আ
সসালমুআলাইকুম,দ্বিতীয় পর্ব দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন..
নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় প্রথম পর্ব..
আজকের আলোচনার বিষয় সালাত/নামাজ.. আমরা মুসলিম.. আমাদের জন্য দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে.. সালাত ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ.. আল্লাহর ইবাদতের একটি মূল মাধ্যম হলো সালাত.. আমাদের সকলের অত্যন্ত একাগ্রতার সাথে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা উচিত..
কিন্তু বর্তমানে এই সালাত আদায় করা অনেকেরই হয়ে ওঠে.. অনেকে সালাত আদায় করে তাদের জোর করা হয় বলে এবং অনেকে সালাত আদায় করে লোক দেখানোর জন্য.. অনেকে সালাত অত্যন্ত দ্রুত আদায় করে.. সালাত আদায় করে ঠিকই কিন্তু তা কবুল হলো কিনা সে বিষয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই.. এখন খুব কম মানুষই একাগ্রতার সাথে আল্লার ভয় ও ভালোবাসা অন্তরে রেখে সুন্দরভাবে সালাত আদায় করে..
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সূরা মাউনে বলেছেন- “দুর্ভোগ সে সব সালাত আদায়কারীর, যারা তাদের সালাত সম্পর্কে উদাসীন” (আয়াত: ৫ ও ৬)
এবং সূরা নিসা তে বলেছেন- “তারা যখন সালাতে দাড়ায় তখন তারা রোগাক্রান্ত ব্যক্তির মতো শিথিল চিত্তে দাড়ায়. তারা লোক দেখানোর জন্যই সালাত আদায় করে, তারা আল্লাহকে কমই স্বরণ করে” (আয়াত: ১৪২)
মূলত এখানে মুনাফিক নামাজ আদায়কারীদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যারা মোক দেখানোর জন্য নামাজ পড়ে..
বর্তমানে সকলে পার্থিব জীবণ নিয়েই বেশি চিন্তিত.. পরকাল নিয়ে ভাবার কারো সময়ই নেই.. অনেকে শত চেষ্টা করেও নামাজে মনোযোগ দিতে পারে না.. নামাজে দাড়ালেই মনে নানা চিন্তা-ভাবনা ঘুরঘুর করে.. অনেকে নামাজে দাড়িয়ে কখন নামাজ শেষ হয়ে যায় টেরই পায় না.. তো এটিই আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় কিভাবে নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করা যায়..
নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়..
নিজের ব্রেনকে কন্ট্রোল করা..
আমরা যদি ছোটছোট সূরাগুলোর অনুবাদ মুখস্থ করে রাখি তাহলে সালাত আদায়ের সময় এটি আমাদের সহায়তা করবে.. আমরা যখন সালাতে কোন সূরার কোন আয়াত বলবো তখন যদি দ্বিতীয় কাজ হিসেবে পাশাপাশি এর অর্থ অনুসন্ধান বা অনুবাদ করি তাহলে আমরা অন্য কোন চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ পাবো না..
সালাতের গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে..
আমরা তো সালাত আদায় করি ঠিকই কিন্তু সালাতের গুরুত্ব অনুধাবণ করতে পারি না..আমরা উদাসীন ভাবে সালাত আদায় করি.. কিন্তু এই সালাত কি কবুল হয়?? আল্লাহ কি তা পছন্দ করেন?? অবশ্যই না.. এভাবে সালাত আদায় করলে কখনো জান্নাত লাভ করা সম্ভব নয়..
আমাদের মনে রাখতে হবে সালাত কোন উদাসীনতার ব্যাপার নয়.. সালাত আমাদের জান্নাতের চাবিকাঠি.. সালাত আদায় না করলে বা ঠিকভাবে সালাত আদায় না করলে আমরা জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবো.. মনে রাখতে হবে লোক দেখানো সালাত আদায় করলে এই সালাতের মাধ্যমে জান্নাত তো পাবোই না বরং এই সালাতই আমাদের জাহান্নাম লাভের কারণ হতে পারে..
কবরের চিন্তা করা..
আমরা সকলেই জানি আমাদের সবাইকে একদিন না একদিন মৃত্যুবরণ করতেই হবে.. আমরা যখন মৃত্যুর কথা স্মরণ করি তখন কিছুটা হলেও এই দুনিয়ার জীবণ থেকে নিজেদের আলাদা করতে পারি.. কারণ আমরা জানি আমাদের এই দুনিয়াতে যা আছে তার কিছুই আমরা কবরে নিয়ে যাবো না.. কেউ আমাদের সঙ্গে কবরে থাকবে না.. আমাদের একাই থাকতে হবে কবরে..
সালাত আদায়ের আগে কবরের চিন্তা করলে আমাদের অনুধাবণ হয় সালাতই আমাদের কবরের আযাব থেকে রক্ষা করতে পারে.. কিছুটা হলেও আল্লাহর ভয় আমাদের অন্তরে প্রবেশ করে এবং সালাতে মনোযোগ দিতে সাহায্য করে.. তাই আমাদের বেশি বেশি মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে হবে..
আল্লাহকে একমাত্র দর্শক মনে করা..
ধরুন আপনার সামনে বিখ্যাত একজন ঈমাম বসে আছেন এবং আপনি তার সামনে সালাত আদায় করছেন.. তাহলে আপনার সালাত কেমন হবে??
আপনি নিশ্চয়ই সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন আপনার সালাত সুন্দর করার জন্য.. আপনার সাালাত নিশ্চয়ই পূর্বের চেয়ে সুন্দর হবে..
তাহলে ভেবে দেখুন আপনি একজন ঈমামের সামনে যদি এতো ভালোভাবে সালাত আদায় করতে পারেন তাহলে আপনি আল্লাহর সামনে সালাত সুন্দর করার চেষ্টা করবেন না কেনো??
আল্লাহ তো আপনাকে সবসময় দেখছেন..
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সঃ) এরুপ বলেছেন- “আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে যেন তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছো. আর যদি তুমি দেখতে না পাও, তবে তিনি তোমাকে দেখছেন” ( সহিহ বুখারী.. হাদিসঃ ৫০ )
আপনার সালাতের দর্শক স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা.. সেই অনুযায়ী সুন্দরভাবে সালাত আদায় করুন..
আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিয়মিত সালাত আদায় করার তৌফিক দান করুন.. (আমিন)
এখন এ পর্যন্তই.. খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হবো.. কষ্ট করে পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ..
কোনো ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন..
যেকোন প্রয়োজনে ফেসবুকে আমিঃ