আসসালামু আলাইকুম।। আশা করি ভালো আছেন। আজকে আমি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রিসালাত ও নবি-রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করব। চলুন শুরু করা যাক।
রিসালাতের পরিচয়
রিসালাত শব্দের আভিধানিক অর্থ বার্তা, চিঠি পৌঁছানো, পয়গাম, সংবাদ বা কোনো ভালো কাজের দায়িত্ব বহন করা। ইসলামি পরিভাষায়, মহান আল্লাহর পবিত্র বাণী মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বকে রিসালাত বলা হয়। আর যিনি এ দায়িত্ব পালন করেন তাঁকে বলা হয় রাসুল। এর বহুবচন হলো- রুসুল।
রিসালাতে বিশ্বাসের গুরুত্ব
ইসলামি জীবনদর্শনে রিসালাতে বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য। তাওহিদে বিশ্বাসের সাথে সাথে প্রত্যেক মুমিন ও মুসলিমকেই রিসালাতে বিশ্বাস করতে হয়। ইসলামের মূল বাণী কালিমা তায়্যিবাতে এ বিষয়টি সুন্দরভাবে বিবৃত হয়েছে। এ কালিমার প্রথমাংশে- লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। এর দ্বারা তাওহিদের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর দ্বিতীয়াংশে-মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ্। অর্থ: হযরত মুহাম্মদ (স.) আল্লাহর রাসুল। যার দ্বারা রিসালাতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তাওহিদে বিশ্বাস স্থাপনের ন্যায় রিসালাতেও বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।
বস্তুত রিসালাতে বিশ্বাস না করলে কেউ মুমিন হতে পারে না। কেননা মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ। এ স্বল্প জ্ঞান দিয়ে অনন্ত, অসীম আল্লাহ তায়ালার পূর্ণ পরিচয় লাভ করা সম্ভব নয়। তাই নবি-রাসুলগণ মানুষের নিকট আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরেছেন। তাঁর পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা ও গুণাবলির বর্ণনা প্রদান করেছেন।
তারা ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত জীবনবিধান ও দিকনির্দেশনা নিয়ে এসেছেন। হযরত মুহাম্মদ (স.) না আসলে নবি ও রাসুল সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতে পারতাম না। এমনকি আল্লাহ তায়ালার সত্তা ও সিফাতের পরিচয়ও লাভ করতে পারতাম না। মূলত নবি-রাসুলগণের আনীত বাণী ও বর্ণনার ফলেই মানুষের পক্ষে তা সম্ভব হয়েছে।
সুতরাং নবি-রাসুলগণের এ সমস্ত সংবাদ বা রিসালাতকে বিশ্বাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, রিসালাতকে বিশ্বাস করা ইমানের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে নির্ধারিত।
নবি-রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য
আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য অগণিত নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন। তাঁদের উদ্দেশ্যহীনভাবে দুনিয়ায় প্রেরণ করা হয়নি বরং তাঁরা নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছেন। নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁদের বেশ কিছু কাজ করতে হতো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কতিপয় কাজ হলো-
- তাঁরা মানুষের নিকট আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরতেন। মানে আল্লাহর জাত-সিফাত, ক্ষমতা, নিয়ামত ইত্যাদি বিষয়ের কথা মানুষের নিকট প্রকাশ করতেন।
- সত্য ও সুন্দর জীবনের দিকে আহবান জানাতেন।
- আল্লাহ তায়ালার ইবাদত ও অন্যান্য ধর্মীয় বিধি বিধান শিক্ষা দিতেন।
- পরকাল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করতেন।
- পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার আদেশ-নিষেধ ও বিধি-বিধান বাস্তবায়নের জন্য হাতে কলমে শিক্ষা দিতেন।
বিশেষ অনুরোধ: