প্রেম-ভালবাসার সাইকোলজি নিয়ে লেখাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। কারণ আজ কালকার ছেলে-মেয়েরা যেটাকে ভালোবাসা মনে করে সেটা কি আদৌ ভালবাসা?
বিষয়টা ব্যাখ্যা করি। যখন আপনি একজন বিপরীত লিংঙ্গের সাথে দীর্ঘদিন কথাবার্তা চালিয়ে যাবেন, একটা সম্পর্ক তৈরি হবে। এটা ন্যাচারাল। কথাবার্তা বন্ধ রাখলে কষ্ট লাগবে। কথা বলতে মন চাইবে। অনেকটা নেশার মত। কথা না বলে থাকা যাবেনা। খারাপ লাগবে। এই ফিলিংস আল্লাহ তায়ালাই সৃষ্টি করেছেন। স্বামী-স্থীর সম্পর্ক যেন সহজেই না ভেঙে যায় তাই এই ফিলিংসের সৃষ্টি। আমরা যেটাকে প্রেম বলছি এটা মূলত আল্লাহর একটি সৃষ্টি যা আল্লাহ স্বামী-স্থীর জন্য বরাদ্ধ রেখেছেন। যখন এই ফিলিংস বিয়ে ছাড়া ব্যবহার করা হয় তখন মূলত আল্লাহর এই সৃষ্টির অপব্যবহার করা হয়। ফলে বিয়ের আগে এইসব পুরোদমের কড়া অপরাধ। প্রেমিক-প্রমিকারা, স্বামী-স্থীর জন্য আল্লাহ যে ফিলিংস এর সৃষ্টি করেছেন তার মজার অংশটুকু লুফে নেয় কোন দায়িত্ব নেওয়া ছাড়াই। এটা প্রেম-ভালবাসা না বরং বলতে পারেন সুবিধাবাদ। বাবা-মায়েরা আমাদের ভালবাসেন। সেখানে শুধু ভালবাসা নয় দায়িত্ব ও আছে। দায়িত্ব নেওয়া ছাড়া প্রেম-ভালবাসার মানেই হলো ইনজয় করার সুবিধাবাদিতা।
বিয়ের পরের সম্পর্ক আর আগের সম্পর্কের মধ্যে অনেক বড় পার্থক্য। বিয়ের আগে প্রপোজালের মাধ্যমে যে সম্পর্ক তৈরি হয়, এইখানে কোন দায়িত্ব বোধ থাকেনা। পুরোটাই ফ্যান্টাসি। ইনজয়। জীবনের অনেক সময় নষ্ট।
কারণ চ্যাটিং, আর একে অপরকে ছবি পাঠানো, চুম্মা পাঠানো, আই লাভ ইউ বলা, গিফট পাঠানো, ডেটিং এইগুলো লাইফ না। এইগুলা খায়েশাত এর চাহিদা ছাড়া কিছুনা। এইগুলো শয়তানের বর্শি। দুইজন দুইজনকে কাছে পাওয়ার তীব্র কামনা তৈরি করে এইগুলো দিয়ে শয়তান মানুষকে যিনা পর্যন্ত নিয়ে যায়। এই কামনার কারণে ভাল কথাও মানুষের কানে ঢুকেনা। একটা ফ্যান্টাসির জগতে মানুষ ডুবে থাকে। অথচ বিয়ে ছিলো এই সকল ফ্যান্টাসি থেকে বাস্তব জগতে পা রাখার সঠিক সমাধান। কিন্তু শয়তান সেটা হতে দিবেনা। বাস্তবতা থেকে মানুষকে যত দূরে রাখা শয়তানের ততই লাভ।
বিয়ে হলে মানুষ সেক্সুয়াল লাইফের সাথে পরিচিত হয়। অর্থনৈতিক দায়িত্বের সম্মুখিন হয় ছেলেরা, আর মেয়েদের উপর মায়ের দায়িত্ব অর্পিত হয়। তখন চ্যাটিং আর চুম্মা পাঠানোর ফ্যান্টাসি প্রেম থাকেনা। রিয়েল সম্পর্ক তৈরি হয়। তখন আর সবসময় সেজেগুজে থাকা যায়না। প্রতিদিনের ইন্সট্রাগ্রামের ক্রাশ খাওয়া মেয়ের ঘুম থেকে উঠার চেহারা আর ভালো লাগেনা। দুইজন দুইজনের রিয়েল লাইফের সাথে, রিয়েল অভ্যাসের সাথে পরিচিত হয়। বাপের টাকা দিয়ে গার্লফ্রেন্ড চালানো যায়, বউকে না। তখন নিজেকে কামাতে হয়। দায়িত্ববোধ চলে আসে।
এই জন্য আজকালকার ছেলে-পেলেরা ইনজয় করে, বিয়ের ঝামেলা নিতে চায় না। আল্লাহ যে সিষ্টেম তৈরি করেছেন সেটা মানতে চায়না। আল্লাহ বলছেন, আমি তোমাকে আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করতেছি। তারা বলে, না আমি লাইফ ইনজয় করবো। আমার মরার টেনশন নাই। শুধু ইনজয় করবো। আল্লাহকে ভুলে থাকলেই হবে। তাহলে আর আখেরাতের টেনশন মাথায় আসবেনা। ইনজয় করতে সুবিধা হবে। আল্লাহ বিয়েকে হালাল করেছেন, ওইখানে দায়িত্ব আছে, ইনজয়ও আছে। কিন্তু এরা ইনজয়কে বেছে নিয়েছে।
বাস্তবতা হলো, আল্লাহর সামনে আদম সন্তানকে দাড়াতে হবেই হবে। সে কি চিন্তা করে এইসব কোন ব্যাপার না। এই প্রশ্নের সম্মুখীন আদম সন্তানকে হতে হবেই হবে, “তুমি তোমার যৌবন কীভাবে ব্যয় করেছো”?
আমিও প্রেম-পিরিতি কন্টিনিউ করতাম যদি জানতাম আমাকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। যদি জানতাম আমার যৌবন চিরস্থায়ী হবে। যদি জানতাম আমার মৃত্যু কখনো আসবেনা।