Assalamualikumসবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

আজকে আমরা আপনাদের মাঝে কোরআনে আলো এ পর্বে ১টি গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস নিয়ে আসলাম। এই হাদিসে মদীনার পথে পর্ব ২ জানতে পারবো।

মদীনার পথে পর্ব ২

ইবনু শিহাব বলেন, আব্দুর রহমান ইবনু মালিক মুদলেজী আমাকে বলেছেন, তিনি সুরাক্বাহ ইবনু মালিকের ভ্রাতুষ্পুত্র। তার পিতা তাকে বলেছেন, তিনি সুরাক্বাহ ইবনু জু‘শুমকে বলতে শুনেছেন যে, আমাদের নিকট কুরাইশী কাফিরদের দূত আসল এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও আবূবকর (রাঃ) এ দু’জনের যে কোন একজনকে যে হত্যা করবে অথবা বন্দী করতে পারবে তাকে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিল। আমি আমার কওম বনী মুদলিজের এক মজলিসে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তাদের নিকট হ’তে এক ব্যক্তি এসে আমাদের নিকটে দাঁড়াল। আমরা বসাই ছিলাম। সে বলল, হে সুরাক্বাহ! আমি এই মাত্র উপকূলের পথে কয়েকজন মানুষকে যেতে দেখলাম। আমার ধারণা, এরা মুহাম্মাদ (ছাঃ) ও তাঁর সহযাত্রীরা হবেন। সুরাক্বাহ বলেন, আমি বুঝতে পারলাম যে এঁরা তাঁরাই হবেন। কিন্তু তাকে বললাম, এঁরা তাঁরা নয়, বরং তুমি অমুক অমুককে দেখছ। এরা এই মাত্র আমাদের সম্মুখ দিয়ে চলে গেল।

তারপর আমি কিছুক্ষণ মজলিসে অবস্থান করে চলে এলাম এবং আমার দাসীকে আদেশ করলাম, তুমি আমার ঘোড়াটি বের করে নিয়ে যাও এবং অমুক টিলার আড়ালে ঘোড়াটি ধরে দাঁড়িয়ে থাক। আমি আমার বর্শা হাতে নিলাম এবং বাড়ির পিছন দিক দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। বর্শাটির এক প্রান্ত হাতে ধরে অপর প্রান্ত মাটি হেচড়ানো অবস্থায় আমি টেনে নিয়ে চলছিলাম ঐ অবস্থায় বর্শার মাটি হেচড়ানো অংশ দ্বারা মাটির উপর রেখাপাত করতে করতে আমার ঘোড়ার নিকট গিয়ে পৌঁছলাম এবং ঘোড়ায় আরোহণ করে তাকে খুব দ্রুত ছুটালাম। সে আমাকে নিয়ে ছুটে চলল। আমি প্রায় তাদের নিকট পৌঁছে গেলাম, এমন সময় আমার ঘোড়াটি হোঁচট খেয়ে আমাকে নিয়ে পড়ে গেল। আমিও তার পিঠ হ’তে ছিটকে পড়লাম। তারপর আমি উঠে দাঁড়ালাম এবং তুণের দিকে হাত বাড়ালাম। তা হ’তে তীরগুলি বের করলাম ও তীর নিক্ষেপের মাধ্যমে ভাগ্য পরীক্ষা করে নিলাম যে, আমি তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবো কি-না? তখন তীরগুলি দুর্ভাগ্যবশতঃ এমনভাবে বেরিয়ে এল যে, ভাগ্য নির্ধারণের বেলায় এমন হওয়া পসন্দ করি না। আমি আবার ভাগ্য পরীক্ষার ফলাফল অমান্য করে অশ্বারোহণ করে সম্মুখ পানে এগুতে লাগলাম। আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর এত নিকটবর্তী হয়ে গেলাম যে তাঁর তিলাওয়াতের আওয়ায শুনতে পাচ্ছিলাম। তিনি ফিরে তাকাচ্ছিলেন না। কিন্তুআবূবকর (রাঃ) বারবার তাকিয়ে দেখছিলেন। এমন সময় হঠাৎ আমার ঘোড়ার সামনের পা দু’টি হাঁটু পর্যন্ত মাটিতে গেড়ে গেল এবং আমি তার উপর হ’তে পড়ে গেলাম। তখন ঘোড়াটিকে ধমক দিলাম, সে দাঁড়াতে ইচ্ছা করল, কিন্তু পা দু’টি বের করতে পারছিল না। শেষে যখন ঘোড়াটি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে উঠল, তখন হঠাৎ তার সামনের পা দু’টি বের করতে পারছিল না। অবশেষে যখন ঘোড়াটি সোজা হয়ে উঠে দাঁড়াল, তখন তার সামনের পা দু’টি যেখানে গেড়ে ছিল সেখান হ’তে ধূঁয়ার মত ধূলি আকাশের দিকে উঠতে লাগল। তখন আমি তীর দিয়ে ভাগ্য পরীক্ষা করলাম। এবারও যা আমার অপসন্দনীয় তা-ই প্রকাশ পেল। তখন উচ্চৈঃস্বরে তাঁদের নিরাপত্তা চাইলাম। এতে তাঁরা থেমে গেলেন এবং আমি আমার ঘোড়ায় আরোহণ করে এলাম। আমি যখন এমন অবস্থায় বার বার বাধাপ্রাপ্ত ও বিপদে পড়ছিলাম তখনই আমার অন্তরে এ বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছিল যে,রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর এ মিশনটি অচিরেই প্রভাব বিস্তার করবে। তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনার কওম আপনাকে ধরে দিতে পারলে একশ’ উট পুরস্কার ঘোষণা করেছে। মক্কার কাফিররা তাঁর সম্পর্কে যে ইচ্ছা করেছে তা তাঁকে জানালাম এবং আমি তাঁদের জন্য কিছু খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী পেশ করলাম। তাঁরা তা হ’তে কিছুই নিলেন না। আর আমার কাছে এ কথা ছাড়া কিছুই চাইলেন না- ‘আমাদের খবরটি গোপন রেখ’। এরপর আমি আমাকে একটি নিরাপত্তা লিপি লিখে দেয়ার জন্য তাঁকে অনুরোধ করলাম। তখন তিনি আমির ইবনু ফুহাইরাহকে আদেশ দিলেন। তিনি এক টুকরো চামড়ায় তা লিখে দিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) রওয়ানা দিলেন।

ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, উরওয়াহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) আমাকে বলেছেন, পথিমধ্যে যুবায়েরের সাথে নবী করীম (ছাঃ)-এর সাক্ষাৎ হয়। তিনি মুসলমানদের একটি বণিক কাফেলার সাথে সিরিয়া হ’তে ফিরছিলেন। তখন যুবায়ের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও আবূবকর (রাঃ)-কে সাদা রঙের পোশাক দান করলেন। এদিকে মদীনায় মুসলিমগণ শুনলেন যে, নবী করীম (ছাঃ) মক্কাহ হ’তে মদীনার পথে রওয়ানা হয়েছেন। তাই তাঁরা প্রতিদিন সকালে মদীনার হাররা পর্যন্ত গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। দুপুরে রোদ প্রখর হ’লে তারা ঘরে ফিরে আসতেন। একদিন তারা পূর্বাপেক্ষা বেশী সময় প্রতীক্ষা করার পর নিজ নিজ গৃহে ফিরে গেলেন। এমন সময় এক ইহুদী একটি টিলায় আরোহণ করে এদিক-ওদিক কি যেন দেখছিল। তখন সে নবী করীম (ছাঃ) ও তাঁর সঙ্গী-সাথীদেরকে সাদা পোশাক পরা অবস্থায় মরীচিকাময় মরুভূমির উপর দিয়ে আগমন করতে দেখতে পেল।

ইহূদী তখন নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করে বলে উঠল, হে আরব সম্প্রদায়! এইতো সে ভাগ্যবান ব্যক্তি, যার জন্য তোমরা অপেক্ষা করছ। মুসলিমগণ তাড়াতাড়ি হাতিয়ার তুলে নিয়ে মদীনার হাররার উপকণ্ঠে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সঙ্গে মিলিত হ’লেন। তিনি সকলকে নিয়ে ডানদিকে গিয়ে বনু আমর ইবনু আউফ গোত্রে অবতরণ করলেন। এদিনটি ছিল রবীউল আউয়াল মাসের সোমবার। আবূবকর (রাঃ)দাঁড়িয়ে লোকদের সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। আর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নীরব রইলেন। আনছারদের মধ্য হ’তে যাঁরা এ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখেননি তাঁরা আবূবকর (রাঃ)-কে সালাম করতে লাগলেন। তারপর যখন রৌদ্রের উত্তাপ নবী করীম (ছাঃ)-এর উপর পড়তে লাগল এবং আবূবকর (রাঃ) অগ্রসর হয়ে তাঁর চাদর দিয়ে নবী করীম (ছাঃ)-এর উপর ছায়া করে দিলেন, তখন লোকেরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে চিনতে পারল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বনু আমর ইবনু আউফ গোত্রে দশদিনের চেয়ে কিছু বেশী সময় কাটালেন এবং সে মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন, যা তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এতে ছালাত আদায় করেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর উটনীতে আরোহণ করে রওয়ানা হ’লেন। লোকেরাও তাঁর সঙ্গে চলতে লাগলেন। মদীনার মসজিদে নববীর স্থানে পৌঁছে উটনীটি বসে পড়ল। সে সময় ঐ স্থানে কতিপয় মুসলিম ছালাত আদায় করতেন। এ জায়গাটি ছিল আস‘আদ ইবনু যুরারাহর আশ্রয়ে পালিত সাহল ও সুহায়েল নামক দু’জন ইয়াতীম বালকের খেজুর শুকাবার স্থান।রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে নিয়ে উটনীটি যখন এ স্থানে বসে পড়ল, তখন তিনি বললেন, ইনশাআল্লাহ এ স্থানটিই হবে আবাসস্থল। তারপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সেই বালক দু’টিকে ডেকে পাঠালেন এবং মসজিদ তৈরীর জন্য তাদের কাছে জায়গাটি মূল্যের বিনিময়ে বিক্রয়ের ব্যাপারে আলোচনা করলেন। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! বরং এটি আমরা আপনার জন্য বিনামূল্যে দিচ্ছি। কিন্তুরাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের নিকট হ’তে বিনামূল্যে গ্রহণে অসম্মতি জানালেন এবং অবশেষে স্থানটি তাদের হ’তে ক্রয় করে নিলেন। তারপর সে স্থানে তিনি মসজিদ তৈরী করলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)মসজিদ নির্মাণকালে ছাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে ইট বহন করছিলেন এবং ইট বহনের সময় তিনি আবৃত্তি করছিলেন,

هَذَا الْحِمَالُ لاَ حِمَالَ خَيْبَرْ * هَذَا أَبَرُّ رَبَّنَا وَأَطْهَرْ

এ বোঝা খায়বারের বোঝা বহন নয়।

হে আমাদের প্রভু! এর বোঝা অত্যন্ত পুণ্যময় ও অতি পবিত্র’। তিনি আরো বলছিলেন,

اللَّهُمَّ إِنَّ الأَجْرَ أَجْرُ الآخِرَهْ * فَارْحَمِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ

‘হে আল্লাহ! পরকালের প্রতিদানই প্রকৃত প্রতিদান।

সুতরাং আনছার ও মুহাজিরদের প্রতি অনুগ্রহ করুন’।

তিনি এক মুসলিম কবির কবিতা আবৃত্তি করেন, যার নাম আমাকে বলা হয়নি। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এছাড়া অপর কোন পূর্ণ কবিতা পাঠ করেছেন বলে, কোন কথা আমার কাছে পৌঁছেনি’ (বুখারী হা/৩৯০৫)।

পরিশেষে বলব, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট’ (তালাক্ব ৩)। আল্লাহর উপর নির্ভরতাই রাসূলকে কুরাইশদের শক্ত বাধার বিপক্ষে বিজয়ী করেছিল; হিজরতকালে পিছন থেকে ধেয়ে আসা সশস্ত্র শত্রু সুরাক্বাহ বিন মালেকের হাত থেকে রক্ষা করে নিরাপদে মদীনায় পৌঁছে দিয়েছিল। আমাদেরকেও তেমনি আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হ’তে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!

আশা করি সকলের ভালো লেগেছে। আর সবাই আমল করার চেষ্টা করবেন।

আমাদের ফেসবুক group এ জয়েন হতে পারেন এখানে প্রতিদিন ইসলামিক সম্পর্কে পোষ্ট করা হয় কোরআনের আলো

??পোষ্টি কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। এবং লাইক দিবেন ??

8 thoughts on "??[কোরআনের আলো পর্ব ১৩]এসো কোরআন ও হাদিসে আলোকে জীবনের পরিচালনা করি??"

    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      Thank You❤
  1. XR SABBIR KHAN Contributor says:
    Thanks r o post chai
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      ইনশাআল্লাহ
  2. lulovebd.tk Contributor says:
    এগিয়ে যাও
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      ইনশাআল্লাহ
  3. lulovebd.tk Contributor says:
    এগিয়ে যাও
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      ইনশাআল্লাহ

Leave a Reply