আরবী বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী ১২ মাসের প্রায় প্রতি মাসেরই কোনো না কোনো বিশেষ দিবস বা দিন রয়েছে এবং সেসব বিশেষ দিবস বা দিনে বিশেষ আমল-ইবাদতের দিক-নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া আরবী ১২ মাসের মাঝে কিছু মাসকে অন্য মাসের তুলনায় সম্মানিত বা বিশেষ বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আরবী এক বছরে ১২ মাস।
আর এই ১২ মাসের মধ্যে চার মাস বিশেষ তাৎপর্যের অধিকারী। এই চারটি মাসের তিনটি মাস ধারাবাহিকভাবে (অর্থাৎ জিলকদ, জিলহজ ও মহররম) এবং চতুর্থ মাস হলো রজব মাস। (বুখারি, হাদিস নং-৪৬৬২, মুসলিম, হাদিস নং-১৬৭৯)
আরবী ১২ মাসের প্রথম মাস মুহাররম। এই মাসের ১০ তারিখ একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনটিকে আশুরার দিন বা দিবস বলা হয়। এই দিনে বিশেষ যেসব আমলের কথা ইসলামে বর্ণিত হয়েছে তার মাঝে অন্যতম একটি আমল হলো রোজা রাখা। এই দিন রোজা রাখার ফজিলত ব্যাপক এবং এদিনে রোজা রাখার ব্যাপারে রাসুল (সা.) উৎসাহিত করেছেন।
প্রসিদ্ধ সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমজান মাসের রোজা বা সাওমের পর সর্বোত্তম রোজা বা সাওম হলো মহররম মাসের রোজা। (মুসলিম, হাদিস নং-১/৩৬৮)
হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে তিনি এর ফলে পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। (মুসলিম, হাদিস নং-১১৬১, তিরমিজি, হাদিস নং- ৭৪৯)
রাসূলের (সা.) আদেশের কারণে আশুরার দিন রোজা পালন করা সবার জন্য ওয়াজিব হিসেবে গণ্য হতো। এরপর যখন রমজান মাসের রোজার হুকুম নাজিল হলো, তখন আশুরার রোজার হুকুম ওয়াজিব থেকে সুন্নাতের পর্যায়ে নেমে এলো। এ বিষয়টি সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেছেন, যে চায় সে (আশুরার দিন) রোজা রাখতে পারে এবং (আশুরার দিন রোজা) না রাখলেও ক্ষতি নেই। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)
এছাড়া সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী প্রসিদ্ধ সাহাবি হজরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.)বলেছেন, ‘যদি আমি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে আশুরার দিনের সাথে নবম দিনেও অবশ্যই রোজা রাখব। (মুসলিম, হাদীস নং- ২১৫৪) রাসুলের (সা.) এই বর্ণনাটির দ্বারা একথা বোঝা যায় যে, আশুরার দিন শুধু একটি রোজা না রেখে আশুরার দিনের আগে বা পরে আরো একটি রোজা রাখা উচিত।
-প্রিয় ইসলাম
সৌজন্যঃ- NewTips25.Com