জম জম কুপের পানি আল্লাহর রহমতস্বরুপ। শিশু হযরত ইসমাইল (আঃ) ও তাঁর মা’কে যখন আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আঃ ) নির্জন মরুভুমিতে পরিত্যাগ করেন। তখন তার পায়ের আঘাতে জমজম কুপের উৎপত্তি হয়।মা হাজেরা কুপের চারপাশে চারটি পাথর দিয়ে সিমানা দিয়ে দেন তা না হলে সারা পৃথিবীতে জমজম কুপ ছড়িয়ে পড়ত।
জমজম মুসলমানদের জন্য খোদার পক্ষ হতে বিশেষ নেয়ামত। পৃথিবীর আশ্চর্য জিনিসের অন্যতম। জমজম কুপের পানি চৌদ্দশত বছর ধরে প্রবাহমান। বিশ্বের এমন কোন কুপ নেই যেটা ধারাবাহিকভাবে বহু শতাব্দি ধরে পানি সরবরাহ করছে। জমজম কূপের উৎস কী তা আজোও কেউ আবিষ্কার করতে পারেনি। হয়তোবা জান্নাতের কোন উৎস থেকে হবে। কোরআন হাদীসে জমজমের উৎস সর্ম্পকে কোন বর্ণনা নেই।
তবে জমজমের পানি সুপেয়। জমজমের পানি পান করার পূর্বে দোয়া করলে সে দোআ কবুল হওয়ার কথা সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে। জমজমের পানি বরকতময় পানি। বিজ্ঞ ব্যক্তিদের অভিমত হল এ পানির গুনাগুণ নষ্ট হয় না দীর্ঘদিন পর্যন্ত। ধর্র্মপ্রাণ মুসলমানগন হজ্জ্বের সময় সৌদি থেকে নিজেদের সাথে এ বরকতময় পানি সঙ্গে নিয়ে আসেন। পৃথীবিতে এর চেয়ে পবিত্র এবং বিশুদ্ধ পানি আর হতে পারে না। এজন্য হাজী সাহেবানগন হজ্জের সময়গুলোতে জমজমের পানি পান করেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জমজমের পানি যে যেই নিয়তে পান করবে, তার সেই নিয়ত পূরণ হবে। যদি তুমি এই পানি রোগমুক্তির জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করবেন। যদি তুমি পিপাসা মেটানোর জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার পিপাসা দূর করবেন। যদি তুমি ক্ষুধা দূর করার উদ্দেশ্যে তা পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার ক্ষুধা দূর করে তৃপ্তি দান করবেন। এটি জিবরাইল (আ.)-এর পায়ের গোড়ালির আঘাতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পানীয় হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ ও আল-আজরাকি)
জমজমের পানি পান করার পদ্ধতি: ফুক্বাহায়ে কিরাম জমজমের পানি কিবলা দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে পান করা মুস্তাহাব বলেছেন। তবে একদল ফুক্বাহায়ে কিরাম দাঁড়িয়ে পান করাকে মুস্তাহাব বলেন না, বরং জায়েজ বলে থাকেন। {ফাতওয়ায়ে শামী-১/২৫৪-২৫৫)