আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন ? আল্লাহর রহমতে আশা করি সবাই ভালো আছেন।
হুম! আজকে আমাদের টপিক হচ্ছে, জান্নাতের দরজা। অনেকজনে বলে..জান্নাত ৮টা। অনেকজনে বলে দরজা ৭/৮/৬ টা। হরেকরকমের কথা। (যদিও গত পর্বে কিছুটা আলোচনা হয়েছে) তাই আমি চাচ্ছি আপনারা সঠিক কথাটা জানুন। এই জন্য এই আয়োজন। তাহলে শুরু করি।
হাদীস
عن عقبة بن عامر رض قال: قال رسول الله صلعم: ما منكم من ٱحد يتوضٱ فيبلغ ٱوفيسبغ الضوء ثم يقول: ٱشهد ٱن لا إله إلا الله وان محمدا عبدالله ورسوله إلا فتحت له أبواب الجنة الثمانية يدخل من أيها شاء
বাংলা উচ্চারণ: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু,ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
জান্নাতে কোন ব্যক্তি কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে, সেই সম্পর্কিত একটি হাদীস। ?
? উল্লেখিত হাদীসের অর্থ এটা না যে, অন্য সব ইবাদত বাদ দিয়ে নামায পড়লে বা রোযা রাখলে অথবা জিহাদ করলে এবং দান করলে তাকে জান্নাতে প্রবেশের জন্য আহ্বান করা হবে।?? আসলে তার অর্থ হল, সমস্ত ইবাদত পালন করার সাথে সাথে, যে ব্যক্তি, যে ইবাদতের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবে, তাকে সেই ইবাদতের দরজা দিয়ে আহ্বান করা হবে) বুখারী শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ “ফাতহুল বারী” এর লেখক আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন: উপরে উল্লেখিত হাদীস দ্বারা জান্নাতের চারটি দরজা সম্পর্কে জানা গেল, তাহল
(১)বাব-ঊস-সালাত (নামাযের দরজা)
(২)বাব-ঊছ-ছাদাকাত (সদকার দরজা)
(৩)বাব-ঊল-জিহাদ (জিহাদের দরজা)
(৪)বাব-ঊর-রাইয়ান (পরিতৃপ্তির দরজা)
তারপর তিনি লিখেন, নিঃসন্দেহে
(৫)বাব-ঊল-হজ্ব নামক একটি দরজা হবে।
(৬)আরো একটি দরজা হবে তাদের জন্য যারা ক্রোধ (রাগ) দমন করে ফেলত। তা হল “বাব-ঊল-কাদিমীন আল-গায়ীধ”।
(৭)বাব-ঊল-ঈমান নামক আরো একটি দরজা আছে, যা আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসাকারীদের জন্য হবে, তারা কোনরূপ হিসাব ও শাস্তি ছাড়া ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে।
(৮)বাব-ঊয-যিকির। এই দরজার ব্যাপারে অবশ্য মতভেদ আছে যে,উক্ত দরজাটি বাব-ঊয-যিকির না হয়ে “বাব-ঊল-ইলম” হবে।এর পর তিনি লিখেন এরও সম্ভাবনা আছে যে, হযরত আবু বকর (রাযিঃ) এর মর্যাদা এবং শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে যে সব আলোচনা (লাল ফন্ট) করা হয়েছে, এগুলো মূল ফটকসমূহ ব্যতীত অভ্যন্তরীণ দরজা। কেননা সৎ কাজ আটটির চেয়ে অনেক বেশি।প্রত্যেকটি নেক কাজের যদি একটি করে দরজা থাকে, তাহলে অনেকগুলো দরজা থাকা চাই। তাই যুক্তিযুক্ত কথা হলো যে, নেক কাজের দরজা অভ্যন্তরীণ দরজা।
বসরার গভর্নর হযরত উতবা বিন গাযওয়ান (রাযিঃ) একদিন খুৎবা দেওয়ার সময় বললেন: নিঃসন্দেহে তোমরা একদিন এমন এক জগতে গমন করবে, যেখান থেকে অন্য কোথাও আর যেতে হবে না। সুতরাং তোমরা এখান থেকে উত্তম আমল নিয়ে বের হও। তিনি আরো বলেন, আমাদের বলা হয়েছে: জান্নাতের দরজার দুটি কপাটের মাঝখানে চল্লিশ বছর সময়ের দূরত্ব থাকবে। আর এটি নিশ্চিত যে, এমন এক দিন আসবে, যেদিন প্রবেশ কারীদের ভীড়ে এত বড় দরজাও সংকীর্ণ হয়ে পড়বে। বুখারী ও মুসলিম শরীফের একটি লম্বা হাদীসের শেষাংশে আছেঃ
অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন: ঐ সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার জীবন, জান্নাতের কপাটগুলির মধ্যে দু’টি কপাটের মাঝে এত বিশাল দূরত্ব হবে, যেমন মক্কা ও হিজরের মাঝে রয়েছে, অথবা যেমন মক্কা ও বসরার মধ্যে রয়েছে।
মুছান্নাফে ইবনে আবী শাইবাঃ ৭/৪০ (৩৪০৩৭)
মাজমাউল বিহার প্রণেতা বলেন: হিজর হল বাহরাইনের রাজধানী।
এই দুই হাদীস দ্বারা আমরা জান্নাতের প্রশস্ততা জানলাম।
প্রথম হাদীসে বলা হয়েছে, জান্নাতের প্রতিটি দরজার দুই কপাটের মাঝে চল্লিশ বছরের দূরত্ব। আর দ্বিতীয় হাদিসে জান্নাতের কপাটের দূরত্বকে মক্কা হিজরের দূরত্বের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আসল কথা হল, শ্রোতাদেরকে (নবী (সাঃ) কথাগুলো যাদেরকে বলেছেন) বুঝানোর জন্য রাসূল (সাঃ) তাদের বাক (কথা) পদ্বতি অনুযায়ী কখনও এভাবে আবার কখনও অন্যভাবে বলেছেন। তবে এ কথা নিশ্চিত যে, জান্নাতের দরজাসমূহের প্রশস্ততা অনেক অনেক বেশি। যেমন ঘর তেমন দরজা। ??
অন্যভাবে? কিভাবে বললেন নিচে দেখুন। ?
অর্থ: হযরত সাহল বিন সা’দ (রাযিঃ) বর্ণনা করেন: রাসূল (সাঃ) বলেছেন: অবশ্যই আমার উম্মতের সত্তর হাজার কিংবা (তিনি বলেছেন) সাত লাখ লোক পরস্পরের হাত ধরাধরি করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের (কাতারের) প্রথম ব্যক্তি সর্বশেষ ব্যক্তির পূর্বে প্রবেশ করবে না। তারপর তিনি (সাঃ) বলেন: তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাদের মত চমকাতে থাকবে। বুখারী শরীফঃ ৮/১১৪ (৬২২৪)
আজ এট্টুক! আল্লাহ যদি তাউফিক্ব দেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আরো সামনে এগিয়ে যাবো। কোন ভুল হলে অবশ্যই জানাবেন।
ধন্যবাদ।