Site icon Trickbd.com

জ্বিন জাতির সম্পর্কে বেশ কিছু বিস্ময়কর তথ্য জেনে নিন। না দেখলে মিস করবেন

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

জ্বিন জাতির সম্পর্কে বেশ কিছু বিস্ময়কর তথ্য জেনে নিন

রহস্য শব্দটির মধ্যেই থাকে এক ধরণের আগ্রহ। আর জ্বিন এরকম একটি রহস্যময় শব্দ। জ্বিন সম্পর্কে আমাদের কমবেশি সবারই আগ্রহ আছে। তবে এদের মধ্যে অনেকে আবার জ্বিন আর ভূতকে একসাথে করে ফেলে। কিন্তু বুঝতে হবে পবিত্র কুরআন এবং হাদিস উভয় জায়গায় জ্বিন সম্পর্কে কথা এসেছে ভূত সম্পর্কে নয়। ভূত কেবল লেখকের গল্প আর কল্পনায় সীমাবদ্ধ।

জ্বিন সম্পর্কে অনেক কিছুই আমরা জানি না! তারা কি খায়, কি ভাবে চলে, কোথায় থাকে কিংবা এদের ধর্ম প্রভৃতি সম্পর্কে আমাদের অনেকের অজানা। এই লেখায় জ্বিন নিয়ে এরকম কিছু কৌতূহল মেটানোর চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ।

জ্বিন জাতির সম্পর্কে তথ্য

জ্বিন নিয়ে ইসলাম পূর্ব আরবেও অনেক কথা আছে তবে আমি কেবল ইসলাম জ্বিন সম্পর্কে যা বলেছে তার কিছু অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আশা করি সকলেই মনোযোগ সহকারে লেখাটি পড়বেন।

জ্বিন সৃষ্টি ও প্রকারভেদ

জ্বিন শব্দের অর্থ ঢাকা বা আচ্ছন্ন করা। যেহেতু জ্বিন মানুষের চোখ থেকে অদৃশ্য থাকে তাই জ্বিন বলা হয়।

[১] আল্লাহ তায়লা জ্বিন জাতিকে আদম আঃ এর ২০০০ বছর আগে সৃষ্টি করেছেন এবং জ্বিনকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।

[২]মূলত জ্বিনরা পৃথিবীতে থাকতো আর ফেরেশতারা থাকতো আসমানে। আকারের দিক দিয়ে জ্বিন বিভিন্ন রকমের হয় কিন্তু শরীরের গঠন একে অপরের সাথে মিল থাকে। তাদের শরীর আগুনের তুলনায় ভারী এবং সেই সাথে তাদের শরীরের আগুনের অতিরিক্ত কিছু উপাদান রয়েছে।

অনেকের মতে জ্বিন ৩ প্রকার তবে এই মতটি বেশ দুর্বল। তবে সবচেয়ে বেশী মত হল:

রূপ পরিবর্তনকারী জ্বিন (সাপ, কুকুর, মানুষ ইত্যাদি রূপ নেয়)অদৃশ্য জ্বিন

ওবায়েদ বিন ওমাইর থেকে বর্ণিত, রাসূল সাঃ-কে মরুভূমির বহুরূপী ও বিভিন্ন আকৃতির জ্বিন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এরা হচ্ছে জিনের জাদুকর। [মাকায়েদুশ শয়তান ইবনু আবিদ দুনিয়া]

তবে জ্বিনদের আসল আকৃতিতে দেখা সম্ভব নয়। [৩]

জ্বিনের বাসস্থান

জ্বিনরা সাধারণত গোসলখানা, গরু, ছাগল, উট, গাধা, ঘোড়ার আস্তাবল, ডাস্টবিন ও ময়লা, নালা, নোংরা জায়গায় বাস করতে পছন্দ করে। এছাড়া পাহাড়, গর্ত, টয়লেট, কবরস্থান, ঘর-বাড়ি ও গাছপালা ইত্যাদি জায়গায় বাস করে। তাদের বাসস্থানের সুনির্দিষ্ট কোন ভূখণ্ড নেই। [৪]

জ্বিনের খাবার

সাধারণত মুসলমান জ্বিনেরা মুসলমানদের বাড়ির ছাদে থাকে। তাদের সাথে খাবার খায় এবং তারা মুসলমানদের দুষ্ট জ্বিনদের অনিষ্ট থেকে হেফাজত করে।[৫]

এছাড়া হাড় ও গোবর জ্বিনদের খাবার। এই কারণে রাসূল সা: এই গুলো দিয়ে ইস্তেন্জা করতে নিষেধ করেছেন। [৬]

জ্বিনদের বিয়ে-শাদী

জ্বিনদের মধ্যে বিয়ে শাদী হয়। [সূরা কাহাফ:৫০] বংশ বৃদ্ধির জন্য তারা বিবাহ করে থাকে। তাদেরও মানুষের মত সন্তান হয়। তবে তাদের বাচ্চা হওয়ার সংখ্যা মানুষের থেকে বেশী। যেখানে মানুষের হয় ১টি, জ্বিনদের হয় ৯টি। [৭]

জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে সম্ভব। মানুষের সাথে জ্বিনের মিলনের ফলে যে বাচ্চা হয় তাকে খুন্নাস বলে। [ফিকাতুল লুগাহ, আস-সাআলাবী] জ্বিন এবং মানুষের সাথে বিয়ের ব্যাপারে অধিকাংশ আলেম হারাম বলেছেন। হানাফি মাজহাবের অধিকাংশ আলেম এই বিয়েকে হারাম বলেছেন। ইমাম যুহরী রহ. বলেন রাসূল সাঃ জ্বিনদের সাথে বিবাহ করতে নিষেধ করেছেন। [৮]

জ্বিনদের ধর্ম

ইমাম রাযী বলেন, সকল উম্মত এ বিষয়ে একমত যে জ্বিনেরা শরীয়তের অনুসারী।[৯] আর আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ হল সকল মানুষ ও জ্বিনদের নবী। রাসূল সাঃ জ্বিনদের ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন এবং তারা কবুল করেছেন এ ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস এসেছে। এছাড়া অনেকের মতে মুমিন জ্বিনেরা বেহেশতেও যাবে। তবে জ্বিনদের মধ্যে অন্য ধর্মের অনুসারীও রয়েছে। এছাড়া তাদের মধ্যেও অনেক দল এবং উপদল রয়েছে।

জ্বিনদের মৃত্যু

জ্বিনদের যে মৃত্যু হয় এই ব্যাপারে সূরা আহকাফের ১৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে। জ্বিন মৃত্যুবরণ করে কিন্তু শয়তান মৃত্যুবরণ করে না। মানুষের রুহ কবজের জন্য এক ফেরেশতা আর জ্বিনদের রুহ কবজের জন্য আরেক ফেরেশতা নিয়জিত।

জ্বিনে ধরা এবং তাদের বিষয়ে কিছু তথ্য

প্রথমে বলে নেই অনেকের ধারণা জ্বিন মানুষের গোপন কথা বা ভবিষ্যৎ বলতে পারে। এটা ভুল ধারণা। গায়েব বা অদৃশ্য আল্লাহর সৃষ্টি। এর জ্ঞান আল্লাহ তায়ালা নিজের নিকট রেখেছেন। অনেকে এই ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে বিভিন্ন জ্বিনের সমর্থনপুষ্ট গণক, যাদুকর বা কবিরাজের নিকট যায় তার ভবিষ্যৎ জানতে। পরে বিভিন্ন শিরক, বিদআত ও কুফরি কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। অথচ জ্বিনের এরকম কোন ক্ষমতা নেই। যা কিনা আমারা পবিত্র কুরআনের মাধ্যমেই জানতে পারি।

যেমন সোলায়মান আ: যখন বায়তুল মুকাদ্দাস তৈরি শুরু করেন। তখন এই কাজে জ্বিন শ্রমিকদেরকেও কাজে লাগান। মসজিদের কাজ শুরু হলে তাঁর মৃত্যু উপস্থিত হয়। তিনি তখন লাঠিতে ভর দেয়া অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হল। মসজিদ নির্মাণ শেষে উইপোকা সে লাঠি খেয়ে ফেলল। তখন তিনি মাটিতে পরে গেল। তখন জ্বিনেরা বুঝতে পারল সোলায়মান আঃ ইন্তেকাল করেছেন। জ্বিনেরা যদি গায়েব জানতো তাহলে তো আরও আগেই জানতে পারতো। [১০]

জ্বিন ২ প্রকার:

মুসলমান কাফের

আবার মুসলমান জ্বিন ২ প্রকার:

ফাসেক নেককার

আর এর মধ্যে কাফের ও ফাসেক জ্বিন মানুষের ক্ষতি করে। এরা মানুষের উপর সওয়ার হয়। এটাকে অনেকে জ্বিনে ধরা বল। মানুষের শরীরের যেমন ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাস থাকতে পারে তেমনি জ্বিনও থাকতে পারে। জ্বিনদের আক্রমণ ২ প্রকার:

পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ (রোগী পুরোপুরি অস্বাভাবিক বা পাগল হয়ে যায়)আংশিক আক্রমণ (শরীরের কোন অঙ্গতে ব্যথা বেদনা হতে পারে)

জ্বিনে ধরা রোগীর চিকিৎসা মূলত কুরআনের মাধ্যমেই করতে হবে।

শেষ কথা

সংক্ষিপ্ত এই লেখায় জ্বিন সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরা সম্ভব নয়। যাদের জ্বিন নিয়ে অনেক বেশী আগ্রহ আছে তারা উলামায়ে কেরামের নিকট থেকে আরও বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। এবং এর ফলে ভুল জানা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

সূত্র:

১. আর রহমান: ১৫

২. সূরা হিজর:২৭

৩. সূরা আরাফ:২৭

৪. মুজ্বমাউয যাওয়াইদ, ১:২০২, সুনানে ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, কানযুল উম্মাল

৫. দুররুল মানসুর: ৩:৪৭

৬. আবু দাউদ: ১:৬

৭. ইবনে জারীর

৮.মাসায়েলে হারব বিন আল কিরমানী

৯.তাফসীরে কাবীর

১০. সূরা সাবা:১৪

দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।

সূত্র: Islamientertainment.Com

Exit mobile version