Site icon Trickbd.com

কোরআন ও বিজ্ঞানের প্রমান । পর্ব – ১

Unnamed

আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন।

আজকে কিছু এমন জিনিস নিয়ে কথা বলব, যা শুনে আপনি অবাক হয়ে যাবেন।
(১) :- আকাশের খুটি: সেই সময়ে নাযিল হওয়া কোরআনে লেখা হল- আকাশের কোন দৃশ্যমান খুটি নেই। আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেন “তিনিই আল্লাহ যিনি আকাশমন্ডলিকে উচুতে স্থাপন করেছেন কোন দৃশ্যমান স্তম্ভ ছাড়া, যা তোমরা বুঝতে পারবে। (সূরা রাদ:২)। আর আমাদের বিজ্ঞান আজ জানিয়েছে আকাশমন্ডলির কোন দৃশ্যমান স্তম্ভ নেই। এর আছে একটি অদৃশ্য স্তম্ভ-মধ্যাকর্ষন শক্তি! আর কোরআনও বলে দিচ্ছে একই কথা।
(২) :- মহাবিশ্বের আদি অবস্থা: আজকের বিজ্ঞান বলছে মহাবিশ্ব গ্যালাক্সিগুলো তৈরী হওয়ার পূর্বে সব পদার্থগুলো গ্যাসিয় অবস্থায় একত্রে ছিলো। চলুন দেখি দেড় হাজার বছর আগের কোরআন এ বিষয়ে কি বলে- পৃথিবী সৃষ্টি সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কোরআন বলেছে – “অত:পর তিনি আকাশের দিকে মনযোগ দিলেন যা ছিল ধুমৃকুঞ্জ, অত:পর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন তোমরা উভয়ে আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বল্য স্বেচ্ছায় আসলাম।” (সূরা হামিম আস সিজদাহ : ১১)। কিভাবে এই আধুনিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা কোরআনে এলো! ?
(৩):- মহাবিশ্বের প্রসারনশীলতা: আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেন “আমি আকাশ নির্মান করিয়াছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহা-সম্প্রসারণকারী” (সূরা জারিয়াত : ৪৭) মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল এটা এই কিছুদিন আগে প্রমাতি হয়েছে। বিজ্ঞানী আরভিন সর্বপ্রথম আলোর লোহিত অপসারন পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রমাণ করেন এ বিশ্বজগত সম্প্রসারিত হচ্ছে, গ্যালাক্সিগুলো একটার থেকে আরেকটা দূরে সরে যাচ্ছে। মুহাম্মদ (সঃ) এর কাছে কি শক্তিশালী কোন টেলিস্কোপ ছিলো, যা দিয়ে উনি গ্যালাক্সিগুলোর সরে যাওয়া দেখেছিলেন ?
(৪):- বিগ ব্যাং থিওরি: “সত্য প্রত্যাখানকারীরা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলি ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অত:পর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম” (আম্বিয়া:৩০)।আয়াতটি আমাদেরকে একেবারে পরিস্কারভাবে বলছে পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রেরা একসময় একজায়গায় পুঞ্জিভুত ছিল। এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ে এদের জন্ম হয়। আরআজকের বিজ্ঞান কি বলে এ সম্বন্ধে ? ষ্টিফেন হকিং এর বিগ ব্যাং থিওরী আজ সর্বময় স্বীকৃত। এ থিওরী অনুযায়ী মহাবিশ্বের সকল দৃশ্য অদৃশ্য গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টির শুরুতে একটি বিন্দুতে পুঞ্জিভুত ছিল। এবং একটা বিশাল বিষ্ফোরণের মাধ্যমে এরা চারিদেকে ছড়িয়ে যেতে থাকে। কিভাবে মরুভুমির বুকে সংকলিত দেড় হাজার বছর আগের একটি বই এ এই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা ধারণ করতে পারল ? ড:মিলার বলেছেন, এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা-গবেষণার পর কোরআন যে ঐশী গ্রন্থ তা মেনে নিতে বাধ্য হই। যারা প্রচার চালাচ্ছে কোরআন হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর নিজস্ব বক্তব্য তাদের দাবি নাকচ করার জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট। ড:মিলার বলেছেন, দেড় হাজার বছর আগে ইসলামের নবীর পক্ষে কিভাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য নিয়ে কথা বলা সম্ভব, যিনি কোন দিন কোন স্কুলে পড়ালেখা করেন নি। কারণ এটি এমন এক বৈজ্ঞানিক বিষয়, যা সম্পর্কে তত্ত্ব আবিষ্কার করে মাত্র কয়েক বছর আগে ১৯৭৩ সালে নোবেল পুরুস্কার পেয়েছেন এক বিজ্ঞানী। মিলারের মতে এই আয়াতে সেই বিগ ব্যাং এর কথাই বলা হয়েছে যার মাধ্যমে পৃথিবী, আকাশমন্ডলী ও তারকারাজি সৃষ্টি হয়েছে। এই বিগ ব্যাং থিওরীর একটা অনুসিদ্ধান্ত হল “অনবরত দূরে সরে যাওয়া গ্রহ নক্ষত্রগুলো একসময় আবার কাছাকাছি আসা শুরু করবে কেন্দ্রবিমুখী বল শুন্য হয়ে যাওয়ার ফলে এবং সময়ের ব্যাবধানে সব গ্রহ নক্ষত্র আবার একত্রে মিলিত হয়ে একটা পিন্ডে পরিনত হবে”। আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেন “সেই দিন আকাশমন্ডলীকে গুটিয়ে ফেলব, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর” (সূরা আম্বিয়া : ১০৪) কি কিছু বুঝা গেল ? এই হল কোরআন———–!
(৫) :- কে স্থির আর কে গতিশীল: টলেমী বিশ্বাস করতেন থিওরী অফ জিওছেনট্রিজম এ। আর মতবাদটি হল- পৃথিবী একদম স্থির, আর সূর্য সহ সব গ্রহ নক্ষত্রগুলো ঘুরছে পৃথিবীর চারিদেকে। এ মতবাদটি ষোরস শতাব্দি পর্যন্ত বিজ্ঞান হিসেবে টিকে ছিলো। এরপর কোপার্নিকাস এসে প্রমাণ করলেন, পৃথিবী সহ অন্যান্য গ্রহগুলো সূর্যের চারিদেকে প্রদক্ষিণ করছে। মাত্র ২৫ বছর আগেও বিজ্ঞান মানুষকে জানাচ্ছিল সূর্য স্থির থাকে, এটি তার নিজ অক্ষের চারপাসে প্রদক্ষিন করে না। কিন্তু আজ এটা প্রমানীত যে পৃথিবী ও সূর্য দুটোই গতিশীল। আর এদের দুজনের রয়েছে আলাদা কক্ষপথ। চলুন দেথি দেড় হাজার বছর আগের কোরআন এই ব্যাপারে কি বলে! আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেন “তিনিই একজন যিনি দিন ও রাত সৃষ্টি করেছেন, সুর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমন করছে। (সূরা আম্বিয়া:৩৩)। এমনকি আরো বলেন “এবং সূর্য তার নিজস্ব পথে চলছে যা সর্ব শক্তিমানেরই আয়ত্বে। তিনিই সব জানেন।” (সূরা ইয়াসিন:৩৮)
পরবর্তী অংশে আরো আলোচনা করব, সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, আসসালামুয়ালাইকুম।