আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

কোনদিন ফজরের নামাজ ক্বাযা হবেনা

প্রিয় পাঠক বর্তমান সময়ে আমাদের অনেকের একটি কমন সমস্যা হচ্ছে আমাদের ফজরের নামাজ ক্বাযা হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আমাদের কি করা উচিত….? প্রিয় পাঠক প্রথমে বলতে চাই এই নামাজ ছাড়া কখনো জান্নাতে প্রবেশ করা যাবেনা। একটা কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে সর্বপ্রথম আমাদের এই নামাজের হিসাব হবে। আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম বলেন→ কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। নামাজের হিসাব দেওয়া ছাড়া এক কদমও কেউ পা আগাতে পারবে না।

অথচ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বছরের পর বছর নামাজ পড়ে না। কিন্তু তারা আবার জান্নাতের আশা করে থাকেন। অথচ নামাজ ছাড়া কোন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রথমে নামাজের হিসেবে হবে। তারপর সমস্থা হিসেব-নিকেশ। রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে নামাজ আদায় করবে সে কখনো জাহান্নামে যাবে না। (সহিহ মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ১৩২২)

অর্থাৎ তার মানে হচ্ছে যে ব্যক্তি ফজর এবং আসরের নামাজ পড়বে তার জন্য বাকি ওয়াক্ত নামাজ পড়াও সহজ হয়ে যায়, তাই সে কখনো জাহান্নামে যাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জামাতের সাথে এশার নামাজ আদায় করবে সে অর্ধেক রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সময় সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে। (মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ১৩৭৭)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেছেনঃ মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক কঠিন কোন নামাজ নেই। এই দুই নামাজের ফজিলত যদি তারা জানত তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা নামাজ আদায় করত। (বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ৬৫৭)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেছেনঃ ফজরের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও তার সবকিছুর চেয়ে উত্তম। (মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ১৫৭৩)

অর্থাৎ ফরজ এবং এশার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করতে পারলেই সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করা যাবে। এখন প্রশ্ন হলোঃ ফজরের নামাজ কেন ক্বাযা হয়…? ফজরের নামাজ ক্বাযা হয় শুধুমাত্র আমাদের দোষে। কারণ রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেন →এশার নামাজের পর তোমরা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাও এবং আমাদের নবী সাল্লাহু সাল্লাম তিনি নিজেও এশার নামাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তেন তারপর শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন। ( বুখারি ৫৯৯)

আমরা যদি প্রত্যেকদিন এশার নামাজের পর তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি সে ক্ষেত্রে অনায়াসে আমরা ফজরের আগেই উঠে যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ। কারণ এর মাঝখানের সময় এটি আমাদের ঘুমের জন্য যথেষ্ট সময়। এখন বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ তাই মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রাত একটা দুইটা এমনকি তিনটা পর্যন্ত রাত জেগে থাকে। অথচ রাত তিনটা ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদ পঠার উত্তম সময় অথচ সেই সময়ই আমরা কেবল ঘুমোতে যাই।

তাহলে সে ব্যক্তির জন্য ফজরের নামাজ পড়া কিভাবে সম্ভব…? আর সে কি করেই বা জামাতের সাথে নামায আদায় করবে…? আপনি রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম এর এই সুন্নত পালন করেন অর্থাৎ প্রত্যেকদিন এশার নামাজের পর তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েন। দেখবেন আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছে আপনি অবশ্যই ফজরের সময় উঠতে পারবেন এবং জামাতের সাথে সালাত আদায় করতে পারবেন। আপনার ফজরের নামাজ ক্বাযা না করার জন্য এই একটি সুন্নতি যথেষ্ট।

এ ছাড়া আরেকটি কাজ আপনাকে খুব সহজেই ফজরের সময় সজাগ করে দিবে সেটি হলো ঘুমানোর পূর্বে উত্তমরূপে অজু করে নেবেন, তারপর সূরা ফাতিহা, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস এবং আয়তুল কুরসি পড়ে বুকে তিনবার ফুক দিয়ে তারপর ঘুমিয়ে পড়বেন। যদি রাতে কোন কারণে ঘুম ভেঙে যায় বা টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে ওযু করে এসে আবার উক্ত সূরা ও আয়াত পড়ে বুকে ফু দিয়ে তারপরে ঘুমাবেন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ ইচ্ছার আপনার ফজরের নামাজ মিস হবে না এবং শয়তান আপনাকে ধোঁকায় ফেলতে পারবে না।

আপনি খুব সহজেই ঘুম থেকে উঠতে পারবেন। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা! শুধু যে আল্লাহ তায়ালা খুশি হয় তা কিন্তু নয়, এটি দুনিয়াবী সম্পদ ও জ্ঞান অর্জনের পূর্বশর্ত। এককথায় বলা যায় সফলতার চাবিকাঠি। কেননা ফজরের সময় উঠলেই তথা ভোররাতে বা দিনের শুরুতে সবচেয়ে বেশি কল্যান থাকে। শুধুমাত্র ইবাদত-বন্দেগী নয় দুনিয়াবী কাজের জন্য এটি সবচেয়ে উপযুক্ত ও বরকতময় সময়। এই জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাম কোন যুদ্ধে অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতেই পাঠাতেন।

তাছাড়া এই সময়ে বান্ধার রিজিক বণ্টন হয়। যারা তখন ঘুমিয়ে থাকে তারা সফলতা ও রিজিক বণ্টন থেকে বঞ্চিত হয়। প্রিয় নবী সাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেন →সকালবেলা রিজিকের অন্বেষণ করো! কেননা সকালবেলা বরকতময় ও সফলতা অর্জনের জন্য উপযুক্ত সময়।( মাজমাউজ জাওয়ায়েদ হাদিস নাম্বারঃ ৬২২০)

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুকে আমি

One thought on "যে কাজটি করলে আর কোনদিন ফজরের নামাজ ক্বাযা হবেনা ইনশাআল্লাহ।"

Leave a Reply