Site icon Trickbd.com

করোনাভাইরাস এর সময়ে একজন মুসলিমের করণীয় কি? কিভাবে আমল করতে থাকলে আল্লাহ তা’আলা বিপদ তুলে নিবেন – তার বিস্তারিত আলোচনা।

Unnamed

করোনাভাইরাস এর সময়ে একজন মুসলিমের করণীয় কি? কিভাবে আমল করতে থাকলে আল্লাহ তা’আলা বিপদ তুলে নিবেন – তার বিস্তারিত আলোচনা।

 

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ

 

প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আশা করছি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি এবং সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ ।

 

প্রায় অনেক দিন হতে চলেছে আমরা করোনাভাইরাস আতঙ্কে রয়েছে এবং দিনে দিনে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক বেড়েই চলেছে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুবরণ করছে। যেখানে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। এখন এই করোনাভাইরাস হওয়ায় অনেক মসজিদও বন্ধ রয়েছে, বন্ধ রয়েছে সকল নামাজ এমনকি তারাবির নামাজ।

 

এমতাবস্থায় আমাদের মুসলমানদের কি করা উচিত কিভাবে নামাজ পড়া উচিত কিভাবে আল্লাহতালার কাছে বিপদ থেকে রক্ষা যাওয়া উচিত কি করলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই বিপদ থেকে রক্ষা করবেন, আমাদের হেফাজত করবেন । সেই বিষয় নিয়ে আজকের পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করব । তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

 

আল্লাহতালা আমাদের বলেই দিয়েছেন কোন বিপদ-আপদ মহামারী দেখা দিলে আমাদের আল্লাহতালার কাছে সাহায্য চাইতে হবে, বেশি বেশি দোয়া করতে হবে ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে অযথা কথাবাত্রা বা অন্যান্য অযথা কাজে সময় নষ্ট না করে বেশী বেশী তওবা করতে হবে।

 

আল্লাহতালার কাছে সকল গুনাহ এর জন্য মাফ চাইতে হবে আল্লাহতালার কাছে অনুনয়-বিনয় করতে হবে যাতে আল্লাহ তাআলা আমাদের মাফ করে দেন তাছাড়া হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামে বেশী বেশী দুরুদ পড়তে হবে। সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে বেশি চাইতে হবে নফল নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে কাদাকাটি করতে হবে।

 

তাছাড়া আল্লাহতালার কাছে চাওয়ার পাশাপাশি আমাদের নিজেদের সচেতন থাকতে হবে নিজেদেরকে কোয়ারেন্টাইন এর অন্তর্ভুক্ত করতে হবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেছেন নিজে সচেতন থেকে আল্লাহতালার কাছে কোন কিছু চাইলে সেটা আল্লাহতালা কবুল করবেন।

 

প্রথমত যে কাজটা আমরা করতে পারি তা হচ্ছে তওবা করা আল্লাহ তালা বলেছেন:  “অবশ্যই আমি আপনার আগে বহু জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি। অতঃপর তাদেরকে সম্পদের সংকট দিয়ে পাকড়াও করেছিলাম, যাতে করে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে। আফসোস! তাদের উপর যখন আমার শাস্তি আপতিত হল তখন তারা যদি ক্ষমা চাইতো?

 

তাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গিয়েছিল এবং তারা যা করেছিল শয়তান তা তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল।”[সূরা আন্‌আম; ৬:৪২-৪৩]

 

উপরোক্ত বাক্য তারা খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে এরকম মহামারী বিপদ-আপদ হচ্ছে আমাদের জন্য আল্লাহর তরফ থেকে একটা পরীক্ষা এই দুনিয়াটা আমাদের জন্য পরীক্ষাক্ষেত্র ।

 

আল্লাহতালা নানাভাবে আমাদের এখানে পরীক্ষা করে থাকেন আমার ঈমান পরীক্ষা করার জন্য। আর এই করোনাভাইরাস মহামারী আল্লাহ তরফ থেকে আমাদের কাছে পরীক্ষাস্বরূপ এসেছে তাই আমাদের উচিত আল্লাহ তাআলা আমাদের যা করতে বলেছেন তাই করা মানে বেশী বেশী তওবা করে আল্লাহতালার কাছে করোনাভাইরাস মুক্তি থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে চাওয়া।

 

এছাড়া আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, তারা কি দেখে না প্রতিবছরই তারা দুবার মহাবিপদে বা পরীক্ষার মুখোমুখি হয় তারপরও তারা তওবা করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না।” [সূরা তাওবা, ৯:১২৬]

 

এখানেও আল্লাহতালা বলেছেন আল্লাহ তা’আলা বিপদ আপদ থেকে মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মানুষকে দেখার জন্য যে এই বিপদ আপদের মধ্যেও তারা ইসলামের পথে দ্বীনের পথে থাকে নাকি। তাই এই সময় আমাদের ধৈর্য হারা না হয়, শয়তানের পথে বিপথগামী না হয়ে, আল্লাহতালার কাছে সাহায্য চাইতে হবে এবং তওবা করতে হবে।

 

এমনকি হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ)  তার ফাতহুল বারী গ্রন্থে (২/৪৯৭) তওবার বিষয়ে কথা বলেছেন তওবা করলে আল্লাহ কতটা খুশি হয় এবং বিপদ থেকে মুক্তি দান করেন সে বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে বিস্তারিতভাবে সেই গ্রন্থে।

 

২। বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা। এই মহামারী সময়ে সকল মুসলিমদের উচিত আল্লাহ তায়ালার দরবারে বেশি বেশি করে ইস্তেগফার পাঠ করা ইস্তেগফারের ভিতরে সাইয়েদুল ইস্তেগফার বেশি করে পড়া উচিত।

 

তাছাড়া অন্যান্য যে ইস্তেগফার আছে সেগুলো পড়লেও হবে। মানে যে যেটা পারবেন সেটা বেশি বেশি করে পড়বেন। একটি ইস্তেগফার নিচে তুলে ধরা হলো: আস্তাগফিরুল্লহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।

 

নামাজের পরে বা অবসর সময়ে এই ইস্তেগফার বেশি বেশি পাঠ করতে পারেন।

 

৩। তসবি পাঠ করা:

 

বিপদ দেখা দিলে বা মহামারী দেখা দিলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের কিছু আমল দিয়ে দিয়েছেন সেগুলো আমাদের করা উচিত বিশেষ করে দোয়া ইউনুস আমাদের বেশি বেশি করে পড়া উচিত এই মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ।

 

কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তিনি যদি আল্লাহ্‌র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণাকারীদের অন্তর্ভুক্ত না হতেন, তাহলে তাকে উত্থানের দিন পর্যন্ত মাছের পেটে থাকতে হত।” [সূরা আস-সাফ্‌ফাত, ৩৭: ১৪৩-১৪৪]

 

৪। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা:

 

কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন কোন দোয়া করার পূর্বে যদি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে দুরুদ পাঠ করে নেওয়া হয় তাহলে সেই দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা আগের চাইতে অনেক বেশি থাকে। (আলবানী ও মুসনাদ)

 

আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভাল লেগেছে পোস্টটি পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই লাইক করবেন এবং আপনাদের বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করবেন যাতে তারা উপকৃত হতে পারে আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।