আমার মতে, বর্তমান আমেরিকা সহ সারা বিশ্বে নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট হল আত্ম-সম্মান এর অভাব। বিশেষত, মুসলিম নারীদের আত্ম-সম্মান। আপনাদের সামনে অমুসলিম নারীদের উদাহরণ আছে যারা যেভাবে খুশি পোশাক পরিধান করে, অথচ আপনাদের পোশাকে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর আপনাদের মনে হয় আমাকে দেখতে কুশ্রী লাগবে আর তাদের সুন্দর লাগবে। অবশ্য কিছু মেয়েরা এমনটাই চিন্তা করে, কেন আমাকে এসব পোশাক পরতে হবে ? অথবা আমি কেন এত খাট কিংবা এত মোটা অথবা এত চর্মসার ? অনেকে ভাবে, কেন আমার চোখগুলোর দূরত্ব এত বেশি বা নাকটা এত বড় কেন ? কিংবা আমার দাঁতগুলো কি সমান হতে পারত না ইত্যাদি।কেন ? কেন আপনারা নিজেকে নিয়ে এত চিন্তিত। আমার গালে এত দাগ কেন ? ওহহ !! আমি অনেক চিন্তা করি, দেখ দেখ, কী অবস্থা ! কী বিশ্রী !! এভাবে আপনারা কমপক্ষে ৩৫ মিনিট আয়নায় দাড়িয়ে থাকেন। না, এটা ঠিক না। আপনি যা, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। এটাই গুরুত্বপূর্ণ আপনার জন্য। অন্যের কোন কিছুতেই নিজেকে খুঁজবেন না। আল্লাহ্ মানুষকে অতি সুন্দর করেই সৃষ্টিকরেছেন।
وَلَا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ بَعْضَكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ لِّلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبُوا ۖ وَلِلنِّسَاءِنَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبْنَ ۚ وَاسْأَلُوا اللَّهَ مِن فَضْلِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতেআল্লাহ তাআলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা সর্ববিষয়ে জ্ঞাত।(সূরা নিসাঃ আয়াত ৩২)
আপনার ইচ্ছা হয়, “আমি যদি ওর মতো লম্বা হতাম, আমার যদি তার মতো সম্পদ থাকত, আমার যদি ঐ পোশাকগুলো থাকত, আমি যদি দেখতে ওর মতো হতাম, আমার এটা ইচ্ছা হয়- ওটা ইচ্ছা হয়- খালি ইচ্ছা,ইচ্ছা, ইচ্ছা !” – না, আল্লাহ্ আপনাকে চমৎকার করে সৃষ্টি করেছেন; এবং এটাই যথেষ্ট। বাবা-মায়েদের বলছি, সন্তানদের প্রশংসা করা আপনাদের পরম দায়িত্ব, বিশেষত আপনাদের মেয়েদের প্রতি। আপনারাই তাদের জানাবেন যে তারা দেখতে কতো সুন্দর এবং এটা তাদের অবশ্যই বলা উচিৎ। একথা তারা আপনার কাছ থেকে না শুনলে অন্যের কাছ থেকে শুনতে চাইবে। মূর্তি হয়ে থাকবেন না, নিজের মুখে বলুন। আমাদের এখানে নারীদের আত্মসম্মান বোধ কম থাকার কারণ, কেউ তাদের মূল্যায়ন করে না। কেউ তাদেরকে তাদের যোগ্যতা জানিয়ে দেয় না।আমার বলার উদ্যেশ্য বাবারা। মায়েরা সন্তানদের এমনিতেই প্রশংসা করে। বাবাদেরকে তাদের তথাকথিত গোঁড়ামি ত্যাগ করে মেয়েদের গুনাবলী চিনিয়ে দিতে হবে। আর সন্তান যা করে তাতে সন্তুষ্ট থাকুন। তাদের কোন কাজে চরম অখুশি মনোভাব দেখাবেন না। এই দৃষ্টি তাদের অন্তরকে মেরে ফেলে। ইসলাম ধর্মে যেমন বাবা-মায়ের সন্তানের প্রতি অধিকার রয়েছে, তেমনি দায়িত্বও রয়েছে। আমরা দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলেই সন্তানের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। আমি পরিবার ও বন্ধুত্ব বিষয়গুলো আপনাদের জানাতে চেয়েছিলাম। আল্লাহ্ তায়ালা যেন এই আলোচনার সুফল আমাদের সন্তানদের দান করেন, এই প্রার্থনাই করছি…..