Site icon Trickbd.com

কিয়ামতের আলামত কি কি? বর্তমান জামানার সাথে মিল পাচ্ছে কিনা মিলিয়ে দেখুন।

Unnamed

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। এমনকি আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে নির্দিষ্ট একসময়। এই সময় আল্লাহ ছাড়া কেউই জানেনা।এমনকি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি জানতেন না কেয়ামত কবে হবে।

কিন্তু আমাদের নবী এটা জানতেন যে কেয়ামতের আগে কি কি লক্ষণ দেখা যাবে এই পৃথিবীতে। আজকের এই পোস্টে আমরা কিয়ামতের আলামত নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের এই পোস্টে অযুক্তিক কোনো কথা বলা হবে না। সম্পূর্ণ হাদিস এবং কোরআন অনুযায়ী আমরা আলামত নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।

বর্তমান জামানার সাথে কিয়ামতের আলামত অনেক মিল পাওয়া যায়। যেটা সরাসরি আমরা বাস্তবে বুঝতে পারছি এমনকি বড় বড় স্কলাররা এই কথার সাথে একমত পোষণ করে। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যায় কেয়ামতের আলামত গুলো কি কি বিস্তারিত।

কেয়ামত হওয়ার আলামত কি কি?

* মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে। কিয়ামতের অন্যতম এই একটি আলামত এটা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: কিয়ামতের আলামত হচ্ছে, মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে। এমনকি পঞ্চাশ জন মহিলার দেখা-শুনার জন্য মাত্র একজন পুরুষ থাকবে।

এই হাদীছের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, কিয়ামতের পূর্বে ফিতনার সময় ব্যাপক যুদ্ধ হবে। যুদ্ধে যেহেতু কেবল পুরুষেরাই অংশগ্রহণ করে থাকে তাই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পুরুষেরা অকাতরে নিহত হবে। ফলে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া আরো নানারকম কারণে এই পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে।

এবং মহিলাদের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান জামানার সাথে অনেকটাই মিল পাই এই আলামতটি। সারা বিশ্বে এখন মহিলাদের সংখ্যা ব্যাপক পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

* ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবে। কিয়ামতের আলামত এর অন্যতম আলামত হল ভূমিকম্প পৃথিবীতে বেশি বেশি হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: বেশী বেশী ভূমিকম্প না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা

ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) বলেনঃ উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেক দেশেই বহু ভূমিকম্পের আবির্ভাব হয়েছে। বর্তমানে আমরা প্রায়ই পত্র-পত্রিকা ও প্রচার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্পের খবর শুনতে পাই। হতে পারে এগুলোই কিয়ামতের আলামত হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

এমনকি সারা বিশ্বেই ভূমিকম্প ভাইরাল অবস্থায় রয়েছে। ২০০৫ ইং সালে শ্রীলংকা, ইন্দোনেশীয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়ার কয়েকটি দেশে হয়ে যাওয়া সুনামীর ঘটনা কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার একটি সুস্পষ্ট আলামত।

এই আলামতের হাদিস পাবেন – বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।

* লোকেরা কালো রং দিয়ে চুল-দাড়ি রং করবে। সাদা চুল-দাড়ি মেহদী বা অন্য রং দিয়ে পরিবর্তন করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর সুন্নাত। তিনি সাদা চুলকে কালো রং বাদ দিয়ে অন্য রং দিয়ে পরিবর্তন করতে আদেশ দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ইয়াহুদী ও নাসারারা চুল ও দাড়িতে খেযাব লাগায় না। সুতরাং তোমরা খেযাব লাগিয়ে তাদের বিপরীত করো।কিন্তু কিয়ামতের পূর্বে লোকেরা এ আদেশ অমান্য করে কালো রং দিয়ে খেজাব (কলপ) লাগাবে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আখেরী যামানায় একদল লোকের আগমণ হবে যারা সাদা চুল-দাড়ি কালো রং দিয়ে পরিবর্তন করবে। তারা জান্নাতের গন্ধও পাবেনা।

এই হাদীসটি পাবেন বুখারী-অধ্যায়ঃ আহাদীছুল আম্বীয়া। আর একটা হাদিস পাবেন আবূ দাঊদে।

* বেপর্দা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে মহিলারা ইসলামী পোষাক পরিত্যাগ করে এমন পোষাক পরিধান করবে যাতে তাদের সতর ঢাকবেনা। তারা মাথার চুল ও সৌন্দর্য্যের স্থানগুলো প্রকাশ করে ঘর থেকে বের হবে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: কিয়ামতের আলামত হচ্ছে মহিলাদের জন্য এমন পোষাক আবিস্কার হবে যা পরিধান করার পরও মহিলাদেরকে উলঙ্গ মনে হবে। অর্থাৎ তাদের পোষাকগুলো এমন সংকীর্ণ ও আঁট-সাট হবে যে, তা পরিধান করলেও শরীরের গঠন ও সৌন্দর্যের স্থানগুলো বাহির থেকে সুস্পষ্ট বুঝা যাবে।

এখন আপনারাই বলুন এই আলামতই বর্তমান জামানার সাথে মিল আছে কিনা? বর্তমান সমাজের মহিলারা দোকানপাট বাজার ঘাট সহ সব জায়গায় দেখা যায়। এটা খুবই জঘন্য কাজ হিসেবে ধরা হয়েছে। এমনকি আপনারা হয়তো অবাক হয়ে যেতে পারেন। যে এই ধরনের মহিলারা কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না।এমনকি জান্নাতের সৌগন্ধ 500 হাজার বছরের থেকেও মানুষ বুঝতে পারে। কিন্তু এই ধরণের নারীরা কখনোই জান্নাতের কোন সুগন্ধ পাবে না।

উপরোক্ত হাদীসগুলো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যেটা আমরা অনেকগুলোই বর্তমান সমাজে পেয়ে যাচ্ছি। তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা বলতে পারি কেয়ামত বা পৃথিবী ধ্বংস বেশি দূরে নয়।আজকেরে আর্টিকেল সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

পরিশেষে বন্ধুরা, আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আর্টিকেলটি। সবাই ভালো সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন। এবং ভয়ঙ্কর আলামতগুলোর কাছ থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।