আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ !
সুপ্রিয় পাঠক,
চলুন ঋণ পরিশোধের দোয়াটি জেনে নেওয়া যাকঃ
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ’ وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারনঃ আল্লাহুম্মাক ফিনি বিহালালিকা ‘আন হার-মিকা ওয়াগনিনি বি ফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।
অর্থঃ হে আল্লাহ তুমি তোমার হারাম বস্তু হতে বাঁচিয়ে তোমার হালাল রিযিক দ্বারা আমাকে পরিতুষ্ট করে দাও ( হালাল রুজিই যেন আমার জন্য যথেষ্ট হয় ) এবং হারামের দিকে যাওয়ার প্রয়োজন এবং প্রবণতা বোধ না করি এবং তোমার অনুগ্রহ অবদান দ্বারা তুমি ভিন্ন অন্য সকল হতে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দাও।
[উৎসঃ আবু দাউদ, ১ : ২১৬]
সম্মানিত পাঠক, হারাম বস্তু থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য আল্লাহর নিকট এ দোয়া করা উচিত । যাতে করে আমাদেরকে হারামের মুখাপেক্ষী হতে না হয় এবং ভুল করেও হারাম কাজ না করে ফেলি । আমরা জানি যে , করো কাছে ঋণী হয়ে যাওয়া মানে তার নিকট জবাবদিহিতা বেড়ে যাওয়া । অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি ঋণ শোধ করছেন অথবা সে আপনার ঋণ মাফ না করবে ততক্ষণ আপনি তার নিকট জবাবদিহিতা বা জিম্মি বা বন্দি অবস্থায় আছেন , মৃত্যুর পর আল্লাহ তাআলা নিজে এটি ক্ষমা করবেন না যতক্ষন না সে বান্দা আপনাকে ক্ষমা করবেন । এটি বান্দার হক , তাই বান্দা ই মাফ করতে পারে । আল্লাহ মাফ করবেন না । আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।
বিস্তারিত হাদিস শরীফ থেকে বর্ণনা করছিঃ
হযরত আবু ওয়ায়েল (রহঃ) বলেন, ” একজন মুকাতাব (অর্থাৎ মুক্তিপন আদায়ের শর্তে আযাদকৃত গোলাম) হযরত আলী (রাযিঃ) এর খেদমতে হাজির হইয়া আরজ করিল,
” আমি (মুক্তিপনের নির্ধারিত) মাল আদায় করিতে পারতেছি না। ”
হযরত আলি (রাযিঃ) বলিলেন, ” আমি কি তোমাকে সেই দোয়া শিখাইয়া দিব না যাহা রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শিখাইয়াছিলেন? যদি তোমার উপর (ইয়ামানের) শীর পাহাড় সমতূল্য ঋনও হয় তবে আল্লাহ তা’আলা সেই ঋনকে আদায় করিয়া দিবেন। তুমি এই দু’আ পড়–
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ’ وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
অর্থঃ আয় আল্লাহ, আমাকে আপনার হালাল রুজি দান করিয়া হারাম হইতে বাচাইয়া নিন এবং আপনার ফজল ও মেহেরবানীর দ্বারা আপনি ব্যাতীত অন্যদের হইতে অমুখাপেক্ষী করিয়া দিন। (তিরমিজী)
এটির ফজিলত সম্পর্কে কিছু কথাঃ
মুকাতাব সেই গোলামকে বলা হয় যাহাকে তাহার মনিব বলিয়াছে যে, যদি তুমি এত মাল এত সময়ের ভিতরে আদায় করিয়া দিতে পার তবে তুমি আযাদ হইয়া যাইবে। যে মাল নির্ধারিত হয় উহাকে ‘বদলে কিতাবাদ’ বা মুক্তিপন বলা হয়। সহজ কথায় বলতে গেলে গোলাম এবং মনিবের মধ্যে এমন চুক্তি করা যার দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে পারলে মনিব কর্তৃক গোলামটি মুক্তি লাভ করবে । যদিও এখন এরূপ সমাজ ব্যবস্থা নেই । তবুও দোয়াটি ঋণ ও হারাম মুক্ত , হালাল জীবনযাপন করার দোয়া । এটি নিয়মিত প্রত্যেক মোনাজাতে পড়া উচিত ।