Site icon Trickbd.com

যে ৪ প্রকার কাজ আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না। আসুন সেই কাজ গুলো সবাই জেনে নেই।

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

যে ৪ প্রকার কাজ আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না।

পবিত্র কুরআন মানুষের জন্য পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। এতে রয়েছে মানুষের জীবনে হালাল-হারাম ইতিবাচক-নেতিবাচক সমস্ত বিষয়ে বিশদ বর্ণনা। যথাসময়ে নামাজ রমজানে রোজা কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন-যাপনসহ মৃত্যুর স্বরণ ইত্যাদি সবকিছু আল্লাহর কাছে অনেক পছন্দনীয় বিষয়ে।

আল্লাহ তায়ালা নামাজ-রোজা জীবন-মৃত্যু সহ দুনিয়ার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ মানুষ এসব নির্দেশের চরম অবহেলা করে। আল্লাহর নির্দেশের মধ্যে চারটি কাজে অবহেলা করা আল্লাহর কাছে শুধু অপছন্দনীয় নয় বরং আল্লাহ তায়ালা বিধানের চরম লংঘন। আর তা হলো

এক নাম্বার হলোঃ কবরস্তানে বসে হাসাহাসি করা কিংবা মৃত্যুকে নিয়ে উদাসীন থাকা। কবরস্থান মানুষকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। মানুষ মৃত্যুর কথা স্মরণ না করে কবরস্তানে বসে হাসাহাসি করা আল্লাহর কাছে চরম অপছন্দনীয় কাজ। তাই কবরস্থানের কাছে হাসাহাসি না করে মৃত্যুর কথা স্মরণ করাই উত্তম।

কারণ মৃত্যু চিরন্তন বাণী চিরন্তনী মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পরেই মানুষ সত্যটা উপলব্ধি করতে পারবে। তারা তখন আফসোস করতে থাকবে যখন তাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে তখন সে বলে হে আমার পালনকর্তা আমাকে পুনরায় দুনিয়াতে পেরন করুন। (সূরা আল মুমিনুন আয়াত 99)

আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন →মৃত্যুর উদ্দেশ্য হলো সবাইকে আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেওয়া এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।( সূরা আম্বিয়া আয়াত 35)

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেন→ তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু কিন্তু তোমাদের পাকড়াও করবেই যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরও অবস্থান করো তবু তোমাদের মৃত্যু হবে।( সূরা নিসা আয়াত 78)

আল্লাহ আরো বলেনঃ আমি তোমাদের মাঝে মৃত্যুকে নির্ধারণ করেছি। (সূরা ওয়াকিয়া আয়াত ৬০) প্রিয় পাঠক আসুন, আমরা মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করে সঠিক পথে চলার চেষ্টা করি। আর মৃত্যুর মতো একটা চিরন্তন সত্য এবং পরকালের যাত্রা বিষয়কে কোনভাবেই তামাশার বিষয় মনে না করি।

দ্বিতীয় নাম্বার হলোঃ নামাজ না পড়া কিংবা নামাজে অবহেলা করা। নামাজ সঠিকভাবে আদায় করা এবং নামাযের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেরি না করে তা আদায় করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন →তারপর সে নামাজিদের জন্য ধ্বংস। যারা নিজেদের নামাজের ব্যাপারে গাফিলতি করে।( সূরা মাউন আয়াত ৪-৫)

পবিত্র কোরআনে মুনাফিকদের অবস্থা এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে আল্লাহ তায়ালা বলেন→ তারা যখনই নামাজে আসে তখন তারা অবসাদগ্রস্ত দের মত আসে এবং যখনই আল্লাহর পথে খরচ করে তখন তারা অনিচ্ছাকৃতভাবে করে।( সূরা তাওবা আয়াত 4)

অর্থাৎ আমরা অনেক সময় নামাজে অলসতা করে থাকি এবং বিশেষ বিপদে না পড়লে আমরা দান করতে চাই না কিংবা হঠাৎ কোনো বিপদে পড়লে আমরা দান-খয়রাতের নিয়ত করে থাকি। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে আমরা দান করতে তেমন আগ্রহ বোধ করিনা। তাই এই অভ্যাসগুলো আমাদের ত্যাগ করতে হবে। পবিত্র কোরআনুল কারিমের ৮২ জায়গায় নামাজ কায়েম করার প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।

ইসলামী নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য যেমন অপরিসীম তেমনি আল্লাহর রহমত ইহকাল পরকালের মুক্তিলাভের প্রধান অবলম্বন হিসেবে নামাজের বৈশিষ্ট্য অতীব তাৎপর্যপূর্ণ। যে ব্যক্তি নামাজের আনুষাঙ্গিক শর্তাবলী যথারীতি পালন করে আদায় করে আল্লাহতালা তাকে আল্লাহর স্বীয় আশ্রয় ও নিরাপত্তা রাখার নিশ্চয়তা প্রদান করবেন।

হযরত রাসূল (সাঃ) বলেছেন→ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ স্বচ্ছ নহর সমতুল্য অর্থাৎ দৈনিক পাঁচবার ওই স্বচ্ছ পানিতে গোসল করলে যেমন শরীরের ময়লা ধুলোবালি ইত্যাদি দূর হয়ে যায় তেমনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের সমুদয় গুনাহরাশি মাফ
করে দেন।

হযরত রাসূল (সাঃ) আরো বলেছেনঃ নামাজ ধর্মের ভিত্তি। যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করেছে সে ধর্মকে বিনাশ করেছে।(প্রাসঙ্গিক হাদিসঃ মুসলিল, হাদিস ১৩৭৯)

তিন নাম্বার হলোঃ কোরআন তেলাওয়াতের সময় তা না শোনা বা অগ্রাহ্য করা। আল্লাহ তা’আলা বলেন→ আর যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ থাকো যাতে তোমাদের প্রতি দোয়া করা হয়। (সূরা আরাফ আয়াত 204)

এর আগের আয়াতে বলা হয়েছে যে পবিত্র কোরআনুল কারীম মুমিনের জন্য রহমত স্বরূপ। তবেই রহমত থেকে পরিপূর্ন লাভবান হওয়ার জন্য কিছু শর্ত ও আদব রক্ষা করা জরুরি।ঐ আদবের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েই বলা হয়েছে, যখন কোরআন পড়া হয় তখন তা চুপ থেকে মনোযোগ দিয়ে শোনো যাতে তোমাদের প্রতি রহমত হয়।

পবিত্র কোরআনে কারিমের আদব এবং শিষ্টাচার সমূহ থেকে একটি আদব হলো কোরআন পাঠ চলাকালীন চুপ থাকে তা মনোযোগ দিয়ে শোনা। তাফসীরে কুরতুবী বর্ণনা মতে এখানে মনোযোগ দিয়ে শোনার আদেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তাঁর বাণী অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমলে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আর আয়তন শতাংশ অর্থাৎ যাতে তোমাদের প্রতি রহমত করা হয়। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি কোরআন রহমতস্বরূপ হওয়ার শর্ত হলো তার আদব রক্ষা করা। সুতরাং এ কথায় স্পষ্ট যে যারা এর পরিপন্থী কাজ করবে তারা সে রহমত থেকে বঞ্চিত হবে। এবং গজবের উপযোগী হবে। তাই আমরা কুরআন তেলাওয়াতের সময় চুপচাপ থেকে তা মনোযোগের সঙ্গে শুনব। এবং সেই সময় অপ্রয়োজনীয়’ কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকব।

চতুর্থ নাম্বার হলোঃ রোজা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা। রমজান সহ অন্যান্য রোজা রাখার সময় স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। কারণ রোজা অবস্থায় দিনের বেলা স্ত্রী সহবাস করলে রোজা ভেঙ্গে যায়। আর তা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ। ফরজ রোজা অবস্থায় দিনের বেলায় সহবাস করার ক্ষেত্রে স্ত্রী যদি স্বামীকে সম্মতি দেয়।তাহলে স্ত্রীর ওপর কাফফারা ফরজ হবে এবং স্বামীর উপরও কাফফারা ফরজ হবে।

আর যদি স্বামী জোরপূর্বক স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তাহলে স্ত্রীর উপর কোন কিছু ফরজ হবে না শুধুমাত্র স্বামীর উপর কাফফারা ফরজ হবে। তবে রোজা রাখা অবস্থায় স্বামী যদি নিজের যৌন আকাঙ্খাকে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে স্ত্রীর সাথে আলিঙ্গন করতে কোন বাঁধা নেই। কিন্তু তা যেন কোন ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে না ফেলে। স্বামীর জন্য সহবাস ব্যবতি বা বীর্যপাত ব্যতীত রোজা রাখা অবস্থায় নিজের স্ত্রীকে উপভোগ করা জায়েজ আছে।

এর দলিল হল হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সালালাহু আলাইহি সাল্লাম রোজা রেখে স্ত্রীকে চুম্বন করতেন স্ত্রীর সাথে আলিঙ্গন করতেন এবং তিনি ছিলেন তার যৌন আকাঙ্খাকে নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সক্ষম ব্যক্তি। (বুখারি হাদিস নাম্বারঃ 1927, মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 1106)

আল্লাহ আমাদের সকলকে উল্লেখিত বিষয়গুলোর প্রতি যথাযথ খেয়াল রাখার পাশাপাশি কোরআন সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন আমিন।

আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি