★ রাসূল সাঃ কি গায়েব জানেন?? বা পীর বা ওলি বা অন্য কেউ?
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
আমাদের প্রিয় রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন কি-না? এটাই না জেনে অনেকে পীর ওলি দের গায়েব জানার দাবি করেন।
এ নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে দুটি দল রয়েছে যারা এ বিষয়টিকে একটি
বিতর্কিত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। একটি দলের দাবী রাসূল
(সাঃ) গায়েব জানেন এবং অন্য দলের দাবী
রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন না। আসল বিষয় হলো রাসূল
(সাঃ) গায়েব জানুক আর নাই জানুক তাঁর প্রতি আমাদের
সম্মান, ভালবাসা আর শ্রদ্ধা সামান্যটুকুও কমবে না।
যেহেতু এ বিষয়টি আক্বিদাগত এবং ভুল ধারনা থাকলে
শিরকের সম্ভাবনা অবশ্যম্ভাবী। তাই এ বিষয়ে আলোচনার
ও সঠিক জানার প্রয়োজন আছে বৈকি। আর “ইলমে গায়েব”
রাসূল সাঃ জানেন কি-না? বা তিনি আলিমুল গায়েব কি-না?
বা আলিমুল গায়েব কে? এতদবিষয়ে বিস্তর বিতর্ক এই
পৃথিবীতে বিদ্যমান। তাই যখন কোন বিষয়ে বিতর্ক হবে
তখন কোরআন ও সুন্নার দিকে ফিরে যাওয়াটাই ঈমানদার
ব্যক্তিদের কাজ। কেননা আল্লাহ বলেন-
“নিশ্চয় কোরআন সত্য- মিথ্যার ফয়সালা” ( At-Taariq:
13 )।
তাই বিষয়টি নিয়ে কোরআনে কী নির্দেশনা রয়েছে তা
আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্ঠা করছি। ‘ফা লিল্লাহিল
হামদ’। আমরা একটু দেখার ও বুঝার চেষ্টা করি।
★গায়েব সম্পর্কে পবিত্র ক্বোরআন যা বলেঃ
→(1) আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে
আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে,
আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন
ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত
আল্লাহ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের
কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে
আমি অন্যায় কারী হব। ( Hud: 31)
→ ( 2 ) বস্তুতঃ তারা বলে, তাঁর কাছে তাঁর পরওয়ার
দেগারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ এল না কেন? বলে দাও
গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন । আমি ও তোমাদের সাথে
অপেক্ষায় রইলাম । ( Yunus: 20)
َ
→ ( 3 ) আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের
এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান।
আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে
বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন
অমঙ্গল কখনও হতে পারত না।
আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা
ঈমানদারদের জন্য। ( Al-A’raaf: 188)
→ ( 4 ) বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ
গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন
পুনরুজ্জীবিত হবে। ( An-Naml: 65)
→ ( 5 ) এটি গায়বের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরন
করছি। ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা
ছিল না। আপনি ধৈর্য্যধারণ করুন।
যারা ভয় করে চলে, তাদের পরিণাম ভাল,
সন্দেহ নেই। (Hud: 49)
→ ( 6 ) না তাদের কাছে গায়বের খবর আছে? অতঃপর তারা
তা লিপিবদ্ধ করে। ( Al-Qalam: 47)
→ ( 7 ) বলুন, আমার পালনকর্তা সত্য দ্বীন অবতরণ
করেছেন।
তিনি আলেমুল গায়ব। ( Saba: 48)
→ ( 8 ) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয়
কারও কাছে প্রকাশ করেন না। ( Sura Jinn)
→ ( 9 ) তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো
তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই
জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন।
কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে
পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত
(Al-An’aam: 59)
→ ( 10 ) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয়
কারও কাছে প্রকাশ করেন না। (Al-Jinn: 26)
ِ
→ ( 11 ) যেদিন আল্লাহ সব পয়গম্বরকে একত্রিত করবেন,
অতঃপর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে?
তাঁরা বলবেনঃ আমরা অবগত নই, আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে
মহাজ্ঞানী। (Al-Maaida: 109)
→ ( 12 ) যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ
পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল।
সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি মাটিতে
পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল
যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ
শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না। (Saba: 14)
→ ( 13 ) আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার
কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয়
অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে,
আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ
করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও
চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি
চিন্তা কর না ? (Al-An’aam: 50)
_____________ ___
★ পবিত্র ক্বোরআন আল্লাহকেই গায়েব বিষয়ে জানার
সাক্ষ্য দেয়ঃ
>>> উপরে বর্ণিত কোরআনের আয়াতগুলো দ্বারা
বুঝা যায় রাসুল (সাঃ) গায়েব জানতেন না। সবগুলো আয়াতে
স্পষ্টভাবে ঘোষনা করা হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া
কেউ গায়েব জানেন না। এবার নিচের আয়াতগুলো দেখি।
নিচের আয়াতগুলো একমাত্র আল্লাহকেই
গায়েব জানার মালিক হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
→( 1 ) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয়
কারও কাছে প্রকাশ করেন না। (Al-Jinn: 26)
→ ( 2 ) তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রান্ত,
প্রজ্ঞাময়। (At-Taghaabun:18)
→ ( 3 ) তিনিই দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রমশালী,
পরম দয়ালু। (As-Sajda: 6)
→ ( 4 ) তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তারা শরীক করে,
তিনি তা থেকে উর্ধ্বে। (Al-Muminoon: 92)
→ ( 5 ) আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয়
জানেন,
তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন।
(Al-Hujuraat: 18)
→ ( 6 ) আল্লাহ আসমান ও যমীনের অদৃশ্য বিষয়
সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কেও
সবিশেষ অবহিত। (Faatir: 38)
→ ( 7 ) তিনিই আল্লাহ তা ’ আলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য
নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম
দাতা। (Al-Hashr: 22)
→ ( 8 ) বলুন, হে আল্লাহ আসমান ও যমীনের স্রষ্টা,
দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, আপনিই আপনার বান্দাদের
মধ্যে ফয়সালা করবেন, যে বিষয়ে তারা মত বিরোধ
করত। (Az-Zumar: 46)
→ ( 9 ) যেদিন আল্লাহ সব পয়গম্বরকে একত্রিত করবেন,
অতঃপর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে?
তাঁরা বলবেনঃ আমরা অবগত নই, আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে
মহাজ্ঞানী। (Al-Maaida: 109)
→ ( 10 ) বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু
অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য,
দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি
তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা
করতে। (Al-Jumu’a: 8)
→ ( 11 ) তিনিই সঠিকভাবে নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন।
যেদিন তিনি বলবেনঃ হয়ে যা, অতঃপর হয়ে যাবে।
তাঁর কথা সত্য। যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার করা হবে, সেদিন
তাঁরই আধিপত্য হবে। তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ
73)
→ ( 12 ) বলুনঃ তারা কতকাল অবস্থান করেছে, তা আল্লাহই
ভাল জানেন। নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের অদৃশ্য বিষয়ের
জ্ঞান
তাঁরই কাছে রয়েছে। তিনি কত চমৎকার দেখেন ও
শোনেন। তিনি ব্যতীত তাদের জন্য কোন
সাহায্যকারী নেই। তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরীক
করেন না। (Al-Kahf: 26)
→ ( 13 ) কাফেররা বলে আমাদের উপর কেয়ামত আসবে না।
বলুন কেন আসবে না? আমার পালনকর্তার শপথ-অবশ্যই
আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত।
নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ
কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সমস্তই আছে সুস্পষ্ট
কিতাবে। (Sura Saba: 3)
→ ( 14 ) যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ
পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল।
সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি মাটিতে
পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল।যে, অদৃশ্য বিষয়ের
জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ
থাকতো না। (Saba: 14)
→ ( 15 ) আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার
কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয়
অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি
ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার
কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান
হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ?
(Al-An’aam: 50)
→ ( 16 ) তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো
তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই
জানেন। কোন পাতা ঝরেনা; কিন্তু তিনি তা জানেন।
কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে
পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না;
কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে। (Al-An’aam: 59)
ُ
→ ( 17 ) যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা ইবনে মরিয়ম !তুমি
কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে
ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতাকে উপাস্য সাব্যস্ত কর? ঈসা
বলবেন; আপনি পবিত্র !আমার জন্যে শোভা পায় না যে, আমি
এমন কথা বলি, যা বলার।কোন অধিকার আমার নেই। যদি
আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই
পরিজ্ঞাত; আপনি তো আমার মনের কথা ও জানেন এবং
আমি
জানি না যা আপনার মনে আছে। নিশ্চয় আপনিই অদৃশ্য
বিষয়ে জ্ঞাত। (Al-Maaida: 116)
→ ( 18 ) আর আল্লাহর কাছেই আছে আসমান ও যমীনের
গোপন
তথ্য; আর সকল কাজের প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে; অতএব,
তাঁরই বন্দেগী কর এবং তাঁর উপর ভরসা রাখ, আর
তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে তোমার পালনকর্তা কিন্তু
বে-খবর নন। (Sura Hud:123)
Next post >> রাসূল সাঃ কি গায়েব জানেন?? বা পীর বা ওলি বা অন্য কেউ? কেউ ই জানতেন না [পর্ব – ২]
——————————————————————–
Collected from : Sharifkhabd blog