Site icon Trickbd.com

নামাযের মধ্যে দুনিয়ার চিন্তা ফিকির দূর করার ৬টি পদ্ধতি। না দেখলে দেখলে মিস করবেন

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

নামাযের মধ্যে দুনিয়ার চিন্তা ফিকির দূর করার ৬টি পদ্ধতি

নামাযের মধ্যে দুনিয়ার চিন্তা ফিকির দূর করার ৬টি পদ্ধতি
নামায ইসলামের দ্বিতীয় ফরয হুকুম। নামাযের মধ্যে একাগ্রতা তথা মনোযোগ রাখা অনেক জরুরি। কিন্তু সাধারণত আমাদের সবার একটা প্রধান সমস্যা হল নামাযের মধ্যে মনোযোগ ধরে রাখতে পারিনা।

সাধারণ সময়ে যেসব চিন্তা মাথায় আসেনা, নামাযের মধ্যে ঠিকই সেইসব চিন্তা ভাবনা চলে আসে। ফলে নামাযে মনোযোগ ধরে রাখাও কঠিন হয়ে যায়। যদিও বেশীরভাগ সময়ে আমাদের অন্তরে যে কল্পনা বা খেয়াল আসে এগুলো অনিচ্ছাকৃত।

তবে অনিচ্ছাকৃত ভাবে কল্পনা বা ভাবনার শুরু হলেও আমরা চাইলেই পুনরায় আবার নামাযে মনোযোগ দিতে পারি। অনেক আল্লাহ ওয়ালার মতে যারা নামাযে মন বসানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে তারা তাদের এই চেষ্টার জন্য প্রথম শ্রেণীর নামাযের সওয়াব পাবে।

তাই আমাদের উচিত নামাযের মধ্যে দুনিয়ার চিন্তা ফিকির দূর করে মনোযোগ সহকারে নামায আদায় করা। নিচে নামাযের মধ্যে যাতে মন মস্তিষ্ক এদিক ওদিক ঘোরাফেরা না করে সেটা নিয়ে আল্লাহ ওয়ালাদের দেয়া কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো।

১. দুনিয়ার চিন্তা ফিকির দূর

আল্লাহর কথা স্মরণ
নামাযের মধ্যে যে সব খেয়াল ও কল্পনা আসে, তা প্রতিরোধ করার একটি অন্যতম পদ্ধতি হল আল্লাহর কথা স্মরণ করা। নিয়ত বাধার পর এই কথা কল্পনা করা যে আল্লাহ আমাকে দেখছে এবং আমি এক আল্লাহর ইবাদাত করছি।

অন্যদিকে মন যাওয়া মাত্রই আল্লাহ আমাকে দেখছে এই কথা নিজের অন্তরে কল্পনা করুন।

২. অর্থ অনুধাবন করুন

নামাযের মধ্যে মনোযোগ ধরে রাখার অন্যতম উপায় হল, নামাযের মধ্যে কি পড়ছি তার অর্থ অনুধাবন করা। যেমন যখন আমরা আরবিতে সূরা পড়ি তখন তার পাশাপাশি তার অর্থ অনুধাবন করার চেষ্টা করা।

ইমাম সাহেব যখন কিরাত পড়ে তখনও এই পদ্ধতি অবলম্বন করা। নামাযের তিলাওয়াত, তসবিহ, জিকির সব আরবি ভাষায়। তাই এর অর্থ ও মর্মের প্রতি মনোযোগ দিলে, মন সবসময় এর মধ্যে আকৃষ্ট থাকবে।

আর এই জন্য প্রত্যেকের উচিত নামাযের মধ্যে আমরা যেসব সূরা বা দোয়া পড়ি তার অনুবাদ গুলো মুখস্থ করা।

৩. নামাযের প্রত্যেকটি রুকু নিয়ে চিন্তা করা

নামাযের মধ্যেই রুকু, সেজদা সহ অনেক গুলো নিয়ম পালন করতে হয়। আর নামাযের সময় যদি আমরা এসব নিয়ম কানুন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি তবে অন্যদিকে মন যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

নামাযের প্রতিটি রুকন ভেবে ভেবে আদায় করা জরুরি। নিয়ত বাধার পর এ কথা ভাবা যে এখন আমি কিয়াম করছি এবং এটা আল্লাহর জন্য করছি। রুকুতে যাওয়ার পরও একই কথা ভাবুন যে এখন আমি আল্লাহকে রুকু করছি। সিজদায় যাওয়ার সময়েও একই কথা ভাবতে হবে।

প্রতিটি রুকুনে যাওয়ার সময়ে আল্লাহকে সামনে রেখে করছি এই চিন্তা রাখা এবং সেই সময়ে পরা তসবিহ, দোয়া ও কিরাতের অর্থ অনুধাবন করা।

এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি রুকন ভেবে ভেবে আদায় করলে মন মস্তিষ্ক কোন কু খেয়াল ও বাজে কল্পনা আসবে না। নামাযে অবশ্যই মনোযোগ সৃষ্টি হবে এবং নামাযে নিমগ্নতা সৃষ্টি হবে ইনশা আল্লাহ।

৪. একাকী নামাযের তেলাওয়াত একটু আওয়াজ করে পড়া

আপনি যখন একা একা নামায পড়বেন তখন তেলাওয়াত, তসবিহ ও দোয়ার প্রতিটি শব্দ আওয়াজ করে পড়ুন যাতে করে তার শব্দ আপনার কানে আসে। তেলাওয়াত, তসবিহ ও দোয়ার শব্দের প্রতি মনোযোগ দিন, সেই শব্দ গুলোর দিকে খেয়াল রাখুন এবং সেগুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবুন।

সাধারণ মানুষের জন্য এই পদ্ধতি বেশ সহজ কেননা এর জন্য আরবি শব্দের অনুবাদ জানা জরুরি নয়।

তবে এই পদ্ধতি অবলম্বনের সময় খেয়াল রাখতে হবে পাশের মুসল্লি যেন নামাযে কোন ব্যাঘাত না ঘটে। কেননা এতে আপনার মনোযোগ আসলেও পাশের জনের মনোযোগ চলে যাবে। ফলে সওয়াবের বদলে গুনাহ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

৫. বায়তুল্লাহকে দেখছি এই চিন্তা করা

নামাযে মন বসানোর পঞ্চম পদ্ধতি হলো মনে মনে এ কল্পনা করা যে আমি আল্লাহর ঘর বায়তুল্লাহ দেখছি। বায়তুল্লাহ আমার চোখের সামনে। আমি বায়তুল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছি।

গোটা নামাযে বায়তুল্লাহর কথা কল্পনা করুন। এই কল্পনা আপনাকে দুনিয়াবি খারাপ কল্পনা থেকে দূরে রাখবে। আর নামাযেও মন বসবে। নামাযের মধ্যেও একাগ্রতা আসবে ইনশা আল্লাহ।

৬. নামায পড়ার পূর্বে কিছু সময় গভীর চিন্তা করা

নামায আদায় করার পূর্বে কিছু সময় আল্লাহর ধ্যান তথা গভীর চিন্তায় মগ্ন থাকা জরুরি। তবে সেই চিন্তা হতে হবে আল্লাহর চিন্তা। এসময় আল্লাহর জিকিরও করা যেতে পারে।

অনেক সময় আমরা মসজিদে জামায়াত শুরু হওয়ার পর মসজিদে যাই এবং নামাযে শরীক হই। বরং আমাদের উচিত জামাত শুরু হওয়ার পূর্বে মসজিদে অবস্থান করা এবং আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকা।

এর ফলে মনের মধ্যে যেমন একাগ্রতা তৈরি হবে তেমনি তাকবিরুল্লাহর সাথে নামাযও আদায় করার সাওয়াব পাওয়া যাবে।

শেষ কথা

উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি গুলো নিয়মিত অবলম্বন করার চেষ্টা করুন। তবে প্রত্যেকটি একসাথে করা জরুরি নয়। এমনও হতে পারে যেকোন একটি পদ্ধতি অবলম্বন করার দ্বারা নামাযে মনোযোগ চলে আসবে। নিয়মিত অনুশীলন করা জরুরি। প্রথমদিকে কাজ না করলেও আস্তে আস্তে কাজ করা শুরু করবে ইনশা আল্লাহ।

তবে নামাযে মনোযোগ বসানোর পাশাপাশি নামাযের নিয়ম কানুন এবং রুকন গুলো শুদ্ধ হওয়া জরুরি। কেননা নামাযে মনোযোগ থাকলো কিন্তু আমার নামায হলো ভুল পদ্ধতিতে এতে করে সওয়াবের বদলে হবে গুনাহ।

তাই নামাযের হুকুম আহকাম সম্পর্কে সঠিক ভাবে উলামায়ে কেরামগনের নিকট থেকে শিখে নেওয়া জরুরি।

দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।