Site icon Trickbd.com

ছোট্ট একটি দোয়া । রাসূল (সাঃ) বলেছেন যে দোয়াটি তিনবার পড়বে জাহান্নাম তার জন্য হারাম হয়ে যাবে।

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

যে দোয়া তিনবার পড়লে জাহান্নাম হারাম

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন →আর যারা জাহান্নামী হিসেবে সেখানকার অধিবাসী হবে তারা সেখানে মরবেও না বাঁচবেও না ( মুসলিম ১৮৫) অর্থাৎ কাফের, মুশরিক ও মুনাফিকরা সেখানে স্হায়ী হবে। সুতরাং তাদের জাহান্নামও স্হায়ী।

জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে হাদিসে এসেছে → তোমাদের এ আগুন জাহান্নামে আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ। সাহাবায়ে কিরাম বললেন → ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ এক ভাগ দিয়ে শাস্তি দিলেই তো যথেষ্ট হতো।তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আবারও বললেন → জাহান্নামের আগুন তোমাদের আগুনের তুলনায় উনসত্তর গুণ উত্তপ্ত। অর্থাৎ সত্তর ভাগের একভাগ।( বুখারী ৩২৬৫, মুসলিম ২৪৮৩)

জাহান্নামের শাস্তির বর্ণনা দিতে গিয়ে পবিত্র কোরআনে বারবার বলা হয়েছে – ‘নার’ তথা আগুন। যে আগুনের তীব্রতা গায়ের চামড়া খসিয়ে দেবে পুরোপুরি, পরক্ষণেই তা আবার পুনরায় পূর্বের রূপে ফিরে যাবে। আবারও আগুন তা খসিয়ে দেবে। তাদের আঘাত করা হবে আগুনের মুগুর দিয়ে।

এ প্রসঙ্গে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে → কখনও না ! তারা নিক্ষিপ্ত হবে হুত’মায়। তুমি কি জানো হুতামা কি..? (তা তো হলো) আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন। যা অন্তরসমূলকে গ্রাস করে। তা তাদেরকে বেষ্টন করে রাখবে। অতি উচুঁ স্তম্ভসমূহে। ( সূরা হুমাযাহ ৪-৯)

কোরআনে জাহান্নামের পানি আর ছায়ার বর্ণনাও রয়েছে। তার ধরণ হলো তারা পানি চাইলে দেওয়া হবে গলিত সীসা আর ছায়া হবে উত্তপ্ত। কোরআনে বলা হয়েছে → তারা থাকবে তিব্র হরম হাওয়া এবং প্রচন্ড উত্তপ্ত পানিতে। আর প্রচন্ড কারো ধোঁয়ার ছায়ার। ( সূরা ওয়াকিয়া ৪২- ৪৩)

আল্লাহ তায়ালা বলেন → তোমরা জাহান্নামকে ভয় কর যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য। ( সূরা আল ইমরান ১৩১)

নিশ্চয়ই জাহান্নাম গোপন ফাঁদ। সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য প্রত্যাবর্তন স্হল। (সূরা নাবা ২১ -২২)

আল্লাহ তায়ালা বলেন → আর যারা আমার নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করেছে তারাই হতভাগ্য। তারা পরিবেষ্টিত হবে অবরুদ্ধ অগ্নিতে। ( সূরা বালাদ ১৯ -২০)

আল্লাহ তায়ালা যেনো আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করেন। তাই প্রিয় পাঠক চলুন আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করি এই জাহান্নামের আগুন থেকে কিভাবে মুক্তি পাবো…?

রাসূল (সাঃ) আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছেন এই জাহান্নাম মুক্তি পাওয়ার দোয়া। চলুন সেই হাদিসটি আমরা জেনে নেই। আজকের আর্টিকেলটি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্টিকেল।

হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলে পাক (সাঃ) বলেছেন → আল্লাহর শপথ যে ব্যক্তি তিনবার আল্লাহর কাছে জান্নাত চায় জান্নাত তখন বলে ‘হে আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তিনবার জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি চেয়ে দোয়া করে জাহান্নাম বলে ‘হে আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দাও। ( সুনান আত তিরমিজি [তাহকীককৃত] ২৫৭২ জান্নাতের বিবরণ অধ্যায়)

তাহলে বন্ধরা আমরা হাদিসটি দ্বারা বুঝলাম আপনি যদি তিনবার আল্লাহর কাছে জান্নাত চান তখন জান্নাত বলে ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর তিনবার যদি জাহান্নাম থেকে আপনি মুক্তি চান তাহলে জাহান্নাম বলে ‘হে আল্লাহ ! এই ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দাও। তো চলুন প্রিয় পাঠক সেই দোয়াটি কি তা আমরা এখন জেনে নেই।

রাসূল (সাঃ) বলেছেন → আল্লাহর শপথ যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তিনবার জান্নাত প্রার্থনা করে জান্নাত তখন আল্লাহর কাছে দোয়া করে হে আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করো।যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তিনবার জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে জাহান্নাম আল্লাহর কাছে দোয়া করে হে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাও। ( তিরমিজি ২৫৭২,ইবনে মাজাহ ৪৩৪০, শায়খ আলবানি এই হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামি ৬২৭৫)

এখন আপনাদের অনেকের প্রশ্ন আসতে পারে ! আমি যদি ঘুষ খাই, জিনা করি,হারাম ভক্ষণ করি,নামাজ পড়ি না, রোজা রাখি না, অন্যের হক নষ্ট করি বা যদি আমি মিথ্যা বলি, এতিমের হক নষ্ট করি। আর যদি এইসব কাজ করে এই দোয়াটি পড়ি বা আমল করি তাহলে কি আমি জান্নত পেয়ে যাবো…?

তাদের উদ্দেশ্য বলিঃ জান্নাত এতো সহজ নয়। আপনাকে দ্বীনের এবং ইসলামের সকল বিধি নিষেধ হুকুম আহকাম গুলো পরিপূর্ণ মেনেই এই দোয়া করতে হবে। কারণ আমরা কেউই জানিনা আমাদের কোন কাজটা আল্লাহর কবুল করবেন, কোন দোয়াটা কবুল করবেন কোন আমলটা আল্লাহ কবুল করবেন এইটা আমরা কেউই জানিনা।

তাঁর উপর আপনি যদি মিথ্যা বলেন, গীবত করেন এবং মুসলিম হয়েও যদি অনৈতিক কাজ কর্ম করেন, তাহলে আপনার জন্য জাহান্নাম জন্য কিছু নেই। তবে হ্যাঁ এই রমজান মাসে নেক নিয়ত ও উদ্দেশ্য যদি অতিতের সকল কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান।

নিজের পাপের জন্য লজ্জিত হয়ে যদি আল্লাহর দরবারে এস্তেগফার করেন এবং ভবিষ্যতে জেনে শুনে কোনো পাপ করবেনা এবং ইসলামের সমস্ত বিধি বিধান মেনে চলেন তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ আপনাকে তাঁর প্রিয় বান্দা হিসেবে কবুল করে নিতে পারেন এবং তারপর যদি এই দোয়াটা প্রতিদিন যেকোনো ফরজ নামাজের পর তিনবার পাঠ করেন তবেই আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করতে পারেন , আপনার জন্য জাহান্নামকে হারাম করে দিতে পারেন ইনশাআল্লাহ।

তাই প্রিয় পাঠক কেউ ভুল বুঝবেন না যে শুধু এই দোয়া পড়লেই আপনি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবেন, ব্যাপারটা তা নয়।আপনাকে ইসলামের অন্যান্য বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে, ধর্মীয় কাজ গুলো করে যেতে হবে এবং অতঃপর এই দোয়া পড়ে আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইতে হবে।

তাই বন্ধুরা আমরা সকাল সন্ধ্যায় এই দোয়াটি তিনবার করে পড়বো। আল্লাহর কাছে মোনাজাত করবো, হে আল্লাহ আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। হে আল্লাহ আমাদের জান্নাত নসীব করো। তাছাড়া প্রিয় পাঠক এই দোয়াটি ( আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস আলুকাল জান্নাতা ওয়া আ’উযুবিকা মিনান্নার) এই দোয়াটি যেকোনো ফরজ নামাজের পর প্রত্যেক দিন তিনবার করে পড়বো ইনশাআল্লাহ।

আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি