Site icon Trickbd.com

হেভেন [পর্ব-১] জান্নাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

Unnamed


আসসালামু আলাইকুম

 সবাই কেমন আছেন ? আল্লাহর রহমতে আশা করি সবাই ভালো আছেন।

আজকে আপনাদের সাথে অত্যন্ত মজার বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।যেগুলো জানলে কেউ হয়তো কল্পনার চোখে দেখবে…..
বেহেশতে শুয়ে শুয়ে শুয়ে খাচ্ছে আর ঢেঁকুর তুলছে।


আপনাদের সাথে শেয়ার করছি কারণ এর দ্বারা হয়তো কেউ একজন ঠিক করবেন আজ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ব
ইনশাআল্লাহ! আর সেটা হবে আমার জন্য অনেক বড় একটা পাওনা।আমার সমস্ত কষ্ট সার্থক!

তাহলে এবার শুরু করি কি বলেন?
প্রথমে আসি,অর্থের মধ্যে…

জান্নাত(جَنٌة) এর শাব্দিক অর্থ হল “বাগান” বা “উদ্যান”।
শাব্দিক অর্থ তো জানলাম, চলুন এবার 
জানি
জান্নাত(جَنّة) হল, ইসলামিক পরিভাষা অনুযায়ী ইহকালীন জীবনে যে সকল মুসলিম আল্লাহর বিধি-বিধান,আদেশ-নিষেধ মেনে চলবে এবং পরকালীন হিসাবে যার গুনাহ এর চেয়ে সোওয়াব এর পাল্লা বেশি ভারী হবে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে, তাদের জন্য আল্লাহ যে জায়গাটি প্রস্তত করে রেখেছেন।

১.জান্নাতুল ফিরদাউস (جنة الفردوس) সূরা কাহাফ/মূমিনুন

২.দারুস সালাম (دار اسلام) সূরা ইউনুস/আন’আম

৩.জান্নতুল মাওয়া (جنة المءوا) সূরা আন নাজম

৪.দারুল খুলদ (دار الخلد) সূরা আল ফুরকান

৫.জান্নাতুল আদন (جنة العدن) সূরা আত তাওবা/আর রাদ

৬.জান্নাতুল আখিরাহ (حنة الخره) সূরা আনকাবুত

৭.জান্নাতুন নাঈম (جنة نعيم) সূরা মায়িদা/ইউনুস/আল হাজ্ব

৮.দারুল মুক্বামাহ (دار المقامة) ফাত্বির

৯.জান্নাত ( جنة ) কোরআন ও হাদিসে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত। সূরা বাকারা/ইমরান/মায়িদা, আরো অনেক।

১.বাব আস-সালাহ ( باب اصلاة )

২.বাব আল-জিহাদ ( باب الجهاد ) 

৩.বাব আর-রাইয়ান ( باب الر ريان )

৪.বাব আস-সাদাকাহ ( باب الصدقاة )

৫.বাব আল-ঈমান ( باب الامان )

৬.বাব আল হাজ্ব ( باب الحاج )

৭.বাব আয-যিকির ( باب الزكر )

৮.বাব আল-কাদিমীন আল-গায়ীদ (باب القادمين الغيد )

আপনাদের সাথে আজকে আলোচনা করবো শুধুমাত্র জান্নাতের(ইন্সট্রাকচার) এবং প্রশস্ততা সম্পর্কে।

১.জান্নাত কি দিয়ে তৈরি।

তিরমিযী শরীফের একটি হাদিসে বলা হয়েছে…. 

:عن أبي هر يره رض قال :قلنا يا رسول الله: مم خلق الخلق؟قال من الماء قلت الجنة ما بناءها ؟قال لبنةٌمن فضّةٍ ولبنة من ذهبٍ ملاطها المسك الأذفر وحصباءها اللءلء والياقوت و تربتها الزّعفران من دخلها ينعم ولايبأس ويخلد ولا يموت لا تبلي  ثيابهم ولا يفني شبابهم

অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি একদা রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম,হে আল্লাহর রাসূল! সৃষ্টি জগতকে কি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে? উত্তরে রাসূল (সাঃ) বললেন, পানি দ্বারা। আমি প্রশ্ন করলাম জান্নাত কি দিয়ে তৈরি? উত্তরে তিনি বললেন: জান্নাত তৈরি করা হয়েছে একটি স্বর্ণের ইট এবং একটি রূপার ইট দিয়ে আর তার মসল্লা (যা দিয়ে ইট জোড়া দেওয়া হয়েছে) হল তীব্র সুগন্ধিময় মেশক্, মূল্যবান মণিমুক্তা হল,তার কংকর,জাফরান হল,তার মাটি।যে ব্যক্তি এক বার জান্নাতে প্রবেশ করবে,সে চিরকাল জান্নাতের নেয়ামতসমূহ ভোগ করতে থাকবে। কখনও সে (কোন জিনিসের) অভাব বোধ করবে না। সব সময় জীবিত থাকবে, মৃত্যু তাদেরকে স্পর্শ করবে না। জান্নাতীদের পোশাক,পরিচ্ছদ কখনও জীর্ণ হবে না। তাদের পুরুষত্বে (বুড়ো হবে না) কখনও ভাটা পরবে না।

                                        তিরমিযী শরিফঃ ৪/৬৭২ (২৫২৬)

২.জান্নাতের প্রশস্ততা ….

আল্লাহ বলেনঃ 

سَابِقُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا كَعَرْضِ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أُعِدَّتْ لِلَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
সূরা আল-হাদীদঃ আয়াতঃ ২১
অর্থঃ তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা এবং এমন জান্নাতের দিকে ধাবিত হও, যার প্রশস্ততা আসমান-যমীনের সমান, যা তৈরি করা হয়েছে ঐ সকল লোকদের জন্য যারা আল্লাহ ও তার রাসূলগণের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে। এ হচ্ছে আল্লাহ তা’য়ালার এক অনুগ্রহ, তিনি যাকে চান তাকেই এই অনুগ্রহ প্রদান করেন। আর আল্লাহ তা’য়ালা হচ্ছেন মহা-অনুগ্রহশীল।
বাস্তবে জান্নাত বিশাল এক জায়গার নাম। এক জন সাধারণ জান্নাতীকে যে বিস্তৃত জান্নাত দেওয়া হবে, তা থেকে তার প্রশস্ততা অনুমান করা যেতে পারে। কোন কোন হাদিসে উল্লেখ আছে যে,সাধারণ একজন জান্নাতী একহাজার বছর সময়ে তার নেয়ামত সমূহ দেখতে পাবে (মানে,তাকে যে পরিমাণ নেয়ামত দেওয়া হবে, সব নেয়ামত দেখতেই একবছর লাগবে) অন্য এক হাদিসে আছে,একজন সাধারণ জান্নাতীকে যে পরিমাণ জায়গা দেওয়া হবে, তা পুরো পৃথিবীর ১০গুন হবে। এ সব কথা মানুষকে মোটামুটি ধারণা দেওয়ার জন্য জান্নাতের প্রশস্ততাকে আসমান ও জমীনের প্রশস্ততার সাথে তুলনা করা হয়েছে।
عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ

                              সূরা আলে-ইমরানঃ আয়াতঃ ১৩৩

অর্থঃ জান্নাতের প্রশস্ততা আসমান ও জমীনের মত। এই আয়াতে আকাশের আরবি শব্দ (السماوات) বহুবচন। অর্থাৎ জান্নাতের প্রশস্ততা সবকটি আসমান ও জমীনের মত।

عن أبي هريره رض قال قال رسول الله صلعم في الجنة مأة درجة ما بين كل درجتين مأة عام

অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন: রাসূল (সাঃ) বলেছেন: জান্নাতে একশটি স্তর রয়েছে। প্রত্যেক স্তরের মাঝে একশত বছরের ব্যবধান রয়েছে।

                           তিরমিযী শরীফঃ ৪/৬৭৪ (২৫২৮)

আগামী পর্বে ইনশাআল্লাহ জান্নাতের দরজা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আর হ্যা,কেমন লেগেছে জানাবেন।

ধন্যবাদ। ট্রিকবিডির সাথেই থাকুন।