আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ট্রিকবিডির সকল সম্মানিত সদস্যবৃন্দ কে  ।কেমন আছেন আপনারা সবাই ?

আশা করি আল্লাহ্ অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন এবং আমি দোয়া করি সবাই ভালো থাকুন আর ভালো রাখুন আপনার পিতা-মাতা এবং আপনার আশে-পাশের সকলকে

কেমন আছেন সবাই । সবার প্রিয় ট্রিকবিডিতে প্রতিদিন সবাই অনেক অনেক পোস্ট করেন , আজ আমি একটু ভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলব । আশা করব পোস্টটা সবাই শেষ পর্যন্ত পড়বেন 🙂

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- (হে আল্লাহর রাসুল!) আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল কোনটি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘নামাজ’। (বুখারি ও মুসলিম)

ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

ইসলাম:

Image result for ইসলাম

ইসলাম আল্লাহ তা’য়ালার মনোনীত ‘দ্বীন’ বা জীবন ব্যবস্থা। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করবে ইসলামে তার পথ নির্দেশ রয়েছে।
ইসলাম অর্থ আত্মসমর্পণ। তাই মানুষের মধ্যে যারা এ ইসলামকে কবুল করে বা আল্লাহ র কাছে সম্পূর্ণরূপে নিজেদের আত্মসমর্পণ করে তাদের বলা হয় ‘মুসলিম’। কেবল মুসলমানের ঘরে জন্ম নিলেই কেউ মুসলমান হয় না, বরং কাফের মুশরিকের ঘরে জন্ম নিয়েও যদি কেউ ঈমান আনে এবং ইসলামের সব বিধি বিধান মেনে চলে তবে সেও মুসলিম

ইসলাম ধর্মের মূল স্তম্ভ হলো ৫টিঃ

  • কালেমা বা স্বাক্ষ্য দেয়া
  • নামাজ বা সালাত
  • রোজা বা সাউম
  • হজ্জ
  • যাকাত

আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল হল নামাজ বা সালাত। তাই ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজ।

আসুন এবার নামাজের কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক…

Related image

শর্তঃ

কারো ওপর নামাজ ফর‌য হওয়ার জন্য শর্তগুলো হলোঃ-

  • মুসলিম হওয়া
  • সাবালক হওয়া এবং
  • সুস্থ মস্তিস্কের হওয়া।

নামাযের শর্তাবলীঃ

নিম্নের পাঁচটি কারণ সংঘটিত হলে নামাজ বৈধ হয়।

  • নামাজের ওয়াক্ত সম্পর্কে নিশ্চিত হলে। অনিশ্চিত হলে নামাজ হবে না, যদি তা ঠিক ওয়াক্তেও হয়।
  • কাবামুখী হয়ে দাঁড়ানো। তবে অসুস্থ এবং অপারগ ব্যাক্তির জন্য এই শর্ত শিথিলযোগ্য।
  • সতর ঢাকা থাকতে হবে। পুরুষের সতর হল নাভির উপর থেকে হাঁটুর নিচ (টাখনুর উপরে) পর্যন্ত, আর নারীর সতর হল মুখমণ্ডল, দুই হাতের কব্জি ও দুই পায়ের পাতা ব্যতীত সারা শরীর।
  • পরিধেয় কাপড়, শরীর ও নামাজের স্থান পরিষ্কার বা পাক-পবিত্র হতে হবে।
  • অযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা আর্জন করতে হবে।

নামাযের ফরজঃ

নামাযের ফরজ মোট ১৩ টি। আহকাম ৭ টি। আরকান ৬ টি। নামাযের বাহিরের কাজগুলিকে আহকাম বলে। আর নামাযের ভিতরের কাজগুলোকে আরকান বলে।

আহকামঃ

  • শরীর পবিত্র হওয়া।
  • কাপড় বা বস্ত্র পবিত্র হওয়া।
  • নামাযের জায়গা পবিত্র হওয়া।
  • সতর ঢেকে রাখা।
  • কিবলামুখী হওয়া।
  • ওয়াক্তমত নামায আদায় করা
  • নামাযের নিয়্যত করা।

আরকানঃ

  • তাকবীরে তাহরীমা (আল্লাহু আকবার) বলে নামায শুরু করা।
  • দাঁড়িয়ে নামায পড়া।
  • সুরা ফাতিহার সাথে কুরআন পড়া।
  • রুকু করা।
  • দু্ই সিজদা করা।
  • শেষ বৈঠক করা।

নামায সম্পর্কিত কিছু আয়াতঃ

আয়াত নং-১:

اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ-

অর্থাৎ- নিশ্চয়ই নামায মানুষকে অশ্লীল ও ঘৃণিত কাজ থেকে বিরত রাখে। সূরা: আনকাবূত, আয়াত-৪৫

আয়াত নং-২

حٰفِظُوْا عَلَى الصَّلٰوتِ وَالصَّلٰوةِ الْوُسْطٰىْ وَقُوْمُوْا لِلّٰهِ قٰنِتِيْنَ-

অর্থাৎ- সজাগ দৃষ্টি রেখ সমস্ত নামাযের প্রতি এবং মধ্যবর্তী নামাযের প্রতি। আর আল্লাহর সামনে আদব সহকারে দাড়াও। (সূরাঃ বাকারা, আয়াত: ২৩৮)

আয়াত নং-৩:

قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُوْنَ- الَّذِيْنَ هُمْ فِى صَلَاتِهِمْ خَشِعُوْنَ-

অর্থাৎ- নিশ্চয় মুমিনগণ সফলকাম, যারা নিজেদের নামাযে অন্তরের বিনয় প্রকাশ করে। (সূরাঃ মু‘মিন আয়াত-১-২)

আয়াত নং- ৪:

فَوَيْلٌ الِّلْمُصَلِّيْنَ- الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَ- الَّذِيْنَ هُمْ يُرَاءُوْنَ-

অর্থাৎ- সুতরাং ঐ সব নামাযির জন্য দুঃখ, যারা নিজেদের নামাযসমূহে অলসতা করে। যারা লোককে দেখানোর জন্য নামায পড়ে। (সূরাঃ মাউন- আয়াত নং- ৪-৫-৬)

নামায সম্পর্কিত কিছু আয়াত ও হাদীসঃ

হাদীস নং-১:

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-

قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بُنِىَ الْاِسْلَامُ عَلٰى خَمْسٍ شَهَادَةُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ وَاِقَامُ الصَّلٰوْةَ وَاِيْتَاءُ الزَّكٰوْةَ وَحَجُّ الْبَيْتِ وَصَوْمُ رَمَضَانَ- مُتَّفَقٌ عَلَيْةِ-

অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ইসলামের ভিত্তি ৫টি জিনিসের উপর স্থাপিত- ১. এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল।২. নামায কায়েম করা। ৩. যাকাত আদায় করা। ৪. বাইতুল্লাহর হজ্জ করা এবং ৫. রমযানের রোজা রাখা। (বোখারী ও মুসলিম)

হাদীস নং-২:

ইমাম আহমদ হাসান সনদে ও আবূ ইয়ালা কর্তৃক বর্ণিত। হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-

وَنَهَانِيْ عَنْ نَقْرَةٍ  كَنَقْرَةِ  الدَّيْكِ  وَإِقْعَاءٍ كَإِقْعَاءِ الْكَلْبِ وَالْتِفَاتٍ كَالْتِفَاتِ الثَّعْلَبِ-

অর্থাৎ- নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযে তিনটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছেন। ১. মোরগের মত ঠোকর মারতে ২. কুকুরের মত বসতে এবং ৩. শৃগালের মত এদিক সেদিক তাকাতে। (আহমদ-২৯৯)

হাদীস নং-৩:

ইমাম বোখারী তারিখে এবং ইবনে হুযায়মা প্রমুখ হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ, হযরত আমর বিন আস, হযরত ইয়াযিদ বিন আবূ সুফিয়ান ও হযরত শারাহবীল বিন হাসনাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণনা করেন,

أَن رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهِ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَجُلًا لَا يُتِمَّ رُكُوْعَهُ يَنْقُرُ فِيْ سُجُوْدِهِ وَهُوَ يُصَلِّيْ- فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْ مَاتَ هَذَا عَلَى حَالِهِ هَذِهِ مَاتَ عَلَى غَيْرِ مِلَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَثَلُ الَّذِيْ  لَا يُتِمُّ رُكُوْعَهُ وَيَنْقُرُ فِيْ سُجُوْدِهِ مَثَلُ الْجَائِعِ يَأكُلُ التَّمْرَةَ وَالتَّمْرَتَانِ لَا يُغْنِيَانِ عَنْهُ شَيْئًا-

অর্থাৎ- একদিন হুযুর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে নামায আদায় করতে দেখলেন যে, রুকূ পুরোপুরিভাবে করছে না এবং সিজদায় ঠোকর মারছে। হুযুর নির্দেশ দিলেন, পরিপূর্ণভাবে রুকূ কর এবং এ-ও ইরশাদ করলেন, এ ব্যক্তি যদি এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তবে মিল্লাতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য মিল্লাতে মৃত্যুবরণ করবে। তারপর ইরশাদ করলেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে রুকূ করেনা এবং সিজদায় ঠোকর মারে ঐ ভুখার মত যে এক দু’টি খেজুর খেয়ে নেয়, যা কোন কাজ দেয় না। (মু’জামুল কাবীর, ১৫৮)

হাদীস নং-৪:

আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, হুযূর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

أَسْرَقُ النَّاسِ مَنْ يَسْرِقُ صَلَاتَهُ، قِيْلَ: يَارَسُوْلَ اللّٰهِ، وَكَيْفَ يَسْرِ قُ صَلَاتَهُ؟ قَالَ: لَا يُتِمُّ رُكُوْعَهَا، وَلَا سُجُوْدَهَا-

অর্থাৎ- সবচেয়ে বড় চোর সেই, যে নিজ নামায চুরি করে। কেউ আরয করলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! নামায কীভাবে চুরি করে? ইরশাদ করলেন, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় করে না। (মুজামুল কাবীর-২০৮)

হাদীস নং-৫:

ইমাম মালিক ও আহমদ হযরত নুমান বিন মুররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুদূদ বা শরয়ী শাস্তির বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে সাহাবায়ে কেরামগণকে বললেন-

مَا تَقُوْلُوْنَ فِىْ السَّارِقِ، وَالزَّانِيْ، وَشَارِبِ الْخَمْرِ؟ قَالُوْا: اللّٰهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ قَالَ: هُنَّ فَوَاحِشُ، وَفِيْهُنَّ عُقُوْبَاتٌ، وَشَرُّ السَّرِقَةِ سَرِقَةُ الرَّجُلِ صَلَاتَهُ- قَالُوْا: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ، وَكَيْفَ يَسْرِقُ صَلَاتَهُ؟ قَالَ: لَا يُتِمُّ رُكُوْعَهَا وَلَا سُجُوْدَهَا-

অর্থাৎ- মদ্যপায়ী ব্যভিচারী ও চোর সম্পর্কে তোমাদের কি ধারণা? সকলে আরয করলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুব ভাল জানেন। ইরশাদ করলেন, এসব অত্যন্ত মন্দ এবং এতে শাস্তি রয়েছে। আর সবচেয়ে বড় চুরি হচ্ছে, লোক নিজ নামায চুরি করা। আরয করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নিজ নামায কীভাবে চুরি করে? ইরশাদ করলেন, এভাবে যে, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় না করা। (আল মুসান্নাফ ৩৭০/ জা‘মউ বায়ানিল ইলমে ওয়া ফাদ্বলিহি, ৪৮০)

হাদীস নং-৬:

সহীহ বোখারীতে হযরত শফীক থেকে বর্ণিত, হযরত হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন-

رَأَى رَجُلًا لَا يُتِمُّ رُكُوْعَهُ وَلَا سُجُوْدَهُ، فَلَمَّا قَضَىْ صَلَاتَهُ قَالَ لَه حُذَيْفَةُ: مَا صَلَّيْتَ؟ قَالَ: وَأَحْسِبُهُ قَالَ: لَوْمُتَّ عَلَى غَيْرِ سُنَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ-

অর্থাৎ- তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় করছে না। যখন সে নামায শেষ করল তিনি তাকে কাছে ডেকে বললেন, তোমার নামায হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা হচ্ছে, তিনি এ-ও বলেছেন যে, যদি তুমি এভাবে নামায পড়তে পড়তে মৃত্যুবরণ কর তবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দ্বীনের উপর তোমার মৃত্যু হবে না। (বোখারী)

হাদীস নং-৭:

ইমাম আহমদ হযরত মুতলাক বিন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, হুযুর আকদাস সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

لَا يَنْظُرُ اللّٰهُ إِلَى صَلَاةِ عَبْدٍ لَا يُقِيْمُ صُلْبَهُ بَيْنَ رُكُوْعِهِ وَسُجُوْدِهِ-

অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘য়ালা বান্দার ওই নামাযের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন না, যাতে রুকূ ও সিজদার মাঝখানে পিঠ সোজা করা হয় না। (আহমদ)

হাদীস নং-৮:

ইমাম তিরমিযী হাসান সনদে বর্ণনা করেন যে, হুযূর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হযরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন-

يَا بُنَىَّ، إِيَّاكَ وَالْاِلْتِفَاتَ فِيْ الصَّلَاةِ، فَإِنَّ الْاِلْتِفَاتَ فِيْ الصَّلَاةِ هَلَكَةٌ-

অর্থাৎ- হে বৎস! নামাযে এদিক সেদিক তাঁকানো থেকে বিরত থাক। কারণ নামাযে এদিক সেদিক তাঁকানোই ধ্বংস। (তিরমিযী)

হাদীস নং-৯:

বোখারী, আবু দাউদ, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ হযরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, হুযূর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَرْفَعُوْنَ أَبْصَارَهُمْ إِلَى السَّمَاءِ فِيْ صَلَاتِهِمْ، فَاشْتَدَّ قَوْلُهُ فِيْ ذَلِكَ، حَتَّى قَالَ: لَيَنْتَهُنَّ عَنْ ذَلِكَ أَوْ لَتُخْطَفَنَّ أَبْصَارُهُمْ-

অর্থাৎ- কি হল ঐ সব লোকের, যারা নামাযের মধ্যে আসমানের দিকে চোখ তুলে তাকায়। তা থেকে বিরত থাক, অন্যথায় তাদের চোখ ছিনিয়ে নেয়া হবে। (বোখারী)

হাদীস নং-১০:

দারেমী হযরত কা’ব বিন উজরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণনা করেন, হুযুর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ মহান প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তায়ালা বলেন,

مَنْ صَلَّى الصَّلَاةَ لِوَقْتِهَا فَأَقَامَ حَدَّهَا كَانَ لَهُ بِهِ عَلَىَّ عَهْدٌ أُدْخِلُهُ الْجَنَّةَ، وَمَنْ لَمْ يُصَلِّ الصَّلَاةَ لِوَقْتِهَا وَلَمْ يُقِمْ حَدَّهَا لَمْ يَكُنْ لَهُ عِنْدِى عَهْدٌ إِنْ شِئْتُ أَدْخَلْتُهُ النَّارَ، وَإِنْ شِئْتُ أَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ-

অর্থাৎ- যে ব্যক্তি যথাসময়ে নামায সম্পন্ন করবে, তার জন্য আমার প্রতিশ্রুতি হল, তাকে আমি জান্নাতে প্রবেশ করাব। আর যে ব্যক্তি যথাসময়ে পড়বে না এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করবে না তার জন্য আমার কোন প্রতিশ্রুতি নেই। চাইলে দোযখে প্রবেশ করাব আর চাইলে জান্নাতে প্রবেশ করাব। (দারেমী, ফতওয়ায়ে রযভীয়্যাহ)

হাদীস নং-১১:

হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন-

مَنْ لَمْ تَنْهَهُ صَلَاتُهُ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ، لَمْ يَزْدَدْ مِنَ اللّٰهِ إِلَّا بُعْدًا-

অর্থাৎ- যার নামায তাকে অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বিরত রাখে না, তা নামাযই নয়। (তাবরানী)

হাদীস নং-১২:

তাবরানী আওসাত্ব গ্রন্থে হযরত আনাস বিন মালিক থেকে
বর্ণনা করেন। হুযূর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَنْ صَلَّى الصَّلَاةَ لِوَقْتِهَا، وَأَسبَغَ لَهَا وُضُوْءَهَا، وَأَتَمَّ لَهَا قِيَامَهَا وَخُشُوْعَهَا وَرُكُوْعَهَا وَسُجُوْدَهَا خَرَجَتْ وَهِيَ بَيْضَاءُ مُسْفِرَةٌ، تَقُوْلُ: حَفِظَكَ اللّٰهُ كَمَا حَفِظْتَنِيْ، وَمَنْ صَلَّى الصَّلَاةَ لِغَيْرِ وَقْتِهَا فَلَمْ يُسْبِغْ لَهَا وُضُوْءَهَا، وَلَمْ يُتِمَّ لَهَا خُشُوْعَهَا وَلَا رُكُوْعَهَا وَلَا سُجُوْدَهَا خَرَجَتْ وَهِيَ سَوْدَ اءُ مُظْلِمَةٌ، تَقُوْلُ: ضَيَّعَكَ اللّٰهِ كَمَا ضَيَّعْتَنِيْ، حَتَّى إِذَا كَانَتْ حَيْثُ شَاءَ اللّٰهُ لُفَّتْ كَمَا يُلَفُّ الثَّوْبُ الْخَلَقُ، ثُمَّ ضُرِبَ بِهَا وَجْهُهُ-

অর্থাৎ- যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামায যথাসময়ে সম্পন্ন করে এবং উহার ওযূ, কিয়াম, খূশূ, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় করে ঐ সব নামায উজ্জ্বল আলো হয়ে এ বলে বের হয় যে, আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করুন, যেমনি তুমি আমাকে রক্ষা করেছ। আর যে ব্যক্তি যথাসময়ে নামায না পড়ে অন্য সময়ে পড়ে এবং ওযূ, কিয়াম খূশূ, রুকূ ও সিজদা পরিপূর্ণভাবে করে না, ঐ নামায কালো অন্ধকার হয়ে এ বলে বের হয় যে, আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুক, যেভাবে তুমি আমাকে নষ্ট করেছ। শেষ পর্যন্ত ঐ স্থানে নিয়ে পৌঁছে যেখান পর্যন্ত পৌঁছা আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করেন, সেখান থেকে পুরানো আবর্জনার মতো একত্রিত করে তার মুখে নিক্ষেপ করা হয়। (তাবরানী)

হাদীসন নং-১৩:

হুযূর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَنْ تَرَكَ الصَّلَاةَ مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللّٰهِ وَرَسُوْلِهِ-

অর্থাৎ- ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দিওনা, কারণ যে ব্যক্তি স্বইচ্ছায় নামায ছেড়ে দেয় আল্লাহ ও রাসূল তার থেকে দায়মুক্ত। (আহমদ)

হাদীস নং-১৪:

হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন-

قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ مِنْ عَمَلِهٖ صَلٰوتُهٗ فَاِنْ صَلُحَتْ فَقَدْ اَفْلَحَ وَاَنْجَحَ وَاِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ فَاِنِ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيْضَتِهٖ شَيْئًا قَالَ الرَّبُّ عَزَّوَجَلَّ اُنْظُرُوْاْ هَلْ لِعَبْدِىْ مِنْ تَطَوُّعٍ فَيُكَمَّلُ مِنْهَا مَا انْتَقَصَ مِنَ الْفَرِيْضَةِ؟ ثُمَّ يَكُوْنُ سَائِرُ اَعْمَالِهٖ عَلٰى هٰذَا- رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ

অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কেয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে যে আমলটির হিসাব সর্বপ্রথম নেয়া হবে তা হচ্ছে নামায। যদি এ হিসাবটি নির্ভূল হয় তবে সে সফল হবে ও নিজের লক্ষে পৌঁছে যাবে। আর যদি এ হিসাবটিতে ভুল বা ত্রুটি দেখা যায় তবে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি তার ফরযগুলোর মধ্যে কোন কমতি থাকে তবে মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ বলবেন, দেখ আমার বান্দার কিছু নফলও আছে কিনা, তার সাহায্যে তার ফরযসমূহের কমতি পূরণ করে দাও। এরপর সব আমলের হিসাব এভাবেই নেয়া হবে। (তিরমিযী)

হাদীস নং-১৫:

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত তিনি বলেন-

كَانَ  رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَفْتِحُ الصَّلَاةَ بِالتَّكْبِيْرِ وَالْقِرَاءَةَ بِالْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ وَكَانَ إِذَا رَكَعَ لَمْ يُشْخِصْ رَأْسَهُ وَلَمْ يُصَوِّبْهُ وَلَكِنْ بَيْنَ ذَلِكَ وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ الرُّكُوْعِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ قَائِمًا وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ السَّجْدَةِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ جَالِسًا وَكَانَ يَقُوْلُ فِيْ كُلِّ رَ كْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ وَيَنْهَى أَنْ يَفتَرِشَ الرَّجُلُ ذِرَاعَيْهِ افْتِرَاشَ السَّبُعِ وَكَانَ يَخْتِمُ الصَّلَاةَ بِالتَّسْلِيْمِ- رواه مسلم

অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামায শুরু করতেন আল্লাহু আকবার দ্বারা এবং কেরাত শুরু করতেন  আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন দ্বারা। আর যখন রুকূতে যেতেন তখন মাথা উপরে তুলেও রাখতেন না, আবার নিচের দিকে ঝুকিয়েও রাখতেন না। বরং দুইয়ের মাঝামাঝি রাখতেন। আর যখন রুকূ হতে মাথা উঠাতেন তখন সোজা হয়ে না দাড়ানো পর্যন্ত সিজদায় যেতেন না। আর সিজদা হতে উঠে সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত দ্বিতীয় সিজদায় যেতেন না। আর প্রত্যেক দুই রাকাতের মধ্যে আত্তাহিয়্যাতু (তাশাহুদ) পাঠ করতেন, আর বসার সময় বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পা খাড়া করে রাখতেন। এবং শয়তানের  ন্যায় হাটু খাড়া করে বসতে নিষেধ করেছেন এবং কোন পুরুষকে তার হাত হিংস্র পশুর ন্যায় মাটিতে বিছিয়ে দিতেও  নিষেধ করেছেন, সবশেষে তিনি সালামের দ্বারা নামায শেষ করতেন।

হাদীস নং-১৬:

হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الخَمْسِ كَمَثَلِ نَهْرٍ جَارٍ غَمْرٍ عَلَى بَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلِّ يَوْمٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ-
رواه مسلم

অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের উদাহরণ হল, যেমন তোমাদের কারো ঘরের দরজার পাশেই একটি পানি পূর্ণ প্রবাহমান নদী, আর ঐ লোক তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোছল করে। (মুসলিম)

হাদীস নং-১৭:

হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-

اَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِذَا صَلّٰى اَحَدُكُمْ لِلنَّاسِ فَلْيُخَفِّفْ فَاِنَّ فِيْهِمُ الضَّعِيْفَ وَالسَّقِيْمَ وَالْكَبِيْرَ وَاِذَا صَلّٰى اَحَدُكُمْ لِنَفْسِهٖ فَلْيُطَوِّلْ مَا يَشَاءُ- مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ  وَفِىْ رِوَايَةٍ وَذَا الْحَاجَةِ-

অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন নামাযে মানুষের ইমামতি করে, সে নামায সংক্ষেপ করবে। কেননা, তাদের মধ্যে দুর্বল, রুগ্ন ও বৃদ্ধ ব্যক্তি থাকতে পারে। যখন তোমাদের কেউ একাকী নামায আদায় করবে, তখন সে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী নামায সুদীর্ঘ করবে। বোখারী ও মুসলিম

হাদীস নং-১৮:

হযরত ইমরান বিন হুছাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-
قَالَ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلِّ قَائِمًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ- رواه البخاري
অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নামায দাঁড়িয়ে আদায় করবে, যদি অসমর্থ হও তখন বসে আদায় করবে আর যদি তাও না পার তখন শুয়ে আদায় করবে। (বোখারী)

হাদীস নং-১৯:

হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-

عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ اِلَى الْجُمُعَةِ وَرَمَضَانُ اِلٰى رَمَضَانَ مُكَفَّرَاتٌ لِّمَا بَيْنَهُنَّ اِذَا اجْتُنِبَتِ الْكَبَائِرُ- رَوَاهُ مُسْلِمٌ

অর্থাৎ- নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুম্মাহ হতে অপর জুম্মাহ এবং এক রমযান হতে অপর রমযান, এসবের মধ্যবর্তী সময়ে যে সব সগীরা গুনাহ হয় তার জন্য কাফফারা স্বরূপ, যখন কবীরা গুনাহ থেকে দূরে থাকে। (মুসলিম)

নামাজ ত্যাগের ভয়াবহ পরিনামঃ

১। হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, একজন মুসলিম ও শিরক, কুফরের মাঝে পার্থক্য হল নামাজ ছেড়ে দেয়া। অর্থাৎ নামাজ ছেড়ে দেয়া মুসলিম ব্যক্তিকে কুফর ও র্শিক পর্যন্ত পৌছে দেয়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮২)

২। হযরত নাওফাল ইবনে মুয়াবিয়া রাযি. হতে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যার এক ওয়াক্ত নামাজ ছুটে গেল তার যেন ঘরবাড়ি পরিবার ও ধনসম্পদ সবই কেড়ে নেয়া হল।(সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ২৪৬৮, নাসাঈ শরীফ, হাদীস নং ৭৪৮)

৩। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি শরীয়ত সম্মত ওজর ব্যতীত দুই ওয়াক্ত নামাজ একসঙ্গে পড়ল, সে কবীরা গোনাহের মধ্য থেকে একটিতে প্রবেশ করল।(মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস নং ১০২০, সুনানুল ক্বুরা লিল বাইহাক্বী, হাদীস নং ৫৭৭১)

৪। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি. হতে বর্ণিত,

একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের বিষয় উল্লেখ করে বললেন, যে ব্যক্তি নামাজের ইহতেমাম করে, তার জন্য নামাজ কিয়ামতের দিন নূর হবে ও হিসাবের সময় দলীল হবে ওবং নাজাতের উপায় হবে। আর যে ব্যক্তি নামাজের ইহতিমাম করে না, কিয়ামতের দিন নামাজ তার জন্য নূর হবে না, আর তার নিকট কোন দলীলও থাকবে না এবং নাজাতের জন্য কোন উপায়ও হবে না।এমন ব্যক্তির হাশর হবে ফেরআউন, হামান ও উবাই ইবনে খলফের সাথে।(মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৬৫৭৬, সহীহ ইবনে হিব্বান হাদীস নং ১৪৬৭)

 

পরিশেষে…
নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া মুমিন মুসলমানরে ঈমানের দাবি ও ফরজ ইবাদত। নামাজি ব্যক্তিই হলো সফল। যার সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন প্রিয়নবি। তিনি বলেছেন-

‘যে ব্যক্তি নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে; কেয়ামতের দিন ওই নামাজ তার জন্য নূর হবে এবং হিসেবের সময় নামাজ তার জন্য দলিল হবে এবং নামাজ তার জন্য নাজাতের কারণ হবে।

যে ব্যক্তি নামাজের প্রতি যত্নবান হবে না- কেয়ামতের দিন নামাজ তার জন্য নূর ও দলিল হবে না। তার জন্য নাজাতের কোনো সনদও থাকবে না। বরং ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খালফের সাথে তার হাশর হবে।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহিহ তরিকায় সঠিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।

আমিন ।

 

পোস্টের কথাগুলো বিভিন্ন ইসলামিক সাইট থেকে সংগৃহিত , তাই অন্য কোন পোস্টের সাথে এর আংশিক মিল খুজে পেতে পারেন ।

ধন্যবাদ সবাইকে । 🙂

29 thoughts on "আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল হল নামাজ বা সালাত ।"

  1. Shadhin Author Post Creator says:
    পোস্টটা অনেক বড় হয়ে গেছে , কিন্তু আপনি যদি ধৈর্য্য ধরে সম্পূর্ন পোস্টটা পড়তে পারেন তাহলেই বুঝবেন নামাজ মুসলিমদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ । ধন্যবাদ সবাইকে , কেমন হয়েছে পোস্টটা জানাতে ভুলবেন না । 🙂
    1. Rahman bd Contributor says:
      সন্মানিত প্রিয় সাধীন ভাই আশা করি ভালো আসেন, আল্লাহ্‌র রহমতে আমিও ভালো আছি। এক বছর ধরে ট্রিকবিডিতে কিছু লিখতে পাচ্ছি না। সাধীন ভাই প্লিজ শেষ বারের মত আমার টিউনার পদ টা ফিরিয়ে দিয়ে, আমার প্রাণ প্রিয় TrickBD.CoM সাইটিতে কিছু লিখতে দিয়ে সাহায্য করুন। please please please.. সাধীন ভাই আমার Author / টিউনার আইডি টা ফিরিয়ে দেন।।
  2. Sahariaj Author says:
    আল্লাহ আমাদের ৫ ওয়াক্ত নামাজ সঠিক ও সুন্দর ভাবে পড়ার তৌফিক দান করুন
    1. Shadhin Author Post Creator says:
      Amin ?
    2. AP DON RANGBAZZ Contributor says:
      আমিন
  3. Shadin Contributor says:
    মাশাল্লাহ।
    সবাই ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।
  4. Sajeeb Contributor says:
    আপনি ঠিকি বলেছেন পোস্ট টা একটু বড় হয়েছে। তবে ধৈর্য সহকারে পড়লেই আমরা বুঝতে পারবো নামাজ আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপুর্ণ। আল্লাহ আমাদের ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক। আমিন।
    1. Shadhin Author Post Creator says:
      আমিন
    2. Rahman bd Contributor says:
      সন্মানিত প্রিয় সাধীন ভাই আশা করি ভালো আসেন, আল্লাহ্‌র রহমতে আমিও ভালো আছি। এক বছর ধরে ট্রিকবিডিতে কিছু লিখতে পাচ্ছি না। সাধীন ভাই প্লিজ শেষ বারের মত আমার টিউনার পদ টা ফিরিয়ে দিয়ে, আমার প্রাণ প্রিয় TrickBD.CoM সাইটিতে কিছু লিখতে দিয়ে সাহায্য করুন। please please please.. সাধীন ভাই আমার Author / টিউনার আইডি টা ফিরিয়ে দেন।।
  5. Sajeeb Contributor says:
    অসম্ভব সুন্দর হয়েছে পোস্ট টি। ধন্যবাদ
    1. Shadhin Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ 🙂
    1. Shadhin Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ 🙂
    2. Rahman bd Contributor says:
      সন্মানিত প্রিয় সাধীন ভাই আশা করি ভালো আসেন, আল্লাহ্‌র রহমতে আমিও ভালো আছি। এক বছর ধরে ট্রিকবিডিতে কিছু লিখতে পাচ্ছি না। সাধীন ভাই প্লিজ শেষ বারের মত আমার টিউনার পদ টা ফিরিয়ে দিয়ে, আমার প্রাণ প্রিয় TrickBD.CoM সাইটিতে কিছু লিখতে দিয়ে সাহায্য করুন। please please please.. সাধীন ভাই আমার Author / টিউনার আইডি টা ফিরিয়ে দেন।।
    1. Shadhin Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ 🙂
    2. Rahman bd Contributor says:
      সন্মানিত প্রিয় সাধীন ভাই আশা করি ভালো আসেন, আল্লাহ্‌র রহমতে আমিও ভালো আছি। এক বছর ধরে ট্রিকবিডিতে কিছু লিখতে পাচ্ছি না। সাধীন ভাই প্লিজ শেষ বারের মত আমার টিউনার পদ টা ফিরিয়ে দিয়ে, আমার প্রাণ প্রিয় TrickBD.CoM সাইটিতে কিছু লিখতে দিয়ে সাহায্য করুন। please please please.. সাধীন ভাই আমার Author / টিউনার আইডি টা ফিরিয়ে দেন।।
  6. Raihanrocks Contributor says:
    মাশআল্লাহ
  7. AP DON RANGBAZZ Contributor says:
    ইসলাম আল্লাহ তা’য়ালার মনোনীত ‘দ্বীন’ বা জীবন ব্যবস্থা। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করবে ইসলামে তার পথ নির্দেশ রয়েছে।

    এবং
    কোরআনে।

  8. AP DON RANGBAZZ Contributor says:
    অর্থাৎ- একদিন হুযুর আকদাস সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে নামায আদায় করতে দেখলেন যে, রুকূ পুরোপুরিভাবে করছে না এবং সিজদায় ঠোকর মারছে। হুযুর নির্দেশ দিলেন, পরিপূর্ণভাবে রুকূ কর এবং এ-ও ইরশাদ করলেন, এ ব্যক্তি যদি এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তবে মিল্লাতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য মিল্লাতে মৃত্যুবরণ করবে। তারপর ইরশাদ করলেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে রুকূ করেনা এবং সিজদায় ঠোকর মারে ঐ ভুখার মত যে এক দু’টি খেজুর খেয়ে নেয়, যা কোন কাজ দেয় না। (মু’জামুল কাবীর, ১৫৮)

    #আমরা যদিও নামাজ পড়ি।
    তাহলে উপরোক্ত ভুল টি আমাদের কম বেশ সবার হয়ে থাকে।
    আল-হামদুলিল্লাহ!
    আমার হয় না।
    যাদের হয় তারা এই হাদিস টি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
    আর আমল করুন।

    1. Shadhin Author Post Creator says:
      জ্বী 🙂 ধন্যবাদ 🙂
    2. AP DON RANGBAZZ Contributor says:
      Welcome
  9. Shaon Author says:
    জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে কি না জানি না। তাও বললাম, আপনার Facebook URL টা দিবেন?
  10. Rahman bd Contributor says:
    সন্মানিত প্রিয় রানা ভাই আশা করি ভালো আসেন, আল্লাহ্‌র রহমতে আমিও ভালো আছি। এক বছর ধরে ট্রিকবিডিতে কিছু লিখতে পাচ্ছি না। রানা ভাই প্লিজ শেষ বারের মত আমার টিউনার পদ টা ফিরিয়ে দিয়ে, আমার প্রাণ প্রিয় TrickBD.CoM সাইটিতে কিছু লিখতে দিয়ে সাহায্য করুন। please please please.. রানা ভাই আমার Author / টিউনার আইডি টা ফিরিয়ে দেন।।
  11. Monir Sarkar Pro Author says:
    স্বাধিন ভাইয়া?????দয়াকরে আমার পোস্ট গুলো রিভিউ করুন ?????
  12. Monir Sarkar Pro Author says:
    স্বাধিন ভাইয়া?????দয়াকরে আমার পোস্ট গুলো রিভিউ করুন ?????Pls pls pls plspls pls???
  13. Abdus Sobhan Author says:
    Review My Posts…

Leave a Reply