Site icon Trickbd.com

জেনে নিন “”আমাদের প্রাতাহিক রুটিন ঠিক করা”” সম্পর্কে।

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন।দয়া করে পোষ্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন

আমাদের প্রাতাহিক রুটিন ঠিক করাঃ

বর্তমানে আমাদের সমাজ ব্যাবস্থ্য বা আমাদের দেহঘড়ি এমন হয়ে গেছে যে, আমরা দিনে ঘুমাই আর রাত জেগে পড়াশুনা, গবেষনা বা অন্যান্য কাজকর্ম করে থাকি যা কিনা মোটেই ঠিক নয়। আমাদের কারো ক্ষেত্রে এমন হলে, এটাকে মহাবিপদ চিহ্ন হিসেবে ধরে নিতে হবে কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর দ্বারা আমাদের ফজরের সলাত বাদ যেতে পারে এবং সকাল বেলার যে বরকত তা থেকেও আমরা বঞ্চিত হতে পারি।

আবু হুরায়রা বর্ণিত, নবী বলেছেন,
“মুনাফিকের জন্য ফজর আর এশার সলাত যত কষ্টকর অন্য আর কোন সলাত অনুরূপ কষ্টকর নয়, তারা যদি এ দুটি সালাতের সওয়াব সম্পর্কে জানতো, তাহলে নিতম্বে ভর করে হলেও এ দুই সালাতে উপস্থিত হত।“ (সহিহ বোখারিঃ ৫৮০)

ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন,
“আমরা যখন দেখতাম কোন লোক ফজর ও এশার নামাজে অনুপস্থিত তখন তার প্রতি আমরা খারাপ ধারণা করতাম।“ (ইবনু আবী শাইবা)

রসূল (সাঃ) বলেন,
“যে ব্যক্তি ফজরের সলাত জামাতে আদায় করে, সে আল্লাহর জিম্মায়-দায়িত্বেই থাকে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মা-দায়িত্ব বিনষ্ট করে আল্লাহ তাকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।“ (তাবারানি)

ফজর ও এশার সলাত বাদ দেওয়া নিফাকের একটি লক্ষন। শরীয়তের পরিভাষায়, নিফাকের অর্থ হল ভেতরে কুফুরী ও খারাবী লুকিয়ে রেখে বাহিরে ইসলাম জাহির করা। একে নিফাক নামকরণের কারণ হলো, সে এক দরজা দিয়ে শরীয়তে প্রবেশ করে অন্য দরজা দিয়ে বের হয়ে যায়।

ইবনে আবি মুলাইকা বলেন,

“আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ত্রিশজন সাহাবীর দেখা পেয়েছি যারা প্রত্যেকেই নিজের ব্যাপারে নিফাকে পতিত হবার ভয় করতেন।“

মুনাফিকের আরেকটি লক্ষন হচ্ছে, সলাতে আলস্য নিয়ে দাঁড়ানো। রাতজাগা তখনই বৈধ হবে যদি ফজরের সলাত বাদ না যায়, যথাযথভাবে আদায় করা সম্ভব হয়। কিন্ত রসূল (সঃ) সকালের যাবতীয় কর্মকান্ডে বরকত দেয়ার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে দুয়া করেছিলেন অর্থ্যাৎ আমরা যদি সকালে দিকে ঘুমিয়ে থাকি তবে এই বরকত থেকে বঞ্চিত হব। রসূল (সঃ) কোন সাহাবীকে কোন মিশনে পাঠালে দিনের অগ্রভাগে প্রেরন করতেন। আর, সাহাবীদের যারা অতি সকালে ব্যাবসা-বানিজ্য শুরু করতেন, তারা অতি দ্রুতই সম্পদশালী হয়ে উঠেছিলেন।

রাত জেগে ২-৩ ঘন্টা পড়লে যে বরকত পাওয়া যাবে, ইনশাআল্লাহ্‌ সকালে ১/২ – ১ ঘন্টা পড়লেই সে বরকত পাওয়া যাবে। তাছাড়া, যিনি রাত ১০ টার দিকে কম্পিউটার, ইন্টারনেট নিয়ে বসবেন তার ফিত্নার আশংকা অনেক অনেক বেশী তার থেকে যিনি সকালে কম্পিউটার, ইন্টারনেট নিয়ে বসবেন। আমাদের সবার রুটিন ঠিক হলে সমাজ থেকে অন্যায় কাজ অনেকাংশে কমে যেত।

ফজরের সলাতের পর উত্তম কাজ হচ্ছেঃ
– ক্বুর’আন তেলাওয়াত করা
– হাদীস পাঠ করা
– দুয়া-দুরুদ, জিকির-আযকার পাঠ করা
– জ্ঞানার্জন করা
– আত্নীয়দের খোঁজ-খবর করা
– বাবা-মায়ের খোঁজ খবর নেয়া
– খেলাধুলা করা
– সলাতুল দোহা আদায় করা ইত্যাদি।

আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ঐ আমল, যা নিয়মিত করা হয়।

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হলো,
“আল্লাহ্‌ তা’আলার কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল কি? তিনি বললেনঃ যে আমল নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্প হোক। তিনি আরোও বললেন, তোমরা সাধ্যমত আমল করে যাও।“ (বুখারী, ৬০২১)

আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
“যে আমল আমলকারী নিয়মিত করে সেই আমল রসূল (সাঃ) এর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিলো।“ (বুখারী, ৬০১৮)

আল্লাহ্‌র রসূল (সঃ) এশার সলাতের আগে ঘুমাতে অপছন্দ করতেন এবং এশার সলাতের পর জেগে থাকা অপছন্দ করতেন।