মাত্র কয়েকদিন আগের
ঘটনা। আমাদের পাড়ার
রাকিবের মা পানিতে
ডুবে মরা কিশোর
সন্তানটিকে বুকে জড়িয়ে
পাগলপারা হয়ে কাঁদছেন।
মায়ের বাঁধভাঙ্গা
কান্না আর বিলাপ শুনে
উপস্থিত কারো পক্ষেই
চোখের পানি সংবরণ করা
সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি
কাঁদছেন আর বিলাপ করে
বলছেন, ‘ও বাবুর আব্বু তুমি
আমাকে মেরে ফেল।
আমিই তোমার সন্তানকে
হত্যা করেছি। গতকালই ওর
জ্বালা সহ্য করতে না
পেরে আমি বলেছি, ‘তুই
মরিস না; মরলে দশটা
ফকিরকে খাওয়াতাম।’
হ্যা, সত্যিই তিনি
আগেরদিন ছেলেটির
দুরন্তপনায় অস্থির হয়ে এমন
বলেছিলেন। তখন একজন
পাগলেরও ভাবার অবকাশ
ছিল না যে গর্ভধারিণী
মা সত্যিই তার সন্তানের
অমঙ্গল কামনা করছেন।
কামনা করা দুর্ঘটনাও
কখনো সত্য হয়ে দেখা
দিতে পারে। রাকিবের
মা গতকাল রাগের মাথায়
যে কথা উচ্চারণ
করেছিলেন কে জানত
আজই তা বাস্তব হয়ে
দেখা দেবে।
ঘটনা হলো, সেদিন দুপুরে
ছেলেটি তার মায়ের
সঙ্গে শুয়ে ছিল। তিনটার
দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে
একরকম জিদ করেই সে
মায়ের কাছ থেকে ছুটে
গিয়েছিল বৃষ্টিতে
ভিজতে। বাড়ির বাইরে
এসে সে আশপাশের
সমবয়সী আরও কয়েকটি
কিশোরকে পেয়ে যায়।
সবাই মিলে কোন বুদ্ধিতে
যেন দল বেঁধে যায় পাশের
মহল্লার একটি নতুন পুকুরে
গোসল করতে। সেখানে
গিয়ে সবার আগে সে-ই
লাফ দেই পুকুরে। অবুঝ
কিশোর ঠিক বুঝতে
পারেনি লাফ দিলে
পুকুরের প্রায় গভীরে
গিয়ে পৌঁছবে সে।
যেখানে সাঁতার না
জানা একটি কিশোরের
জন্য অপেক্ষা করছে
হবার তাই হল। বাচ্চাগুলোর
চোখের সামনেই সে
পানিতে ডুবল। ওরা ভাবল
সে বুঝি তাদের সঙ্গে
লুকোচুরি খেলছে। কিছুক্ষণ
পর তারা ওকে না পেয়ে
ভয়ে আশপাশের লোকদের
ডেকে আনল। ততক্ষণে অবশ্য
তার ক্ষুদেকায় দেহ থেকে
প্রাণপাখি উড়াল
দিয়েছে।
আর মেয়েদের
সবিশেষভাবে বলতে চাই,
মা, আপনি অনেক সয়েছেন,
অনেক সবর করেছেন,
আরেকটু সবর করুন। রাগের
মাথায় সন্তানকে
অভিশাপ দেয়া থেকে
সংযত থাকুন। আল্লাহ
আপনার সহায় হোন। আমীন।
সৌজন্যে: অামার সাইড LoveMela.Com