আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,
আজকে একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে
পোস্ট টি লিখছি ইং শা আল্লাহ।
অনেকেই হয়ত বিষয়টির সাথে অবগত আছেন।
ওয়াস ওয়াসা রোগ- কুমত্রণা রোগ।
OCD- Obsessive Compulsive Disorder.
বাংলায় শুচিবায়ু নামে পরিচিত।
এটি একটি psychological disorder.
এটি শরীরের অন্যান্য অংগের মত রোগ নয়।
এটা একটি মানুষিক রোগ।
এই রোগটির অনেক কমন লক্ষন আছে;
যেমন,
১। হঠাৎ করে মানুষিক পরিবর্তন – এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করা
যা অনিচ্ছায় হচ্ছে। আমি চাচ্ছি না তবে সেই চিন্তা বার বার অন্তরে নাড়া দেয়।
২। এককাজ বার বার করা।
৩। মনের ভিতর সন্ধেহ সৃষ্টি হওয়া
৪।উযু ঠিক মত হচ্ছে কিনা ভেবে অনেক সময় লাগানো।
৫। মারাত্বক রোগ হয়েছে কিনা এমন বার বার ভাবা।
৬।অনিচ্ছায় কাউকে দেখলেই মনে গালি চলে আসা।
৭।অনিচ্ছায় মনে মনে গালি চলতে থাকা।
৮।গেট লাগিয়েছি কিনা এমন চিন্তা বার বার হওয়।
৯। আল্লাহ সম্পর্কে অনিচ্ছায় এমন চিন্তা আসা যা সে কখনো
বলবেনা যদিও তাকে আগুনে ফেলা হয়।
১০। নামাজে কুমন্ত্রনা বোধ করা। রাকাত সংখ্যা বার বার ভুলে যায়।
১১।অনিচ্ছায় কোন বিপরিত জেন্ডারকে দেখে
অশ্লীল চিন্তা, অশ্লীল চিত্র নিজের চোখে ভাসা যদিও তারা
আপন মা, চাচি বা আত্নীয় হয়।
১২।এমন মানুষিক পরিবর্তনের কারণে পড়াশোনা করতে
না পারা।
১১।অনিচ্ছায় কারো উপর অভিশাপ আসা।
১২। অনিচ্ছায় কোনো মুসলিমকে কাফির মনে করা।
১৩।ইসলামিক বিষয়ে অনিচ্ছায় অন্তরে কুমন্ত্রণা আসা।
১৪।এসব কুমন্ত্রণা আসার কারণে মানুষিকভাবে ভেঙে পড়া।
১৫।সাহাবিদের বিষয়েও খারাপ চিন্তা অনিচ্ছায় আসা।
১৭।বাথ্রুমে অনিচ্ছায় কুর আনের আয়াত মনে হওয়া।
১৮।কুরআনকে অবমাননা মুলক, খারাপ চিন্তা মনে
আসা।
১৯।অনিচ্ছায় ছেলে-ছেলের প্রতি আকর্ষন আসতে পারে।
২০।নিজেকে তুচ্ছ মনে করা।
২১। নিজেকে কাফির মনে করা, বা, নিজে বাদে সবাইকে খারাপ মনে করা।
আরও, লক্ষণ থাকতে পারে ব্যাক্তিভেদে।যেকেউ যেকোন বয়সেই এ রোগ হতে পারে।
যখন কেউ হঠাৎ করে এই ফেস করে তখন সে
খুবই এলোমেলো হয়ে যায়।তার জানা থাকে না কি করা
যায়, এর সমাধান কি?
এক কুমন্ত্রণা নিয়ে ভাবলে আরেক কুমন্ত্রণা আসে।
শুধু ঘুমের সময়টাই মুক্ত থাকে।
আর এইরকম ভয়াবহ কুমন্ত্রণা আসার কারণে অনেকে
পিতা মাতাকে জানাতেও চায় না বা পারে না।
এর কারণ:
১।শয়তানের আছরের কারণে হতে পারে।
২।ক্বারিন জিন- সহচর শয়তান শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার এর কারণে।
৩।মানুষিক কিছু সমস্যার কারণেও হতে পারে।
তবে, প্রধান কারণ হলো শয়তান।
মহান আল্লাহ কুরআনে বহুবার বলেছেন শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
তাই, আমরা মানুষের সাথে শত্রুতা থাকলে তাকে হত্যাও করতে রাজি থাকি।
তবে, আসল শত্রুর কথা কি মনে আছে? আমাদের মনে না
থাকলেও শয়তান আমাদেরকে শত্রুর মতই দেখছে
তার উদ্দেশ্য, সে জাহান্নামী তাই সে মানুষকেও জাহান্নামে
নিতে চায়।যার কারণে, সে মানুষের মনে কুমন্ত্রনা আল্লাহ বিষয়ে
ইসলাম বিষয়ে, নাস্তিকতামুলক চিন্তা ঢালে যাতে সে ইমান হারিয়ে ফেলে।
এটা কিছুটা ব্রুট ফোর্স এটাকের মত
যেখানে দুর্বলতা সেখানেই আঘাত করে শয়তান।
তবে, শয়তানের কায়দা অবশ্যই দুর্বল।
শয়তান এই রোগীদের কতভাবে নির্যাতন করছে। তবে তাদের
জন্য সুসংবাদ আছে” যদি কেউ আল্লাহ বিষয়ে এমন
কিছু চিন্তা আসে যদি তাকে আগুনে ফেলা হয় তবুও
সে বলবে না ” তার ইমান আছে এটাই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
তাদের এমন হচ্ছে বলে তারা খারাপ, সে ওয়াস ওয়াসায়
আক্রান্ত বলে সব শেষ এগুলো মনে করার কোনো
সুযোগ নেই। কারণ, সে এগুলো ইচ্ছায় করছে না,
এগুলোতে তার কস্ট হচ্ছে যা ইমানের বহি:প্রকাশ।
তার চেষ্টার দরুন আল্লাহ তার ইমান বাড়িয়ে দিতে পারেন।
তার জন্য পরহেজগার হওয়া সহজ হচ্ছে,
কারণ, সে বুঝতে পারছে শয়তান কি জিনিস।আল্লাহ যা বলেছে, রসুল (স:)
যা বলেছেন সে সব মিল পাচ্ছে – শয়তান এই এই করে,
কোনো প্রানী দেখলে তার মনে শয়তান ঢালে
যে, এত সুন্দর প্রানী কে সৃষ্টি করল? আল্লাহ।
এবার শয়তান বলবে, আল্লাহকে কে…
নাউযুবিল্লাহ- এ কথায় একমত হলেই ইমান চলে যাবে।
সে জানতে পারল, হাদিসে যেটা রয়েছে সেটা তার সাথে
হচ্ছে তখন তার ইমান আরো বেড়ে যাই
তার সন্দেহ থাকে না। ইসলামটাই সঠিক ধর্ম এটা
সে অনুধাবন করার সুযোগ পায়। না হয়, তার মনে সারাদিন
জাহান্নামে যাওয়ার মত কথা কেন পুশ করবে?
সে শয়তানের পথ ছেড়ে দেয়।
# শয়তানের জবাব:
Create সৃষ্টি করা।
Created সৃষ্ট/যাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
Creator যিনি সৃষ্টি করেছেন।
হ্যা, আমরা তাকেই সৃষ্টি কর্তা মানি যিনি সৃষ্টি করেছেন।
Created: সৃষ্ট যাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সে তো সৃষ্টি কর্তা হতেই পারে না।
তাহলে, প্রমানিত, যিনি Creator হন তিনি সৃষ্ট নন।তিনিই সৃষ্টি করেন।
তাই তাদেরকে নিয়ে হাসি তামাশা করা চরম ঘৃনিত কাজ।
“অন্য মুসলিমের এমন কস্টে তামাশা করার জন্য
তামাশাকারী ব্যাক্তিও তো আক্রান্ত হতে পারে।”
হতাশার কিছু নেই এই রোগটির সহজ সমাধান রয়েছে যা আগামী পোস্টে আলোচনা
করা হবে ইং শা আল্লাহ।