Site icon Trickbd.com

রাসূল ﷺ কেন টিকটিকি মারতে বলেছেন বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে অবাক হয়েছে

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

রাসূল ﷺ কেন টিকটিকি মারতে বলেছেন

মানুষ টিকটিকির শরীর দিয়ে এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় নেশা গ্রহণ করে থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কেন টিকটিকিৃকে প্রথম আগাতে হত্যা করলে রাসূল (সাঃ) ৭০ নেকির ঘোষণা দিয়েছেন..? নবী ইব্রাহিম (আঃ) কে আগুনে পোড়াতে টিকটিকি কেন সাহায্য করেছিল
…? আর কেনইবা টিকটিকি মানুষের অসুস্থতা বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে, এই সমস্ত বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ুন।

হযরত উম্মে শরিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) টিকটিকি হত্যার আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ ইব্রাহীম (আঃ) কে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, তখন এই টিকটিকি ফুঁক দিয়ে আগুন জ্বালাতে সাহায্য করেছিলো।( মিশকাত হাদিস নাম্বারঃ ৪১১৯)

টিকটিকির এই শয়তানি তৎপরতার কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম তাকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন। অপরদিকে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সাল্লামের উপর প্রজ্বলিত আগুন নেভানোর উদ্দেশ্যে ব্যাঙ সেখানে পেশাব করেছিল, যাতে করে আগুন নিভে যায়। হাদীস শরীফে ব্যাঙকে হত্যা না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম অপরদিকে টিকটিকিকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন।( সহীহুল জামি হাদিস নাম্বার ৬৯৭১)

টিকটিকি হয়ে গেল মানব জাতির জন্য ক্ষতিকর একটি প্রাণী। যাকে হত্যা করা সওয়াবের কাজ। রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম টিকটিকি হত্যার আদেশ দেওয়ার পর হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা টিকটিকি হত্যা করেছেন মর্মে হাদিসে এসেছে। ( মিশকাত হাদিস নাম্বার ৪১২০)

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা ঘরের মধ্যে টিকটিকি মারার জন্য একটি বিশেষ বর্ষা বা লাঠি রাখতেন। এছাড়া রাসুল (সাঃ) বলেছেন →পাঁচটি প্রাণী তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। ইঁদুর, বিচ্ছু,চিল,কাক,হিংস্র কুকুর। (বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ১৭০৯, অধ্যায় ৪৯,সহিহ মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ২৭৬৩)

রাসূলে কারীম সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেছেনঃ তোমরা নামাজ রত অবস্থায় থাকলেও দুটি কালো প্রাণীকে হত্যা করো, তাহলো সাপ এবং বিচ্ছু।( সুনানে আবু দাউদ ৯৩১)

অর্থাৎ আপনি যদি নামাযে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং আপনি যদি দুটি কালো প্রাণীকে অর্থাৎ কাল সাপ এবং বিচ্ছু দেখতে পান বা পরিবারের অন্য সদস্য যদি বলে ঘরে সাপ, বিচ্ছু, এরা ঘরে রয়েছে। বা এরা আশেপাশে রয়েছে তাহলে আপনি নামাজ ভেঙ্গে হলেও এই দুটি প্রাণীকে হত্যা করুন। রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতে টিকটিকি মারবে তার জন্য ১০০ টি সাওয়াব রয়েছে। দ্বিতীয় আঘাতে মারলে তার চেয়ে কম সাওয়াব এবং তৃতীয় আঘাতে মারলে তার চাইতেও কম সাওয়াব হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস নাম্বারঃ ৩২২৯)

অর্থাৎ এখানে বোঝানো হয়েছে, আপনি যদি নামাজ রত অবস্থায় থাকেন তাহলে নামায ভেঙ্গে হলেও কাল সাপ ও বিচ্ছুকে মারতে পারবেন। কিন্তু টিকটিকির ক্ষেত্রে এমনটি নয়। হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত আর একটি হাদীসে নবী সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন প্রথম আঘাতে মারতে পারলে তার জন্য সত্তর নেকী রয়েছে। (সহিহ মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ৫২৬৪)

যাইহোক রাসূল (সাঃ) কেন টিকটিকি মারতে বলেছেন…? সে সম্পর্কে আজকের বিজ্ঞান কি বলে চলুন জেনে নেই । বর্তমান বিজ্ঞান গবেষণা করে জানতে পেরেছে যে টিকটিকি মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী এরা ঘরের কোটা দেওয়াল আলমারি চেয়ার টেবিল এবং অন্যান্য আসবাবপত্রের উপর চলাফেরা করে। এবং বিশেষ করে খাবার পাতিলে বা খাদ্য দ্রব্যের উপর মলমূত্র ত্যাগ করে।

পৃথিবীর অন্য যে কোন সরীসৃপ প্রাণী থেকে টিকটিকির পায়খানা বা মল মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিশেষ করে যদি তা মানুষের খাদ্য দ্রব্যের সাথে মিশে যায় আর টিকটিকি তো খাদ্য দ্রব্যের উপর চলাচল করতে পারে। তখন তারা খাবারের মধ্যে তাদের বিষাক্ত লাল ফেলতে পারে। এতে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। টিকটিকির প্রধান কাজ হলো মানুষের খাবার নষ্ট করা।

বিশেষ করে খাবার লবণ খোলা অবস্থায় থাকলেই টিকটিকি সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করতে পারে এবং ঘরের যে স্থানে লবণ আছে ঠিক সে বরাবর তার বিস্ঠা নিক্ষেপ করে।

টিকিটিকির লেজে মাদকতা আছে, আপনারা অনেকেই জানেন না, পৃথিবীতে অনেক বড় বড় নেশা আসক্ত ব্যক্তিরা টিকটিকির লেজকে পুড়িয়ে শুকিয়ে তা দিয়ে নেশা করে।এই নেশা এতটাই ভয়াবহ যে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এবং এই নেশা একবার উঠে গেলে তখন টিকটিকির জন্য তারা টিকটিকি হন্য হয়ে খুঁজতে থাকে।

এমনকি এই নেশার জন্য টিকটিকি বাণিজ্যিকভাবেও কিছু কুচক্রী মহল উৎপাদন করে থাকে। বলা হয়ে থাকে টিকটিকির নেশাকারী ব্যক্তির তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই মৃত্যু হয়ে থাকে। এছাড়া টিকটিকির বিষ্ঠা যদি আপনার খাবারের পড়ে তাহলে তার কারণে আপনার ডায়েরি হতে পারে বা পাতলা পায়খানা হতে পারে এবং বমি হতে পারে ভয়ানক ভাবে। এটি একদিক থেকে মানুষের জন্য নানাভাবে ক্ষতিকর এবং অন্যদিকে মরণব্যাধি নেশার উৎস।

এছাড়া আপনার বাসায় যদি অতিরিক্ত পোকামাকড়, মশা-মাছি থাকে তাহলে তাদের খাওয়ার জন্য আপনার বাসায় টিকটিকির যন্ত্রণা বেড়ে যেতে পারে। এজন্য বাসায় সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে মাকড়সা বাসা করলে তা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। সব মিলিয়ে এই প্রাণীটিকে হত্যা করার জন্য আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাহু সাল্লাম সাড়ে চোদ্দশ বছর আগে আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এখন প্রশ্ন আসে এতই যখন ক্ষতিকর এই প্রাণীটি তাহলে একে সৃষ্টি করা হয়েছে কেন….? এর সম্ভাব্য দুটি কারণ হতে পারে: প্রথমত টিকটিকি মহান রাব্বুল আলামিনের তরফ থেকে মানবজাতির জন্য একটি পরীক্ষা সরূপ হতে পারে। দ্বিতীয়তঃ লম্বা লেজ বিশিষ্ট প্রাণী টিকটিকি পোকামাকড় খেয়ে মানুষের উপকার করে থাকে

এবং টিকটিকি থেকে আরেকটি শিক্ষা পাওয়া যায়। যেমন কেউ টিকটিকির লেজ কেটে ফেললে সে কিন্তু বেঁচে থাকে এবং সে কিন্তু তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে চলে যায়। এখানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতির জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সেটা হলো আপনি যখন কোন বিপদে পড়বেন তখন সেই বিপদ নিয়ে বসে না থেকে, বিপদ নিয়ে চিন্তা না করে, সামনে কিভাবে এগোনো যায় তা আমাদের মানব জাতির জন্য শিক্ষা হিসেবে রেখেছেন।

তাই টিকটিকির লেজ কেটে ফেললে টিকটিকি সেখান থেকে তৎক্ষণাৎ চলে যায়। সে লেজের জন্য সেখানে বসে থাকেনা। তেমনি মানব জীবনে আমরা যখন কোনো বিপদে পড়বো তখন বিপদের কথা চিন্তা করে সেখানে বসে থাকলে হবেনা। আমাদেরকে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ তায়ালা এই পৃথিবীতে কোন কিছুই বিনা কারণে সৃষ্টি করেননি। মানবজাতিকে শিক্ষা দেওয়া মানবজাতিকে পরীক্ষা করা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য এবং সর্বোপরি মানবজাতির উপকারের স্বার্থেই আল্লাহ তায়ালা তার প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সৃজন করেছেন।

এবং যারা জ্ঞানী যারা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে ভাবতে পছন্দ করেন তারা এই বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এমনই বলেছেন→ যারা চিন্তাশীল ব্যক্তি তারা যেন আল্লাহর সৃষ্টিকে নিয়ে চিন্তা করেন এবং তারা যেন পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও অন্যপ্রান্তে ঘুরে বেড়ান। যাতে আল্লাহর সৃষ্টিসমূহ আল্লাহর সৃষ্টির বৈচিত্র মানুষ দেখতে পারে এবং আল্লাহর নেয়ামত সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারে।( প্রাসঙ্গিক আয়াতঃ সূরা আল ইমরান আয়াত ১৯০-১৯২,সূরা আম্বিয়া আয়াত ৩২,সূরা নাবা আয়াত ১২)

Trickbd তে অনেকেই পোস্ট কতে চান কিন্তু করতে পারছেন না। আপনারা Ictbn.Com ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে পারেন।এখানে একাউন্ট করলেই author।এখানে প্রতি পোস্টের জন্য ৫-৫০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।পোস্টের মানের উপর ভিত্তি করে। ICTBN.Com

আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি