আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
যিনার গুনাহ কিভাবে মাফ হয়
আমাদের মধ্যে অনেকেই যৌবনের তারনায় কিংবা শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যেনা করে ফেলেছেন। এখন এই পাপ থেকে তারা কিভাবে ক্ষমা পাবেন….? কিংবা আদৌ কি তারা ক্ষমা পাবেন কিনা….? আর্টিকেলটি বিবাহিত-অবিবাহিত প্রত্যেকটি নারী-পুরুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবাই শেষ পর্যন্ত পড়বেন। যারা নফসের তাড়নায় যিনার মতো জঘন্য পাপাচারে লিপ্ত হয়েছেন তাদের প্রথমে পাঁচটি বিষয় মনে রাখতে হবে।
এক নাম্বারঃ আপনি আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবেন না। আল্লাহ তায়ালা এই বাণীটি কান খুলে শুনে রাখুন। আল্লাহ তা’আলা বলেন→ হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছো তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।( সূরা যুমার আয়াত ৫৩)
দুইনাম্বারঃ আপনি নিষ্কলুষভাবে আল্লাহ তায়ালা কাছে তওবা করুন। হারামের সকল পথ বন্ধ করে দিন এবং পুনরায় এই পাপে পতিত হওয়ার সকল উপায়-উপকরণ কর্তন করুন। এছাড়া বেশী বেশী নেক কাজ করুন। কারণ নেক কাজ বদকাজকে দূরীভূত করে দেয়।
তিন নাম্বারঃ আপনি যদি আল্লাহর কাছেই একনিষ্ঠ তওবা করে নেন। তখন ব্যভিচারী বিশেষণ হতে আপনি রেহাই পাবেন।
চতুর্থ নাম্বারঃ আল্লাহর নিকট দোয়া করার ক্ষেত্রে মুমিনের সবসময় উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া উচিত। আমার জন্য জাহান্নামের শাস্তি লাঘব করুন।মুমিন এই দোয়া না করে বরং আল্লাহর কাছে দোয়া করবে হে আল্লাহ আমাকে জাহান্নামের শাস্তি হতে নাজাত দিন। হে আল্লাহ আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। এর সাথে সাথেই মুমিন ব্যক্তি নেক আমল করে যাবে এবং বদ আমল হতে তওবা করে নিবে।
পঞ্চম নাম্বারঃ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল ও পরিভাষা হলো তাওবা। তাওবা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে তাঁর শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি ও প্রতিনিধি মানুষের জন্য বড় নিয়ামত, করুণা ও দয়া। এর মাধ্যমে মানুষ পাপ ও পঙ্কিলতা মোচন করে। মুসলিম সমাজের তওবা ব্যাপক পরিচিত বিষয় হলেও তওবা কেন অপরিহার্য এর গুরুত্ব কি এবং কিভাবে তওবা করতে হয় সে সম্পর্কে অনেকের স্পষ্ট ও সঠিক ধারণা নেই। তওবা শব্দের আক্ষরিক অর্থ ফিরে আসা এবং প্রত্যাবর্তন করা। পারিভাষিক অর্থে তওবা হলো শরীয়ত বহির্ভূত নিষিদ্ধ কাজ ত্যাগ করে ইসলামের নির্দেশিত কাজ করার মাধ্যমে আল্লাহর পথেই ফিরে আসা এবং আল্লাহর বিধানের উপর অটল অবিচল থাকা।
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম এবং অমুসলিম কে তাওবা করার আদেশ দিয়ে বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার ( সূরা আননূর আয়াত ৩১)
আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন →হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা করো, খাটি তওবা। (সূরা আত তাহরিম আয়াত ৮)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেন→ ইয়া আইয়্যুহান নাস তুবু ইলাল্লাহি অর্থাৎ হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা করো এর অর্থ হলো আল্লাহর নিকট ফিরে আসো প্রত্যাবর্তন করো। (সহিঃ মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ৭০৩৪)
বিশেষজ্ঞ আলেমগণ সর্বসম্মতিক্রমে বলেন →সর্বদা তওবা করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। ইমাম কুরতুবী (রহঃ) এবং ইমাম নববি রহমতুল্লাহি এই ঐক্যমতের কথা তাদের কিতাবে উল্লেখ করেন। তওবা জান্নাত প্রাপ্তি ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও ভালোবাসা লাভের একটি বড় সুযোগ এবং উপায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন → নিশ্চয়ই আল্লাহ বেশি বেশি তওবাকারিকে ভালোবাসেন। (সূরা বাকারা আয়াত ২২২)
সুতরাং আল্লাহর ভালোবাসার পাথেয় হলো তাওবা আর এই তওবা হতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। আমরা জানি যে প্রত্যেক কর্মের ফলাফল নির্ভর করে তার নিয়তের উপর। সুতরাং তওবা আল্লাহর জন্য হলেই আমরা তার কাঙ্খিত ফজিলত লাভ করতে পারব। এখন প্রশ্ন হলো তাওবা কিভাবে করতে হয়…? মহান আল্লাহর হক ও অধিকার সম্পর্কিত হলে তিনটি শর্ত বাস্তবায়ন করলেই হয়ে যাবে।
এক নাম্বারঃ পাপাচার পুরোপুরিভাবে ছেড়ে দিতে হবে।
দুইনাম্বারঃ পাপের জন্য অনুশোচনা করতে হবে, লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতে হবে।
তিন নাম্বারঃ ঐ পাপ দ্বিতীয়বার না করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং দৃঢ় সংকল্প করতে হবে এবং যেনা-ব্যভিচার ইত্যাদি আর করবেন না বলে এর উপর অটল অবিচল থাকতে হবে। আর মানুষের হক বা অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলে আরো একটি শর্ত যুক্ত করতে হবে আর তা হলো যে ব্যক্তির হক নষ্ট করা হয়েছে সে ব্যক্তির কাছ থেকে মাফ চাইতে হবে অথবা তার পাওনা প্রাপ্তি এবং তার হক ফিরিয়ে দিতে হবে। এই শর্তগুলো পূরণ করলেই তওবা শুদ্ধ হবে। অন্যথায় তাওবা বিশুদ্ধ হবেনা।
তওবা করার নিয়ম বা পদ্ধতি
তওবা করার সুন্দর একটি পদ্ধতি হলোঃ তাওবা করার জন্য প্রথমে সুন্দর করে উত্তমরূপে অজু করে নিতে হবে। এরপর দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে আল্লাহতালার কাছে মাগফিরাত ও ক্ষমা চাইতে হবে এবং বিগত জীবনের সমস্ত পাপ সমূহ এবং আদেশ অমান্য করার অপরাধ থেকে মার্জনা চাইতে হবে।
তবে গভীর রাতে উঠে দুই রাকাআত তওব নামায পড়া সবচেয়ে উত্তম। কিভাবে তওবা নামাজ পড়বেন এই সম্পর্কিত একটি আর্টিকেল আমি অনেক আগে পোস্ট করেছি সেটি আমার প্রোফাইলে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। তওবা করার সময়সীমা হলো মৃত্যুর নিদর্শন প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত। এ সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেন→ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বান্দার তাওবা কবুল করেন যতক্ষণ না সে (মৃত্যুযন্ত্রণায়) গরগর করে। (তিরমিজি হাদিস নাম্বারঃ ৩৫৩৭)
তবে খেয়াল রাখা জরুরী তওবা মানে এই নয় যে আমরা সেই শেষ সময়ের প্রতীক্ষা করবো আর মৃত্যুর সময় কাছাকাছি এলেই তওবা করে নিব। এই ধারণা থেকে আমাদেরকে ফিরে আসতে হবে। প্রকৃত বিষয় হলো আমরা কেউই জানিনা ঠিক কখন কবে আমাদের মৃত্যুর সময় এসে পড়বে। তাই পাপে মগ্ন থাকার কোন সুযোগ নেই। আমরা যদি হাদিসের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই। রাসূল সাল্লাহু সালাম বলেন→ হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা করো। কেননা আমি প্রত্যেকদিন আল্লাহ নিকট শতবার তাঁর নিকট তওবা করি।( মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ৭০৩৪)
সুতরাং মুহাম্মদ সাল্লাহু সালাম এর সুন্নত অনুযায়ী আমাদের প্রতিনিয়ত ও সার্বক্ষণিক তওবার ওপর থাকতে হবে। তাই আসুন আমরা উপযুক্ত তাওবার শর্ত গুলো পূরণ করার মাধ্যমে সুন্নাত সম্মত তওবা করে আল্লাহর ভালবাসা হাসিল করি। আর সুযোগ পেলেই মন দিয়ে এই ইস্তেগফারটি পড়বো এবং পড়ার সময় মন দিয়ে এর অর্থের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
তো সেই ইস্তেগফারটি হলোঃ আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতু-বু ইলাইহি অর্থাৎ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি এবং তার নিকট তওবা করছি। অথবা প্রত্যেকদিন 70 থেকে একশতবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়বেন এবং প্রত্যেক ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর শেষ করে(তিনবার) আস্তাগফিরুল্লাহ পড়বেন। কারণ এটিও আমাদের রাসুলের সুন্নত।( সহিহ বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ৬৩০৭, মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ৭০৩৪, আবু দাউদ হাদিস নাম্বারঃ ১৫১৫)
ভালো লাগলে আমার সাইটের পোস্ট গুলি দেখে আসতে পারেন এখানে আমি প্রতিদিন নতুন নতুন আপডেট দিয়ে থাকি আজকের আপডেট
Tricklife.xyz
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুকে আমি