আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ !
সুপ্রিয় পাঠক ও দ্বীনি ভাই , আমি আপনি হয়তো এখন আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনের অশেষ রহমতে ভালোই আছি আলহামদুলিল্লাহ ! কিন্তু তাই বলে কি মৃত্যু দূরে ছমনটি বলতে পারবো ?? নিশ্চয়ই না ! আশেপাশে লক্ষ্য করলেই বাস্তবতাই এর উত্তর পেয়ে যাবেন । কত কম বয়সী সুস্থ সবল মানুষ মারা যাচ্ছেন । তাদের মধ্যে কারো বয়স আমার বা আপনার মতো । তাহলে মৃত্যুর চিন্তা সবসময়ই মাথায় থাকা উচিত কিনা ?
মৃত্যুর কথা স্মরণ রেখে আমরা নিয়মিত নিচের আমলগুলো করবো ইনশাআল্লাহ !
✓ সাইয়্যেদুল ইস্তিগফারঃ
(اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ )
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আ’উযুবিকা মিন শার্রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্ফির্লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমার রব। তুমি ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আমি তোমার বান্দা। আমি তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকারের উপর সাধ্যানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত। আমি অনিষ্টকর যা কিছু করেছি তা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমার উপর তোমার যে নিয়ামত আছে তার স্বীকৃতি দিচ্ছি। তোমার নিকট আমার গুনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও; কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না।
উৎসঃ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬৭)
বিস্তারিতঃ
(১) হযরত সাদ্দাদ ইবনে আওস (রাযিঃ) হইতে বর্নিত আছে যে,
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন যে, যে ব্যাক্তি দিলের একিনের সহিত দিনের যে কোন অংশে এই কালিমাগুলি পড়িয়াছে এবং সেইদিন সন্ধ্যার পূর্বে তাহার মৃত্যু হইয়া গিয়াছে সে জান্নাতীদের মধ্য হইতে হইবে। এমনিভাবে যদি কেহ দিলের একিনের সহিত রাত্রের কোন অংশে এই কালিমাগুলো পড়িয়াছে এবং সকাল হওয়ার পূর্বে তাহার মৃত্যু হইয়া গিয়াছে সে জান্নাতীদের মধ্য হইতে হইবে।
(২) আবু মামার (র)……শাদ্দাদ ইবন উস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সা) বলেছেনঃ সাইয়্যেদুন ইস্তিগফার যে ব্যক্তি দিনের (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধা হওয়ার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে । আর যে ব্যাক্তি রাতের (প্রথম) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ দু’আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হওয়ার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে ।
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬৭]
✓ ইস্তিগফার
استغفر الله
উচ্চারনঃ আস্তাগ্ ফিরুল্লাহ
অর্থঃ আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
উৎসঃ (মুসলিম)
বিস্তারিতঃ
(১) হযরত আগার মুযানী (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, “কখনো আমার অন্তরে সাময়িক অবহেলা চলে আসে। তখন আমি আল্লাহর কাছে একশত বার তওবা-ইস্তেগফার করি।
(মুসলিম)
(২) হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স) কে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন, “আল্লাহর শপথ! আমি দৈনিক সত্তর বারের অধিক আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাওবা করি।”
(বুখারী)
সুপ্রিয় পাঠক, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের কখনো কোনো প্রকার ভুল করেননি , গুনাহ করেননি তাই তিনি যদি দিনে সত্তরবার তাওবা করেন তাহলে আমার আপনার কতবার তাওবা করতে হবে ?
✓ লা হাওলা
لا حول ولاقوة إلا بالله
উচ্চারনঃ লা হাওলা ওলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্
অর্থঃ আল্লাহর আশ্রয় ও শক্তি ছাড়া আর কারো কোনো ক্ষমতা নাই ।
[ উৎসঃ সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৯৬৭]
আমরা যা পড়লাম এবং যা জানলাম আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এর উপর আমল করার তৌফিক দান করুক। আমীন ।