আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন? আমি ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। আপনারাওও আশা করি ভালো আছেন। যারা আমার গত পর্ব পড়েন নাই তারা নিচে থেকে দেখে নিতে পারেন।এখান থেকে দেখুন।পোস্ট করতে দেরি হচ্ছে এইজন্য দুঃখিত। কারন হচ্ছে টাইপিং প্রথমত বাংলা টাইপিং, আরবী টাইপিং আবার সাথে কোড টাইপিং তো আছেই। আবার আরবীটার বাংলা অনুবাদ খোজা অনেক…সেসব কথা থাক। আজকের আলোচনা শুরু করি।
জান্নাতে প্রবেশকারীদের দু’টি দল।
সূরা ওয়াকিয়ায় আল্লাহ তা’য়ালা তিনটি দলের কথা উল্লেখ করেছেন: অর্থাৎ আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন ক্বিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে।
১. “আসহাবুল ইয়ামিন” বা “আসহাবুল মায়মানা” । অর্থাৎ ডান হাতে আমলননামা প্রাপ্ত দল।
২. “মুক্বাররবীন” অর্থাৎ আল্লাহ তা’য়ালার নৈকট্য প্রাপ্ত দল যেমন: আম্বিয়া, আওলিয়া, ছিদ্দীক্বিন, শহীদগণ, পরহেজগারদের দল।
৩. “আসহাবুশ-শিমাল” অর্থাৎ বাম হাতে আমলনামা প্রাপ্ত দল।
প্রথম দু’টি দল জান্নাতী হবে। তবে তাদের মর্যাদায় তারতম্য থাকবে। তারমধ্যে আল্লাহপাকের নৈকট্য প্রাপ্তদল বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হবে। আর ডান হাতে (সাধারণ ঈমানদারগণ) আমলনামা প্রাপ্তদল তাদের চেয়ে কম মর্যাদাবান হবে।
আর তৃতীয় দল অর্থাৎ যাদেরকে বাম হাতে আমলনামা দেওয়া হয়েছে, তারা দোযখী হবে। সূরা ওয়াকিয়ায় আল্লাহ তা’য়ালা সর্ব প্রথম মুক্বাররবীনদের প্রতিদানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন: তাদের মধ্যে বড় একটি পুর্ববর্তীদের মধ্য থেকে হবে।আর ছোট একটি দল পরবর্তী লোকদের মধ্য থেকে হবে।
- পুর্ববর্তী আর পরবর্তী লোক কারা? আর এর দ্বারা উদ্দেশ্য কি?
এ সম্পর্কে হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী (রাহঃ) স্বীয় তাফসীর গ্রন্থ বয়ানুল কোরআনে লিখেছেন: আগের লোক দ্বারা উদ্দেশ্য হল পূর্ববর্তীগণ অর্থাৎ হযরত আদম (আঃ) থেকে নিয়ে রাসূল (সাঃ) পর্যন্ত। আর পরের লোক দ্বারা উদ্দেশ্য হল, রাসূল (সাঃ) এর উম্মত অর্থাৎ রাসূল (সাঃ)এর পর থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মুসলমান আসবে।
তিনি আরো লিখেছেন যে, বড় দলটি পুর্ববর্তীদের থেকে হওয়া আর ছোট দলটি পরবর্তীদের থেকে হওয়ার কারণ হল, সাধারণত যে কোন যুগে বিশিষ্ট লোকদের সংখ্যা কম হয়ে থাকে। আর নিঃসন্দেহে পুর্ববর্তীদের যুগ উম্মতে মুহাম্মদীর যুগ থেকে অনেক দীর্ঘ।
সুতরাং এক লাখ বা দু’লাখ পয়গাম্বরসহ যে পরিমাণ বিশিষ্ট ব্যক্তি ঐ দীর্ঘ যুগে জন্ম নিয়েছে, তার তুলনায় স্বভাবত: এই সংক্ষিপ্ত যুগে অনেক কম হবে।
- বিশিষ্ট তাফসীরকারক আল্লামা ইবনে কাসীর পুর্ববর্তী ও পরবর্তী দ্বারা কারা উদ্দেশ্য এ সম্পর্কে তিনি অন্যরকম আর কিছু অভিমত উল্লেখ করেছেন।~~~~(স্যরি আমি সেটা জানি না)
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এখানে পবিত্র কোরআন শরীফ এর যত অনুবাদ আছে, এর মধ্যে আমি কোন কিছু বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে লিখিনি। অনুবাদ এ যা আছে তাই লিখেছি। কোন ভুল হলে অবশ্যই বলবেন, ইনশাআল্লাহ ঠিক করে নেব।
নৈকট্য প্রাপ্তদের প্রতিদান।
এই সম্পর্কে আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
এই আয়াতে সূরা দ্বারা বুঝিয়েছে এক প্রকারের মদ, যেটা জান্নাতীরা খাবে….??
- অতঃপর আসহাবুল ইয়ামিনের কথা উল্লেখ করে….
আল্লাহ তা'য়ালা বলেন
সূরা ওয়াকিয়াঃ আয়াতঃ ২৭-৪০
এরপর পবিত্র কোরআনে আসহাবুশ-শিমাল অর্থাৎ দোযখবাসী ও তাদের শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
উপকারীতাঃ মুক্বাররবীন (নৈকট্য প্রাপ্ত) লোকদের প্রতিদানের ক্ষেত্রে এমন বিলাস সামগ্রীর কথা বেশি উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো গ্রাম্য লোকদের বেশী পছন্দনীয়। এতে একথার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে শহরবাসীও গ্রামবাসীর মধ্যে যতটুকু পার্থক্য থাকে ততটুকু পার্থক্য মুক্বাররবীন ও আসহাবুল ইয়ামিনের মধ্যে থাকবে।
অর্থাৎ এর অর্থ এই নয় যে, মুক্বাররবীনদের প্রতিদানে যেসব নেয়ামতের উল্লেখ রয়েছে সেগুলো থেকে আসহাবুল ইয়ামিন বঞ্চিত থাকবে। আর আসহাবুল ইয়ামিনের প্রতিদানে যেসব নেয়ামতের উল্লেখ রয়েছে, সেগুলো মুক্বাররবীনদেরকে দেওয়া হবে না।
কারণ সবার জন্য তো সবধরনের নেয়ামত থাকবে। স্বর্গীয় বালক, সুরাপাত্র, মনোহরী নয়নের হুর, ফল-মূল ইত্যাদি সবার কাছে থাকবে। তবে বিভিন্ন দিক দিয়ে মুক্বাররবীন এবং আসহাবুল ইয়ামিনের স্তর এবং মর্যাদার পার্থক্য থাকবে। যার দিকে আল্লাহ তা’য়ালা বর্ণনারীতি দিয়ে ইংগিত করেছেন।
ফায়দাঃ সাধারণত ঈমানদার জান্নাতীদেরকে আসহাবুল ইয়ামিন বলা হয়েছে।
কারণ তাদের ডান হাতেই আমলনামা দেওয়া হবে আর এক্ষেত্রে মুক্বাররবীনরাও শরীক,কিন্তু বিশেষ ভাবে সাধারণ ঈমানদারদের নাম উল্লেখ করার দ্বারা এ দিকে ইঙ্গিত বহন করে যে, এদের মধ্যে আসহাবুল ইয়ামিন হওয়ার গুন ছাড়া বিশেষ নৈকট্য লাভের কোন গুন পাওয়া যায় না। ??
ধন্যবাদ। ভুল হলে বলবেন।
আগামী পর্বে সম্ভবত শেষ হয়ে যাবে।