আসসালামু আলাইকুম
সকল মুসলমান ভাই দের কে জানাই পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা।
ঈদ মোবারক
## আজ আপনাদের সাথে হাজির হয়েছি ঈদের নামাজ আদায় করার নিয়ম কানুন নিয়ে।
আজ দেখাব কি ভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।
কারন অনেক মুসলমান ভাই ই আছেন যারা এ সম্পর্কে জানে না। বা জানে কিন্তু তার ভুল হওয়ার ভয়ে নামাজ সঠিক ভাবে আদায় করার জন্য গুগলে সার্চ করে হয়রান হয়ে যায়।
তো জাই হোক চলুন শুরু করা যাক
# ঈদের নামাজের নিয়ত
☆ # আরবি-উচ্চারনنَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتَّةِ تَكْبِرَاتِ وَاجِبُ اللَّهِ تَعَالَى اِِقْتَدَيْتُ بِهَذَا اْلاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
# বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উছল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রকা’আতাই ছলাতিল ঈদিল ফিতর মা’আ সিত্তাতি তাকবিরতি ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা ইক্বতাদাইতু বি হা-যাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল ক্বা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবার।
# বাংলা-অর্থ
আমি ক্বিবলামুখী হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছয় তাকবীরের সাথে ঈদুল ফিতর-এর ওয়াজিব নামায এই ইমামের পিছনে আদায় করছি- আল্লাহু আকবার।
# ঈদের নামাজ আদায় করার নিয়মাবলি
☆ প্রথমে নিয়ত করতে হবে।(আরবী -বাংলা অথবা যে কোন ভাষার নিয়ত করলে চলবে।
# তাকবিরে তাহরিমা (১ম তাকবির)।
# হাত বাঁধা (কারণ এর পর ছানা পড়তে হবে)
# ছানা পড়া।।
# ১ম -অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
# ২য় -অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
# ৩য় -অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
এবং হাত বেঁধে ফেলা (কারণ এর পর সূরা পড়া হবে)
# সূরা ফাতিহা +অন্য সূরা মিলানো।
# তাকবির দেওয়া।
# রুকু করা।
# রুকু থেকে দাঁড়ানো।
# সিজদায় যাওয়া।
# ২টি সিজদা করা।
# তাকবির দেওয়া (২য় রাকাতের জন্য)।
২য় রাকাত# হাত বেঁধে দাঁড়ানো।
## সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা মিলানো।
# ৪র্থ-অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
# ৫ম-অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
# ৬ষ্ঠ -অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।। এবং রুকুতে যাওয়া
# রুকু করা।
# রুকু থেকে দাঁড়ানো।
# সিজদায় যাওয়া।
# ২টি সিজদা করা।
# তার পর নিয়ম মত তাশাহুদ দুরূদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা পাঠ করে সালাম ফিরিয়ে ঈদের নামাজ শেষ করবে।ইমাম সাহেব দুইটি খুতবা পাঠ করবেন।মুত্তাদিরা মনযোগসহকারে শুনবেন খুতবা শোনা ওয়াজিব।
উল্লেখ যে,ঈদের নামাজের জন্য আযান এবং ইকামতের প্রয়োজন নেই।ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযাহার নামাজ একই রকম শুধুমাএ নিয়ত করার সময় ঈদুল ফিতর অথবা ঈদুল আযাহার নাম পরিবর্তন করতে হবে।
ঈদ এর সুন্নাত সমুহ
১.খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা।
২.মিসওয়াক করা।
৩.উত্তম রূপে গোসল।
৪. সাধ্যমত উত্তম পোশাক পরিধান করা।
৫।খোশবু ব্যবহার করা।( তবে খয়াল রাখতে হবে যেন তাতে এ্যালকোহল না থাকে)
৬।.নামাযের জন্য ঈদগাহে যাবার পূর্বে সদকায়ে ফিতর আদায় করা।
৭।.শরীয়তের ভিতর থেকে সুসজ্জিত হওয়া এবং আনন্দ প্রকাশ করা।
৮।.ঈদে যাবার পূর্বে কিছু খেজুর বা মিষ্টিদ্রব্য খাওয়া।
৯।.পায়ে হেঁটে ঈদ গাহে যাওয়া।
১০।.ঈদ গাহে একপথে যাওয়া , অন্য পথে পত্যাবর্তন করা।
১১।.ঈদের নামায ঈদ গাহে আদায় করা।
১২।.পুরুষদের জন্য ফজরের নামাযের পর বেশি দেরি না করে তাড়াতাড়ি ঈদ গাহে যাওয়া।
১৩.ঈদ গাহে যাওয়া এবং আসার সময় নিম্নক্তো তাকবীর আস্তে আস্তে বলা-
১৪.নিজ মহল্লার মসজিদে পুরুষদের ফজরের নামায আদায় করা।
১৫.মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য বা বেজোড় সংখ্যক খেজুর খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া ।
১৬.সামর্থনুযায়ী অধিক পরিমান দান-খয়রাত করা।
১৭. ঈদের দিনে উত্তম পোশাক পরিধান করা মুস্তাহাব,তা নতুন হোক বা ধুয়ে পরিস্কার করা
হোক। হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে বর্ণিত আছে,হযরত নবী করীম (সঃ)-এর লাল ও সবুজ ডোরার একটি চাদর ছিল,তিনি তা দুই ঈদ ও জুমু’আর দিন পরিধান করতেন।
১৮.ঈদের দিনের বিশেষ ওয়াজিব আমল হল-পুরুষেরা ঈদের দিনের শুরুতে ঈদের নামায জামা’আতের সাথে আদায় করবে।
১৯.যাদের উপর ফিতরা ওয়াজিব, তাদের জন্য ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করা কর্তব্য।
২০.ঈদের দিনে চেহারায় খুশি ভাব প্রকাশ করা এবং কারো সাথে দেখা হলে, হাসিমুখে কথা বলা উচিত।
২১. আল্লাহর আনুগত্যের মধ্য দিয়ে আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া প্রকাশ করা।
২২।.ঈদগাহে একরাস্তা দিয়ে যাওয়া অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা মুস্তাহাব।
২৩.পুরুষদের জন্য ঈদের নামায পড়া ওয়াজিব।
২৪.ঈদ গাহে যাওয়া এবং আসার সময় নিম্নক্তো তাকবীর আস্তে আস্তে বলা-
اَللَّهُ اَكْبَرُ اَللَّهُ اَكْبَرُ لآَ اِلهَ اِلاَّ اللّهُ وَاللَّهُ اَكْبَرُ اَللَّهُ اَكْبَرُ وَالِلَّهِ الْحَمْدُ
বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহু আকবার,আল্লাহু আকবার,লা-ইলাহা ইল্লালাহু আল্লাহু আকবার,আল্লাহু আকবার,ওয়ালিল্লাহিল হামদ্।
অর্থঃ
আল্লাহ্ মহান আল্লাহ্ মহান- আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই আল্লাহ্ মহান আল্লাহ্ মহান সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
ঈদে বর্জনীয় কাজ সমুহ
১.দুর্গন্ধময় বস্ত্র পরিধান করা।
২.ধুমপান করা।
৩.মহিলাদের বেপর্দাভাবে মেহমানদারদের আপ্যায়ন করা,সাজসজ্জা করে বেগানা পুরুষদের
সামনে যাওয়া,সেজেগুজে বেপর্দাভাবে বাহিরে বের হওয়া ও অযথা বাহিরে ঘোরাফেরা করা।
৪.নারী-পুরুষের অবাধে পর্দাহীন ভাবে কোথাও একত্রিত হওয়া বা বেপর্দাভাবে ঈদ উদযাপন বা উৎসব অনুষ্ঠান করা।
৫।.কোন মানুষ বা প্রাণীর ছবি তোলা।
৬।.গান-বাজনা করা বা শোনা , সিনেমা দেখা।
৭.ইসলামের হুকুম লংঘন হয়- এমন খেলাধুলায় অংশ গ্রহণ করা বা দেখা ও সহযোগীতা করা।
এসব ইসলাম বিরোধী কাজের দ্বারা ঈদের পবিত্রতা নষ্ট হয় এবং আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায়ের পরিবর্তে তাঁর হুকুমের প্রতি বিদ্রোহ ঘোষনা করা হয়। তাই আমাকে আপনাকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
কোনো ভুল থাকলে জানাতে ভুলবেন না সকলেই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন। সকলের ঈদ কাটুক অনাবিল আনন্দে ও হাসি মুখে।