পিএনএস, ইসলাম : ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা
হযরত ওমর (রা.) ইসলামের প্রাথমিক যুগেই
ইসলামের পতাকাতলে এসেছিলেন।
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) আল্লাহর নির্দেষে
যখন ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন, ঠিক তখনই
ওমর (রা.) কালিমা পড়ে ইসলাম গ্রহন করেন।
সে সময় যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন
তাদের উপর নেমে এসেছিল মক্কার
প্রভাবশালীদের নির্যাতন। অত্যাচার
নির্যাতন সহ্য করার মত ছিল ন। তবুও কালিমার
পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছিলেন অসহায়
সাহাবিরা। এক পর্যায়ে নবী মুহাম্মদ সা.
দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ, ওমর ইবনে
খাত্তাব এবং আবু জাহেলের মধ্যে তোমার
কাছে যে বেশি পছন্দনীয়, তাকে ইসলাম
গ্রহণের সুযোগ দাও এবং তার দ্বারা
ইসলামের শক্তি বৃদ্ধি করো।’ প্রিয় হাবিবের
দোয়া। কবুল না করে পারেলেন না মাহবুব।
কার্যকর হতে দেরি হল না।
নবীকে (সা.) হত্যার উদ্দেশে তলোয়ার
নিয়ে রওনা দিলেন ওমর। পথে সাহাবি নঈম
বিন আবদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত। নঈম ওমরের
উদ্দেশ্য আঁচ করতে পেরে বললেন, ‘আগে
নিজের বোন, ভগ্নিপতির খোঁজ নাও,
তারপর যেখানে যেতে চাও যেও।’ ওমর ছুটে
চললেন বোনের বাড়ি অভিমুখে। যেয়ে
দেখেন বোন ফাতেমা কোরআন পড়ছেন।
পায়ের শব্দ কানে আসা মাত্রই চুপ হয়ে
গেলেন বোন ফাতেমা। লুকিয়ে ফেললেন
কোরআনের পাতা। হযরত ওমর ঘরে ঢুকেই
নিরুত্তর। ওমর বললেন, আমি জেনে ফেলেছি,
তোমরা উভয়ই ধর্মত্যাগী হয়েছ। এই বলে ওমর
ঝাপিয়ে পড়লেন ভগ্নিপতির ওপর। বোন
স্বামীকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে
তাকেও পেটালেন। বোনের দেহ রক্তাক্ত।
রক্তাক্ত ভগ্নিপতি। অশ্র“ভরা চোখে
ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে দৃপ্ত কন্ঠে
ফাতেমা বললেন,
‘ওমর! যা ইচ্ছে করতে পার। কিন্তু আমাদের
পক্ষে ইসলাম ত্যাগ করা সম্ভব নয়।’
ক্ষতবিক্ষত দেহ, রক্তাক্ত পোশাক পরিচ্ছদ,
চোখ ভরা অশ্র“ ও আবেগভরা মন নিয়ে
সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক নারী। শুধু নারী
নয়-সহোদরা বোন। আর তার মুখে এমন
তেজোদীপ্ত কথা। কিছুক্ষণের জন্য ভাবলেন
ওমর। হার মানলো ওমরের আগ্রাসী শক্তি।
তার ইস্পাত কঠিন হৃদয় মোমের মত গলে গেল।
তিনি বললেন, আচ্ছা! তোমরা যা পাঠ
করছিলে আমাকে একটু পড়তে দাও তো। তাঁর
বোন বললেন, তুমি নাপাক। এই কিতাব শুধু
পাক পবিত্র লোকই স্পর্শ করতে পারে। যাও!
গোসল করে এসো। গোসল করে এলেন ওমর।
পড়লেন কোরআন। গাল বেয়ে ঝড়ে পড়ল
অশ্রুকণা। সে অশ্রু বেদনার নয়, ঈমানের।
সেই তলোয়ার হাতেই ওমর ছুটে চললেন নবীর
দরবারে। নবী সা.-র দরবারের ওমরের খটখট
আওয়াজ। একজন সাহাবী দরজায় উঁকি দিয়ে
দেখলেন যে, তলোয়ার হাতে ওমর। আশে-
পাশেই সবাই একত্রিত হলেন। ভয়ে কাঁপছে
সাহাবিরা। না জানি আজ কি হয়? হযরত
হামযা (রা) জিজ্ঞাসা করলেন কি
ব্যাপার? তাঁকে বলা হল যে, ওমর এসেছেন।
তিনি বললেন, ওমর এসেছে? দরজা খুলে দাও।
যদি ভালোর জন্যে এসে থাকে, তবে ভলোই
থাকে, তবে তার তলোয়ার দিয়েই আমরা
তাকে শেষ করে দেবো।
এদিকে রসুলুল্লাহ সা. ভেতরে ছিলেন,
নবীর ওপর ওহি নাযিল হচ্ছিলো। ওহি
নাযিল হওয়ার পর হযরত ওমরের কাছে এলেন
নবী সা. এবং তার পরিধানের পোশাক
এবং তলোয়ারের একাংশ ধরে ঝাঁকুনি
দিয়ে বললেন, ওমর! তুমি কি ততক্ষণ পর্যন্ত
বিরত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তোমার
ওপরও ওলীদ ইবনে মুগিরার মতো অবমাননাকর
শাস্তি নাযিল না করবেন? হে আল্লাহ, ওমর
ইবেন খাত্তাবের দ্বারা দ্বীনের শক্তি ও
সম্মান দান করো। একথা বলার সাথে সাথে
হযরত ওমর রা. ইসলাম গ্রহণ করে নিলেন। ‘আমি
সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া
কোন মাবুদ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল।
হযরত ওমরের কালেমা পাঠ শোনামাত্র
ভেতরে অবস্থিত সাহাবিদের ‘আল্লাহু
আকবার’ ধ্বনির আওয়াজ কাবাঘরে অবস্থিত
লোকজনও আওয়ায শুনতে পেলেন।
পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম
[you] ভাই আর যদি ভালো লাগে ছোট ভাইয়ের সাইটে ঘুরে আসতে পারেন।
আমার সাইট