Site icon Trickbd.com

যে দুই শ্রেণীর লোক দেখে আল্লাহ তায়ালা হাসতে থাকেন এবং তারাই হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

যে দুই শ্রেণীর লোক দেখে আল্লাহ তায়ালা হাসতে থাকেন

আজকে আর্টিকেলে আলোচনা করবো এমন দুই ব্যক্তি সম্পর্কে যাদের কর্মকান্ড দেখে আল্লাহ তায়ালা সরাসরি খুশি হয়ে যান।চিন্তা করুন,আল্লাহ যিনি সারা বিশ্বজাহানের অধিপতি, রাজাধিরাজ, আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছেন ! কি এমন কাজ তারা করেছেন যার কারণে আল্লাহ তাদের প্রতি এত খুশি হয়ে যান…? আর আল্লাহর খুশি হওয়া মানে হাসতে হাসতে সোজা জান্নাতে প্রবেশ।

আমরাও যদি সেই দুই শ্রেণীর ব্যক্তির মতোই আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করতে চাই এবং হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করতে চাই তাহলে অবশ্যই সেই দুই শ্রেণীর ব্যক্তির গুনে গুণান্বিত হতে হবে। এখন প্রশ্ন হলোঃ সেই দুই শ্রেণীর ব্যক্তির মধ্যে কি এমন গুণ রয়েছে যে যার কারণে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাও তাঁদের প্রতি খুশি হয়ে যান এবং আল্লাহ তায়ালা খুশিতে তাঁরা হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করার অধিকার পেয়ে যান।

এর মধ্যে এক শ্রেণী হচ্ছে সেই লোক যার সুন্দরী স্ত্রী আছে এবং খুব আরামদায়ক বিছানা আছে। কিন্তু সে রাতে সুন্দরী স্ত্রী, আরামের বিছানা ত্যাগ করে আল্লাহর দরবারে সালাতের জন্য দাড়িয়ে যায়।

আল্লাহ তাঁর এই বান্দাকে ফেরেশতাদের দেখিয়ে বলেন → দেখো সে তার আরামের ঘুম ত্যাগ করল, প্রবৃত্তিকে দমন করে আমার স্বরণে দাড়িয়ে গেল। ইচ্ছা করলে সে নিদ্রা উপভোগ করতে পারতো, নিজের প্রবৃত্তির চাহিদা মিটাতে পারতো। কিন্তু সে তা না করে আমার স্বরণে দাঁড়িয়ে গেলো। ( সহীহ তারগীব ৬২৩)

আল্লাহ তায়ালা এই ব্যক্তিকে দেখে হাসবেন – সুবহানাল্লাহ ! আমরা কি চিন্তা করতে পারছি আল্লাহ যদি কাউকে দেখে হাসেন, কারো উপর খুশি হয় তাহলে তার কি অবস্থা হবে, তার জন্য কি অপেক্ষা করছে…?

ইমাম আহমেদ তাঁর মুসনাদে আহমেদ গ্রন্হে এ বলেন → আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন → যখন আমাদের রব কাউকে এ দুনিয়ায় জীবনে দেখে হাসবেন। তার বিচার দিবসে কোন হিসাব দিতে হবে না, বিনা হিসেবে সে জান্নাত প্রবেশ করবে। কিয়ামত দিবসের যত ভয়ানক ঘটনা ঘটবে কোন কিছু তাকে স্পর্শ করবেনা। সে সব কিছু থেকে রক্ষা পাবে।কারণ তাদের কোন হিসেবের মুখোমুখি হতে হবে না।

কবরের ভয়াবহ আযাব, ইয়ামুল কিয়ামাহর ভয়ংকর পরিস্থিতি, মাথার উপরের সূর্য, মিযান,পুলসিরাত, কোন ধরনের জবাবদিহিতার মুখোমুখি তাকে হতে হবে না। সে সব কিছু থেকে মুক্ত।

এটাই ঘটবে যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার কারো দিকে তাকিয়ে হাসবেন। আমরা কি চাইনা আল্লাহ আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসুক, খুশি হয়ে যাক,কিয়ামতের ভয়াবহতা ও ভয়ংকর সব পরিস্থিতি থেকে আমরা রক্ষা পাই, বিনা হিসেবে জান্নাতে চলে যাই..? যদি আমরা তা চাই

তাহলে রাতে উঠুন আল্লাহর সাথে কথা বলুন। জড়তা, অলসতা ঝেড়ে ফেলুন। আরামের বিছানা, সুন্দরী স্ত্রী ত্যাগ করে নামাজ পড়তে উঠুন। অল্প কিছুক্ষণের জন্য আল্লাহর দরবারে দাঁড়িয়ে যান। পৃথিবীর বাকী সবাই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, কেউ দেখছে না কেউ জানছে না। শুধু আপনি আর আপনার মালিক।

আপনি ও তো পারতেন সবার মত গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকতে ! কিন্তু কোন জিনিস আপনাকে শীতের রাত কিংবা আরামের বিছানা বা সুন্দরী স্ত্রী ত্যাগ করতে বাধ্য করলো..? সেটা হচ্ছে আল্লাহর প্রতি বুকভরা ভালোবাসা আর যথাযথ ভয় ! তাহলে কোন আপনার রব আপনাকে দেখে খুশি হবেন না, মুচকি হাসবেন না..?

আল্লাহ তায়ালা বলেন → হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়োনা। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ( সূরা যুমার ৫৩)

আল্লাহ আরো বলেন → আর তারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোনো মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স্বরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন..? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে শুনে তাই করতে থাকে না।

তাদের জন্য প্রতিদান হলো তাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জন্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে প্রস্রবণ যেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে। যারা সৎ কাজ করে তাদের জন্য কতইনা চমৎকার প্রতিদান। ( সূরা ইমরান ১৩৫-১৩৬)

অর্থাৎ আল্লাহকে খুশি করার জন্য এবং নিজেদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হওয়ার জন্য রাতের বিছানা ত্যাগ করে শেষরাতে আল্লাহর নিকট বেশি বেশি প্রার্থনা করতে হবে।

দ্বিতীয় সেই ব্যক্তি, যে ব্যক্তি সফরে কাফেলার সঙ্গে থাকা অবস্থায় ভালো থাক বা কষ্টে থাক ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করে।

এখানে কাফেলা অর্থঃ উটে আহরণ কারী ব্যক্তি বা ভ্রমণকারী ব্যক্তি, যে ভ্রমণের ক্লান্তির পরেও নামাজ আদায় করে কিংবা ভ্রমনের ফলে ক্লান্তিতে ঘুম আসলেও, সেই ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করে নেয় ( মুসতাদরাকে হাকেম ১/২৫ সহীহাহ ৩৪৭৮)

আল্লাহ আমাদের সবাইকে পাপ মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি আমাদেরকে নফল ইবাদত করার তৌফিক দান করুন আমিন।

আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি