রাসুল (সঃ)-এর স্ত্রীদের সর্বোত্তম ও সুন্দর আচরণ (পর্ব ২)
রাসুল (সঃ) এর স্ত্রীদের সাথে সুন্দর আচরণসমূহ নিয়ে লেখা আজকের আর্টিকেলটি ২য় পর্ব । প্রথম পর্বটি নিচের দেওয়া লিংক থেকে দেখে নিতে পারেন ।
তো চলুন আজকের পর্বেও এরকম কয়েকটি সুন্দর আচরণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ।
ক্রমিক নং ৭ :: (স্ত্রীর আরামের প্রতি রাসুল (সঃ) এর সতর্কতা)
নবি করীম (সঃ) আমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতের সকল বিষয়ের প্রতি শিক্ষা দান করেছেন । রাসুল (স) সর্বদাই স্ত্রীদের আরামের প্রতি সতর্ক থাকতেন । কখনোই তাঁদের আরাম-আয়েশের ব্যাঘাত ঘটতে দিতেন না । হযরত আয়িশা (রাঃ) এর একটি ঘটনার মাধ্যমে এই বিষয়টি আমি আজকে বিশ্লেষায়িত করব । তো চলুন ঘটনাটি জেনে নেওয়া যাক ।
একটি ঘটনা ::
একদিন রাত্রে রাসুল (সঃ) কবরস্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে শায়িত অবস্থা থেকে আস্তে আস্তে উঠলেন । জুতা পরিধান করলেন নীরবে এবং দরজাও খুললেন নীরবে । আয়িশা (রাঃ) এ ব্যাপারে রাসুল (সঃ) কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন, এরূপ করার কারণ হলো তোমার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারত ।
**এই ঘটনাটি থেকে জানা যায় রাসুল (সঃ) তাঁর স্ত্রীদের আরামের প্রতি তথা ঘুমের প্রতি কতটা সচেতন ছিলেন ।
অপর একটি হাদিসে রয়েছে যা আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাত্রে মহানবি (সঃ) আমার ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন । তিনি আস্তে আস্তে ঘুম থেকে উঠলেন এবং আস্তে আস্তে দরজা খুললেন । দরজা বন্ধ করলেনও অনুরুপভাবে ।”
হযরত আয়িশা সিদ্দিকা (রাঃ) মনে মনে ভাবতে থাকলে যে রাসুল (স) হয়তো তাঁর অন্য স্ত্রীদের ঘরে যাচ্ছেন । তাঁর এরকম মনে হওয়ার অন্যতম কারণ হলো তিনি রাসুল (সঃ) কে মনে প্রাণে ভালোবাসতেন ।
এই ঘটনাটি থেকে আমরা বুঝতে পারি যে শুধুমাত্র প্রকৃত প্রেমিক ও প্রেমিকার মধ্যে সন্দেহের ধারণা সৃষ্টি হতে পারে । তাই জীবন সঙ্গী এরূপ ধারণা করলে আমাদের রেগে যাওয়া উচিত নয় ।
আরও একটি ঘটনা এভাবে বর্ণিত আছে যে, হযরত আয়েশা (রাঃ) একদিন রুটি বানাতে বানাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন । রাসুল (সঃ) সালাম দিলেও তার জবাব মেলেনি । রাসুল (সঃ) ভিতরে এসে দেখলেন আয়েশা (রাঃ) ঘুমাচ্ছেন । মহানবি (সঃ) তাঁকে না ডেকে নিজ হাতে রুটি বানানো শেষ হলে তারপর ডেকে তুললেন এবং রুটি খেতে বললেন।
মহানবি (সঃ) তাঁর ঘুমের ব্যাঘাতের দিকটি চিন্তা করে তাঁকে ডেকে তুলেননি ।
ক্রমিক নং ৮ :: স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে গোসল করা
যে ব্যক্তি দাম্পত্য জীবনে সুখি হতে চায় সে যেন হযরত আয়িশা (রাঃ)-এর হাদিসটি একবার হলেও ভেবে দেখে; এই হাদিসটির মাধ্যমেই মহানবি (সঃ) বৈবাহিক জীবনের সর্বোত্তম চরিত্র ফুটে উঠেছে । হযরত আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি এবং রাসুল (সঃ) একই পাত্র হতে পানি নিয়ে একই সঙ্গে পবিত্রতার গোসল করতাম । (বুখারি)
##এছাড়া মহানবি (সঃ) তাঁর স্ত্রীদের সন্তুষ্টির জন্য সকল ধরনের কথা বলেছেন । এমনকি স্ত্রীকে খুশি করার জন্য মিথ্যা কথা বলাকেও জায়েজ বলা হয়েছে । মহানবি (সঃ) বলেছেন, “দুনিয়ার সবকিছু সম্পদে পরিপূর্ণ । আর এর মধ্যে সবথেকে শ্রেষ্ঠ সম্পদ পূণ্যবতী নারী ।”
পরবর্তী পর্বে আরও অনেকগুলো ঘটনাকে কেন্দ্র করে লিখব ইন শা আল্লাহ । আজ এখান থেকেই বিদায় নিচ্ছি । ধন্যবাদ ।