নবিজী (সা.)
রমজানুল মুবারক পূর্ব মাসটিতে
লাগাতার সিয়াম পালন করতেন।
আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.) বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সা.) (রমজান মাস ব্যতীত)
শাবান মাসেই সব চেয়ে বেশি রোজা
রাখতেন। (নাসাঈ: ২১১৭)
এ ছিলো রমজান উপলক্ষে রাসুল্লাহ
(সা.) এর করণীয় একটি আমল। রমজান
মাসের প্রস্তুতিকল্পে প্রিয় নবিজী
(সা.) এর একটি মৌখিক আমলও ছিলো।
রজব মাস শুরু হলে তিনি সেটি করতেন।
সেটি একটি দুয়া। রজব-শাবান এই দু’মাস
প্রিয় নবিজী (সা.) দুয়াটি বার বার
পড়তেন।
হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন,
রজব মাস শুরু হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) (দুয়ার
মধ্যে) বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক
লানা ফী রাজাবা ওয়া শাবান ওয়া
বাল্লিগ্না রামাদান’। (মিশকাত:
১/৩০৬)অর্থাত: ‘হে আল্লাহ! রজব ও
শাবান মাসে আমাদেরকে বরকতদানে
ধন্য করুন এবং রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের
আমরাও মহিমান্বিত মাস রমজানের
আগমান পূর্ব দুই মাস রজব ও শাবান মাসে
ছোট্ট এই দুয়াটি পড়ে প্রিয় নবিজী
(সা.) এর অনুসরণ করে ধন্য হতে পরি। না,
এর জন্য বিশেষ কোনো জায়গা বা
সময়ের দরকার নেই। পথ চলতে, ট্রাফিক
জ্যামে আটকা পড়েও আমরা নিজের
সময়গুলোকে মূল্যবান করতে পারি।
অযথা সময়গুলোকে নষ্ট না করে
মহিমান্বিত মাসের প্রস্তুতি হিসেবে
কাজে লাগাতে পারি। আসুন একটু
চেষ্টা করে দেখি।