অনেকেই হয়তো পোস্টের টপিক দেখেই বুঝে ফেলেছেন যে আজ আমি কোন বিষয় নিয়ে লিখতে যাচ্ছি । আজ আমি আপনাদের সাথে মহানবি হযরত মোহাম্মদ (স) এর বিদায় হজের ভাষণ নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি । আশা করি সকলে আমার আজকের পোস্ট পড়বেন । ভালো লাগলে লাইক এবং কমেন্ট করবেন ।
মহানবি (স) এর মক্কা বিজয়ের পর মক্কার সকলে ইসলাম গ্রহণ করতে লাগল । এক পযায়ে বিশ্বজুড়ে ইসলাম পৌছে যেতে থাকল । তিনি বুঝতে পারলেন যে তিনি আর বেশি দিন পৃথিবীতে থাকবেন না । তাই ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে বা দশম হিজরিতে হজ করার ইচ্ছা করলেন । এই হজ বিদায় হজ নামেই পরিচিত ।
যুলহুলাইফা নামক স্থানে এসে সকলে ইহরাম বেঁধে বাইতুল্লাহর দিকে রওনা দিল । জিলহজ মাসের ৯ তারিখে আরফাত ময়দানে উপস্থিত জনসমুদ্রে উদ্দেশ্যে এক যুগান্তকরি ভাষণ দেন হযরত মোহাম্মদ (স) । এই ভাষণে তিনি কিছু দিক নিদেশনা দেন । আরাফাতের ময়দানের পাশে জাবালে রহমত নামক পাহাড়ে উঠে তিনি সবপ্রথম মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করলেন । তিনি এই ভাষণে আরও বলেন –
১। হে মানব সকল । আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনবে । কারণ আগামী বছর আমি এখানে সমবেত হতে পারব কিনা জানি না ।
২। আজকের এ দিন,স্থান ও মাস যেমন পবিত্র তেমনই তোমাদের জীবন ও সম্পদ পরস্পরের নিকট পবিত্র ।
৩। মনে রাখবে অবশ্যয় একদিন সকলকে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে হবে ও নিজ কাজের হিসাব দিতে হবে ।
৪। তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদয় ব্যাবহার করবে । তাদের উপর তোমাদের যেমন অধিকার আছে তেমনই তোমাদের উপর তাদের অধিকার রয়েছে ।
৫। সবদা আমানত রক্ষা করবে এবং পাপ কাজ করবে না ও সুদ খাবে না ।
৬। আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করবে না । আর অন্যায়ভাবে একে অন্যকে হত্যা করবে না ।
৭। ধম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না । পূবের অনেক জাতি এ কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে । নিজ যোগ্যতা বলে ক্রিতদাস যদি নেতা হয় তবে তার অবাধ্য হবে না । বরং আনুগত্য করবে ।
৮। আজ থেকে বংশগত শ্রেষ্ঠত্ব বিলুপ্ত হলো । শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি সৎকম । সে ব্যাক্তিই সবচেয়ে সেরা যে নিজের সৎকম দ্বারা শ্রেষ্ঠত্ব অজন করে ।
৯। আমিই শেষ নবি । আমার পরে আর কোন নবি আসবে না ।
১০। আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর কোরআন ও নবির আদশ রেখে দিলাম । এগুলো আকড়ে ধরলে তোমরা পথভ্রষ্ঠ হবে না ।
১১। তোমরা যারা উপস্থিত আছো তারা সবাই অনুপস্থিতদের কাছে আমার বাণী পৌঁছে দিবে ।
এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূণ বক্তব্য দিয়েছিলেন । সব সময় ক্রিতদাসদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার নিদেশ দিয়েছেন ।