Site icon Trickbd.com

??[কোরআনের আলো পর্ব ১৬০]কোন শ্রেণীর ভিক্ষুক সদকা পাওয়ার অধিক উপযুক্ত সম্পর্কে জানতে পারবো ??

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে কোরআনে আলো এ পর্বে কোন শ্রেণীর ভিক্ষুক সদকা পাওয়ার অধিক উপযুক্ত জানতে চলে আসলাম ।

কোন শ্রেণীর ভিক্ষুক সদকা পাওয়ার অধিক উপযুক্ত

লেখক: শাইখ মোহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ

প্রশ্ন:

যদি আমাদের কেউ একাধিক এমন ভিক্ষুক পায় যারা শারীরিকভাবে অক্ষম তাহলে কাকে সদকা করাটা অধিক উপযুক্ত?

উত্তর:

আলহামদুলিল্লাহ।

এক:

অভাবীদেরকে সাহায্য করা, গরীব-মিসকীনকে দান করা উত্তম নেক আমল ও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্‌তাআলা বলেন: “যারা নিজেদের ধন-সম্পদ রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে তাদের প্রতিদান তাদের রব-এর নিকট রয়েছে। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।” [সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২৭৪]

যখন গরীবদের অভাব বেড়ে যায় তখন সদকা করাটা মুস্তাহাব হওয়া আরও তাগিদপূর্ণ হয়। যেহেতু অভাব দূর করা ও লজ্জাস্থানগুলো আবৃত রাখা সদকার বিধান জারী করার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “সর্বোত্তম আমল হচ্ছে— একজন মুমিনের মনে খুশি প্রবেশ করানো: আপনি তার লজ্জাস্থান আবৃত করলেন, তার ক্ষুধা দূর করলেন কিংবা তার কোন প্রয়োজন পূরণ করলেন।” [আল-মুজাম আত্‌-তাবারানী (৫/২০২), আলবানী ‘সহিহুত তারগীব’ গ্রন্থে (২০৯০) হাদিসটিকে হাসান বলেছেন]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন: “এ আট শ্রেণীর মাঝে কোন শ্রেণীর লোক যাকাত পাওয়ার অধিক উপযুক্ত?”

আমরা বলব: যে শ্রেণীর লোকদের প্রয়োজন তীব্র। কেননা এ শ্রেণীগুলোর প্রত্যেকে যাকাত খাওয়ার বৈশিষ্টধারী। এদের মধ্যে যে শ্রেণীর প্রয়োজন তীব্র সেই শ্রেণী যাকাত পাওয়ার অধিক উপযুক্ত। সাধারণতঃ গরীব ও মিসকীনদের প্রয়োজনই তীব্র হয়ে থাকে। তাই আল্লাহ্‌তাআলা প্রথমে তাদেরকে উল্লেখ করে বলেন: “সদকা তো শুধু ফকীর, মিসকীন ও সদকা আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য, যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহ্‌র পথে ও মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আর আল্লাহ্‌সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” [মাজমুউ ফাতাওয়া বিন উছাইমীন (১৮/প্রশ্ন নং ২৫১)]

“আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা” গ্রন্থে (২৩/৩০৩) এসেছে: “যাকাত দেওয়ার ফযিলতের দিক থেকে যাকাত পাওয়ার হকদারদের সকলে একই মর্যাদাভুক্ত নয়। বরং তাদের স্তরভেদ রয়েছে: মালেকী মাযহাবের আলেমগণ উল্লেখ করেছেন যে, যাকাত প্রদানকারীর জন্য মুস্তাহাব হচ্ছে নিরুপায় ব্যক্তিকে অন্য ব্যক্তিদের উপর প্রাধান্য দেওয়া। যেমন অন্য শ্রেণীর লোকদের চেয়ে তাকে বেশী দেওয়া।”

যদি ফকীর বা ভিক্ষুক কাজ করতে অক্ষম হয়, কোন রোগ বা মুসিবতের শিকার হয়ে সে পঙ্গু হয়ে যায় তাহলে তাকে যাকাত দেওয়াটা তাগিদপূর্ণ।

আল্লাহ্‌তাআলা বলেন: “(পূর্বোক্ত সদকা) ঐ সব ফকীর (দরিদ্র) লোকদের প্রাপ্য যারা আল্লাহ্‌র পথে এমনভাবে আবদ্ধ যে দেশময় ঘুরাফিরা করতে পারে না; তাদের আত্মসম্মানবোধের কারণে অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে অভাবমুক্ত মনে করে। আপনি লক্ষণ দেখে তাদেরকে চিনতে পারবেন। তারা মানুষের কাছে পীড়াপীড়ি করে হাত পাতে না। আর যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ্‌সে ব্যাপারে সম্যক অবগত।” [সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২৭৩]

সাঈদ বিন জুবাইর (রহঃ) বলেন: “তারা এমন শ্রেণীর লোক যারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় জিহাদরত অবস্থায় আহত হয়ে আজীবনের জন্য রোগা হয়ে পড়েছে। আল্লাহ্‌তাআলা মুসলমানদের সম্পদে তাদের অধিকার সাব্যস্ত করেছেন।” [আদ্‌-দুররুল মানছুর (২/৮৯)]

এ আলোচনার উদ্দেশ্য: সদকা বণ্টনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়ার মাপকাঠি হচ্ছে — প্রয়োজন ও অভাব। যদি আপনার কাছে প্রতীয়মান হয় যে, ভিক্ষুকদের মধ্যে কেউ একজন অন্যদের চেয়ে বেশী অভাবী তাহলে সেই ব্যক্তি সদকা পাওয়ার অধিক উপযুক্ত।

আপনি যে পরিমাণ অর্থ দান করতে চান সেটা যদি দুইজন ভিক্ষুকের প্রয়োজন পূরণ করার মত হয় তাহলে আপনি দুইজনের মাঝে ভাগ করে দিন। যদি কেবল একজনের প্রয়োজন পূরণ করার মত হয় তাহলে আপনি দুইজনের যে কোন একজনকে দিতে কোন অসুবিধা নাই এবং চেষ্টা করুন যেন অন্যজন থেকে লুকিয়ে তাকে দিতে পারেন; যাতে করে তার মনে আফসোস বা হিংসা না জাগে।

শাইখ বিন বায (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: কেউ যদি সামান্য পরিমাণ যাকাতের মাল ২০০ রিয়ালের মত বণ্টন করতে চায়; সে ক্ষেত্রে এটা কি একটা অভাবী পরিবারকে দেয়া ভাল; নাকি একাধিক অভাবী পরিবারকে দেয়া ভাল?

জবাবে তিনি বলেন: “যদি যাকাত সামান্য হয় তাহলে সেটা একটা অভাবী পরিবারকে দেয়াই উপযুক্ত ও উত্তম। যেহেতু অল্প মাল ভাগ করে দিলে এর উপকারিতা কমে যায়।” [ফাতাওয়া বিন বায (১৪/৩১৬)]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ। 

আমাদের ফেসবুক group এ জয়েন হতে পারেন এখানে প্রতিদিন ইসলামিক সম্পর্কে পোষ্ট করা হয় কোরআনের আলো

??পোষ্টি কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। এবং লাইক দিবেন ??