জান্নাত প্রতিটি মানুষের কামনা। যারা আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে তাদের জন্য জান্নাত সুনিশ্চিত। আর তাই আল্লাহ তাআলার প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও অবিচল বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে।
যারা আল্লাহর দেয়া বিধান মোতাবেক জীবন পরিচালনা করবে, তাদের কোনো ভয়-ভীতির প্রয়োজন হবে না। তারা হবে জান্নাতের মেহমান।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য বিনা হিসেবে জান্নাত লাভের একটি ঘোষণা প্রদান করেছেন। আর তা হলো কুসংস্কার তথা কুফরি ধ্যান-ধারণামুক্ত থাকা।
ইসলামে কখনোই কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই। যাদু-মন্ত্র, কুফরি-কালামসহ যাবতীয় কুসংস্কারকে কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে বর্ণনা করেন-
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে (বেহেশতে) প্রবেশ করবে। তারা হলো-
>> মন্ত্রতন্ত্র দ্বারা ঝাড়-ফুঁক করায় না।
>> অশুভ লক্ষণাদিতে বিশ্বাস করে না এবং
>> তারা শুধুমাত্র তাদের প্রতিপালকের ওপর নির্ভর করে। (বুখারি ও মুসলিম)
উল্লেখিত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, যারা সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় একমাত্র আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই আল্লাহর প্রিয় বান্দা।
এ হাদিস দ্বারা আরও প্রমাণিত যে, বর্তমান সময়ে সমাজে প্রচলিত জাদুবিদ্যা, মন্ত্র-তন্ত্র, অনৈসলামিক ঝাড়-ফুঁক ও কবিরাজি ইসলাম সমর্থন করে না।
কারণ এ সব প্রক্রিয়ায় রয়েছে অনেক অবৈধ কাজ। এমনও হয় যে, তখন আল্লাহ তাআলার ওপর মানুষ আস্থা হারিয়ে তন্ত্র-মন্ত্র, ঝাড়-ফুঁককারী কবিরাজদের ওপর আস্থাশীল হয়ে যা।
তবে মানুষের সমস্যায় ও অসুস্থতায় চিকিৎসা করানো সুন্নত। কারণ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।
পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলার ওপর পরিপূর্ণ আস্থা এবং অবিচল বিশ্বাস রেখে বৈধভাবে যদি চিকিৎসা করা হয়; তবে তাতে কোনো সমস্যা নেই।
কুরআনুল কারিমের অসংখ্য আয়াতের আমল রয়েছে। যারা আল্লাহর বিধান মেনে ওই সব আয়াতের আমল করে; তাতে মানুষের উপকার হয়।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও হাদিসে অনেক দোয়া এবং আমলের বর্ণনা করেছেন। যাতে মানুষের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা হয়।
এ কারণে মনে রাখতে হবে, আমল বা চিকিৎসা হবে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক। তবে তা সাওয়াব ও নাজাতের ফয়সালা হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঝাড়-ফুঁক, তন্ত্র-মন্ত্র থেকে হেফাজত করে তাঁর প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা এবং অবিচল বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে বিনা হিসেবে জান্নাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।