আসসালামুয়ালাইকুম
আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে। আমাদের মহানবী (সা.) যা বলে গেছেন, যা খেয়েছেন তিনি সেটাই হলো সর্বোকৃষ্ট ডায়েট। রাসুল (সা.) ছিলেন সবচেয়ে বড় ডায়াটেশিয়ান।
দুনিয়ার শিক্ষা তার ছিল না। তবে আল্লাহ প্রদত্ত শিক্ষায় শিক্ষিত তিনি। ডাক্তার যে খাদ্য তালিকা দিল আপনাকে, আমাদের প্রিয় নবী (সা.) তা দিয়েছেন অনেক আগেই। তার গোটা লাইফস্টাইল শিক্ষণীয়। মুসলমানের পক্ষে তাকে অনুসরণ ব্যতীত সফলতা পাওয়া অসম্ভব। সুস্থতার জন্য তার খাদ্য তালিকা অনুসরণ করতে হবে। কেবল ঈমান, আমল নয়;
রাসুল (সা.) সবক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ হওয়া উচিত। খাবার গ্রহণের ব্যাপারে আমরা তার অনুসরণ করি না কেন? আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী (মুহাম্মদ)! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভালোবাস, তবে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ভালোবাসবেন এবং যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিবেন; আর আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল, বড় করুনাময়।’ (সূরা আল ইমরান : ৩১)।
রাসুলের অনুসরণ মানে তার সবকিছু পালনে চেষ্টা করা। রাসুলের সুন্নত হলো, পেটের এক ভাগ খাবার, এক ভাগ পানি, এক ভাগ খালি থাকবে। আমরা সত্যিই কি এ সুন্নত পালন করি? ডাক্তরারা কম খেতে বলেন। নবী (সা.) যা অনেক আগেই বলে গেছেন। নিজে কম খেতেন। খাবার নেই। পেটে পাথর বেঁধে থেকেছেন। মেহমানদারী করেছেন। আর আমাদের পেট না ভরলে টেবিল থেকেই উঠি না। পেঠ ভরে খাওয়া রাসুল (সা.) এর পছন্দনীয় ছিল না।
বার্লি, খেজুর, ডুমুর, আঙ্গুর, মধু, তরমুজ, দুধ, মাশরুম, অলিভ ওয়েল, ডালিম বা বেদানা, লাউ, কিশমিশ, জলপাই, সামুদ্রিক মাছ, ভিনেগার ও পানি। এ খাবারগুলো রাসুল (সা.) এর প্রিয় ছিল। তিনি এসব খাবার আগ্রহভরে খেতেন। পছন্দনীয় বলে পেট ভরে খেতেন না। আমরা উল্টোটা করি। পছন্দের খাবার গলা অবধি খেয়ে থাকি!
খাবারটা যেমনই হোক, আমার তা পছন্দ হোক বা না হোক, আল্লাহ তায়ালার দান করা রিজিকের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন আমাদের ওপর ওয়াজিব।
রাতের খাবার সন্ধ্যার দিকে ডাক্তররা সেরে নিতে বলেন। আমাদের নবী করিম (সা.) এশার নামাজের পর শুয়ে পড়তেন। দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটার কথা চিকিসৎকরা বলেন। এ বিষয়েও নবী করিম (সা.) এর শিক্ষা রয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) বেশিরভাগ সময় হেঁটে হেঁটে দাওয়াতের কাজ করতেন।
দূরত্ব খুব বেশি হলে উট ব্যবহার করতেন। আমরা তো সামান্য দূরত্বে যানবাহন খোঁজ করি। শরীরিক পরিশ্রমকে নবীজি গুরুত্ব দিলেন। বিশ্বনবী হয়েও তিনি ঘরের কাজ করতেন।
হাদিসে এসেছে, তিনি ঘর পরিষ্কার, পশুপাখির খাবার দেওয়া, ছাগলের দুধ দোহন, ছেঁড়া কাপড় ও জুতা সেলাই, বাজার করা, আটা পেষা ইত্যাদি কাজ নিজে করতেন। স্ত্রীদের সাহায্য করতেন। এসব কাজে ক্যালরি লস হতো। চিকিৎসকরা মেদ কমাতে ক্যালরি লস করার কথা বলেন। প্রকৃতপক্ষে যদি আমরা নবীজির খাদ্যাভ্যাসকে অনুসরণ করি, তাহলে শরীর স্থূলকার হওয়ার সুযোগ নেই।
সবাইকে ধন্যবাদ।