Site icon Trickbd.com

শিশু ধর্ষণ করণীয়, বাঁচার উপায়

Unnamed


সাম্প্রতিক শিশু ধর্ষনের পরিমান বেড়ে যাওয়াতে মেয়ে শিশুর মায়েরা আতংকে ভুগছেন। কেউ কেউ বলছেন বাইরে পাঠাবেন না, কেউ বলছেন পুরুষ টিচার দিয়ে পড়াবেন না ইত্যাদি নানা আইডিয়া এবং সাজেশন মূলক পোস্টে সয়লাব সোশ্যাল মিডিয়া।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুগুলো ধর্ষিত হচ্ছে বা শারীরিক ভাবে এবিউসড হচ্ছে কাছের লোকজন দ্বারা। ধর্ষক গুলো কখনও আসে মামা-চাচার রুপে, কখনও প্রতিবেশী বা পাড়ার ভাই বা আংকেল কিংবা কখনও আসে বাবার বন্ধু রুপে।

একটা হাইপো-এক্টিভ সেক্সুয়াল সমাজে আমরা বাস করছি। এখানে নয় মাসের শিশুও নিরাপদে নিঃশ্বাস নিতে পারেনা। এত বড় একটা পৃথিবী অথচ ফুলের মত শিশুগুলোর নিশ্চিন্তে বড় হবার জন্য ক্যাংগারুর মত মায়ের কোল ছাড়া যেন আর কোন নিরাপদ জায়গা নেই!

যা হোক, আমার ব্যক্তিগত একটা বিশ্বাস সকল মা’দের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি। সকাল ও বিকালে (আসরের সালাতের পরে সূর্য ডুবা পর্যন্ত) প্রটেকশনের জন্য যে দুআ গুলো কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমানিত, আমরা যেন তা নিয়মিত পড়ি এবং ইখলাসের সাথে পড়ি। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে আমি পাঁচ ভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’লার নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করি।

❒ আয়াতুল কুরসী একবার

যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসী একবার পাঠ করবে সে বিকাল হওয়া পর্যন্ত জিন শাইত্বান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে, আর যে ব্যক্তি বিকালে তা পাঠ করবে সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জিন শাইত্বান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে । [সুত্র, হিসনুল মুসলিম]

❒ সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং নাস (৩ বার)

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে ‘সূরা ইখলাস’, ‘সূরা ফালাক’ ও ‘সূরা নাস’ তিনবার করে পড়বে, এটাই তার সব কিছুর জন্য যথেষ্ট হবে। [আবূ দাউদ ৪/৩২২, নং ৫০৮২; তিরমিযী ৫/৫৬৭, নং ৩৫৭৫। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৮২]

❒ এরপর একটি ছোট দুআ –

‎أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ

উচ্চারণঃ আ‘উযুবি কালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খালাক্ব)। অর্থাৎ আল্লাহ্‌র পরিপূর্ণ কালেমা সমূহের ওসিলায় আমি তাঁর নিকট তাঁর (সকল) সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।

খাওলা বিনতুল হাকীম আস-সুলামিয়াহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোক যদি কোন জায়গায় অবতরণ করে উপরের দোয়াটি পড়ে, সে উক্ত জায়গা ত্যাগ করা পর্যন্ত কোন কিছুই তার অনিষ্ট করতে পারবে না। [সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৪৩৭ | ইবনু মাজাহ (হাঃ ৩৫৪৭), মুসলিম]

❒ بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلاَ فِي السّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ».

উচ্চারণঃ বিস্‌মিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা‘আস্‌মিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই, ওয়াহুয়াস্ সামী‘উল ‘আলীম।” অর্থাৎ আল্লাহ্‌র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।”

যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং বিকালে তিনবার এই দোয়া পড়বে, কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না। [আবূ দাউদ, ৪/৩২৩, নং ৫০৮৮; তিরমিযী, ৫/৪৬৫, নং ৩৩৮৮; ইবন মাজাহ, নং ৩৮৬৯; আহমাদ, নং ৪৪৬। আরও দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ, ২/৩৩২]

❒ حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

উচ্চারণঃ হাসবি আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম।” অর্থাৎ আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো হক্ক ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর ভরসা করি। তিনি মহা আরশের রাব্ব। [সুরাহ আত-তওবাহ, আয়াত : ১২৯]

যে ব্যক্তি দুআটি সকালে সাতবার ও বিকালে সাতবার বলবে তার দুনিয়া ও আখিরাতের সকল চিন্তা ভাবনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হবেন। [আবু দাউদ, ৫০৫২]

এখন আপনার মনে হতে পারে, দুআ’য় কি ধর্ষণের মত জুলুম ঠেকানো যায়? আমার উত্তর, জ্বী অবশ্যই যায়। ইখলাসের ঘাটতি থাকলে দুআ’য় কাজ হয় কিনা আমার জানা নেই।

ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের স্ত্রী সারাহ আলাইহিস সালামের উপর এক জালিম শাসক তার কু-প্রবৃত্তি নিবারণে উদ্যত হলে সারাহ আলাইহিস সালাম উঠে গিয়ে ওযু করে সালাত আদায় করেন এবং একটি দুআ পাঠ করেন (কমেন্ট বক্সে পাবেন)। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’লা সেই শাসকের হাত অচল করে দেন। (সুবহানআল্লাহ)

আরশের রাব্বের শপথ, দুআয় কি না হয় — আমাদের শুধু প্রয়োজন পরিপূর্ণ ইখলাস…

সমাপ্ত