Site icon Trickbd.com

সহবাস নিয়ে আমাদের সমাজে ৪টি ভুল ধারণা। সবাই জেনে নিন

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

সহবাস নিয়ে ৪টি ভুল ধারণা

সহবাস নিয়ে ৪ টি ভুল ধারণা। যেগুলো মুসলিম বা অমুসলিম অনেকেই ভুল বুঝতে পারেন।

প্রথম ভুল ধারণা :

অনেকেই বলেন→ এক তরকারি দিয়ে প্রতিদিন খেতে ভালো লাগেনা। এ কথাটি আজকাল প্রায়শই শোনা যায়। আসলে এই মতবাত হলো কিছু মানুষরূপী কুলাঙ্গারের,যারা ইসলামের মর্মার্থ বুঝতে না পেরে এমনটা বলে থাকে।

এদের অনেক আবার পরনারী ভোগের লালসা থেকে এমনটা বলে থাকে। তাদেরকে অনুরোধ করছি দয়া করে মিথ্যাচার করবেন না। এমন কথা যুক্তি ভিত্তিহীন। এসব মতবাদে পরকীয়া বেড়ে যাচ্ছে। এবং আমাদের সমাজ ব্যবস্হাকে ধ্বংস করছে।

মাত্র কয়েক মিনিটের কাম যাতনা নিবারনের জন্য আপনার আজীবনের ভালোবাসার সম্পর্কে অবিশ্বাসের কালো দাগ লাগাবেন বলুন ? প্রশ্ন রইল আপনার কাছে ?

দ্বিতীয় ভুল ধারণা :

স্ত্রী হায়েজ নেফাজ বা পিরিয়ডের সময় অনেক ভাবেন যে কনডম পরে সহবাস করলে তো সমস্যা নেই। এটিও একটি ভুল মতবাদ। স্ত্রীদের পিরিয়ডের সময় তাদের যৌনিপথ খুব সেনসেটিভ থাকে। সে সময় সহবাস করলে সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে, ব্যথা হতে পারে।

অস্তিত্ব লাগতে পারে সর্বপরি প্রদাহ সৃষ্টির কারণে সেখানে জীবাণুর আক্রমণ হতে পারে এবং যা দীর্ঘ মেয়াদি আপনার স্ত্রীর অনেক ক্ষতি সম্মুখীন হতে পারে।

একটু ভেবে দেখবেন : আল্লাহ আমাদের এমন বিষয়ে নিষেধ করেছেন। যে সব বিষয় গুলো আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এবং আল্লাহ সকল আদেশ পালনে বান্দা সর্ব সময় উপকৃতই হয়।

মহান আল্লাহ বলেন → তারা তোমাকে হায়েজ সম্পর্কে প্রশ্ন করে, তুমি বলে দাও যে, এটা কষ্টদায়ক বস্তু,কাজেই তোমারা হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাক এবং ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের নিকট যাবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা পবিত্র না হয়।( সূরা আল বাকারাহ ২২২)

আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত আছে মহানবী (সাঃ) বলেছেন → আল্লাহর রাসূল ঋতুবতী নারীর সাথে সহবাস করতে নিষেধ করেছেন। ( ইবনে মাজাহ ৬৩৯)

তবে স্বামী যেন পরনারীর দিকে আবার আসক্ত না হন, সে কারনে বিশেষ ক্ষত্রে স্ত্রীর পিরিয়ড চলাকালীন বিকল্প পন্থায় যৌনতা লাভ করতে পারেন।

যেমন প্রথম পদ্ধতি :

স্ত্রী তার স্বামীর লিঙ্গকে হ্যান্ড জবের মধ্যেমে বীর্যপাত করিয়ে স্বামীকে যৌন আনন্দ দিতে পারেন। এই কাজ করার পূর্বে আগের মতোই স্বামী স্ত্রী একে অপরকে আলিঙ্গণ, চুম্বনের মাধ্যমে যৌন উত্তেজনা জাগিয়ে নিবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতি :

উত্তেজিত লিঙ্গ স্ত্রীর উরুতে ঘর্ষণের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটিয়ে স্বামী যৌন আনন্দ উপভোগ পারেন।তবে কোন ভাবেই স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করতে পারবেনা।

তিন নাম্বার ভুল ধারণা স্ত্রীকে শস্য ক্ষেত্র বলার মানে তার পায়ুপথে সঙ্গম করা যাবে :

এটি একটি ভুল ধারণা আমাদের সমাজে মানুষ অনেকেই ভাবেন যে, আমার স্ত্রী আমি যোনিপথে বা পায়ুপথে যেদিকে ইচ্ছে ব্যবহার করবো, যেটা একেবারে একটা মারাত্মক ভুল এবং পাপের অংশ।

কেননা রাসুল (সাঃ) বলেছেন → যে ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে নিতম্বে সহবাস করবে সে লা’নত প্রাপ্ত (আবু দাউদ ২১৬২, আহমদ ২/৪৪,৪৭৯)

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আরো বলেন → যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে পায়ুপথে সহবাস করবে আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। (নাসাঈ ২/৭৭,আল ইশ্রাহ ১/৭৮,তিরমিজি ১/২১৮)

আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আরো বলেন → আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে ও দেখবেন না, যে ব্যক্তি কোন পুরুষের মলদ্বারে বা স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করে। (তিরমিজি, ইবনে হিব্বান,নাসাঈ,সহিহুল জামে ৭৮০১)

এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কি স্ত্রীর যোনিপথে পিছন দিক থেকে সঙ্গম করা যাবে কিনা ?

তার উত্তর হলো অবশ্যই যাবে। তৎকালীন মদিনার ইহুদিদের মধ্যে একটা কুসংস্কার এই ছিল যে, কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে পিছন দিক থেকে যোনিপথে সঙ্গম করত তবে বিশ্বাস করা হতো যে এর ফলে ট্যারা চোখ বিশিষ্ট সন্তানের জন্ম হবে।

মদিনার আনসাররা ইসলামপূর্ব যুগে ইহুদিদের দ্বারা যথেষ্ট প্রভাবিত ছিল।ফলে আনসারগণও এই কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিলেন। মক্কাবাসিদের ভেতর এই কুসংস্কার ছিল না।

মক্কার মুহাজিররা হিজরত করে মদিনার আসার পর, জনৈক মুহাজির যখন আনসার স্ত্রীর সাথে পিছন দিক থেকে সঙ্গম করতে গেলেন, তখন এক বিপত্তি দেখা দিল।

আনসার স্ত্রীর এই পদ্ধতি ভুল মনে করে জানিয়ে দিলেন যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর অনুমতি ব্যতিত এই কাজ তিনি কিছুতেই করবেন না। ফলে ঘটনাটি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কাছে পৌঁছে গেল। এ প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াত ও নাজিল হয় যেখানে বুঝানো হয়েছে সামনে বা পিছনে যে দিক দিয়েই যোনিপথে গমন করা হোক না কেন, তাতে কোন সমস্যা নেই।

শস্য ক্ষেতে যেদিক দিয়ে বা যেভাবে গমন করা হোক না কেন তাতে শস্য উৎপাদনে যেমন কোন সমস্যা হয়না। তেমনি স্বামী তার স্ত্রীর যোনিপথে যে দিক দিয়েই গমন করুক না কেন তাতে সন্তান উৎপাদনে কোন সমস্যা হয়না এবং এর সাথে ট্যারা চোখ বিশিষ্ট সন্তান জন্ম হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই।

৪র্থ ভুল ধারণা গুলো হলো সহবাসের পদ্ধতি নিয়ে :

সহবাসের স্বাভাবিক পন্থা হলো এই যে, স্বামী উপরে থাকবে আর স্ত্রী নিচে থাকবে। প্রত্যেক প্রাণীর ক্ষেত্রেও এই স্বাভাবিক পন্থা পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি অন্য পজিশনে সহবাস করতে পারবে না।

কারণ আল্লাহ তায়ালা বলেন → তোমাদের স্ত্রী হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত , তাই তোমাদের শস্য ক্ষেতে যাও, যেভাবে তোমার চাও। (সূরা আল বাক্বারাহ ২২৩)

আবার দেখা যায় এই আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা অনেক ইসলাম বিদ্বেষীরা করে থাকেন। বিশেষ করে আজকাল একদল নাস্তিক এবং নারীবাদীরা সূরা আল বাক্বারাহ’র এই আয়াতটি ব্যবহার করে ইসলামকে নারীদের জন্য একটি বর্বর, নিষ্ঠুর,পুরুষতান্ত্রিক ধর্ম বলে অপপ্রচার চালায়।

আসুন দেখি আসলে এর বাস্তবতা কি জেনে নেই। আমার যদি স্ত্রীকে জমি এবং স্বামীকে কৃষকের সাথে তুলনা করে দেখি,তাহলে দেখবো এই উপমাটা কত সুন্দর : একজন কৃষকের যাবতীয় চিন্তা এবং মনোযোগ হচ্ছে তার জমিকে ঘিরে। সে সারাদিন চিন্তা করে তার জমির জন্য কি করতে হবে। যে সে সঠিক মতো ফসল পেতে পারে।

সে প্রতিদিন যত্ন করে জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করে। জমি শুকিয়ে গেলে পানি দেয়। জমিতে যেন পুষ্টির অভাব না হয়। সে জন্য জমিতে ঠিক মতো সার দেয়।তার সঞ্চয়ের বড় একটা অংশ চলে যায় জমির পিছনে। তারপর যখন সময় হয়, তখন সে জমিতে বীজ বুনে দেয়।

তারপর থেকে শুরু হয় জমির আর বেশি যত্ন। জমিতে যেন পুষ্টির অভাব না হয়, পানির অভাব না হয, আগাছা না জন্মে, দুষ্ট কেউ এসে জমির ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য তার ব্যস্তাতার সীমা থাকে না।

প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে তার প্রথম চিন্তা হচ্ছে জমি কেমন আছে…? সারাদিন জমিতে কাজ করে বাসায় আসার পরেও মন পরে থেকে জমিতে। শেষ পর্যন্ত জমি থেকে যখন চারা বেড় হওয়া শুরু হয়। তখন তার খুশি কে দেখে। চারাগুলো বড় না হওয়া পর্যন্ত সেই জমির জন্য তার কত যত্ন। কত ছুটাছুটি।

আর যখন ফসল কেটে ঘরে তুলার দিন আসে, সে দিনের খুশি, আনন্দ, সাফল্যের অনূভুতি যে কত তীব্র, তা শুধু একজন কৃষকই জনে।

তেমনি একজন স্বামীর চিন্তা এবং পরিকল্পনার বড় অংশ হচ্ছে তার স্ত্রীকে নিয়ে। স্ত্রীর জেনে খাওয়া পরার অভাব না হয়,সে জন্য সে সারাদিন পরিশ্রম করে, স্ত্রীর অসুস্থ হলে ছুটাছুটি করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। যত খরচ লাগুক না কে চিকিৎসা করায়। তার সঞ্চয়ের বড় একটা অংশ চলে যায় স্ত্রীর পিছনে। সুন্দর ভবিষ্যতের আসার সে স্ত্রীর কাছে বীজ বুনে দেয়।

তারপর স্ত্রী যখন সন্তান সম্ভবা হয়। তখন শুরু হয় আর বেশি যত্ন।ঠিক মতো খাচ্ছে তো? ঠিক মতো ঘুমাচ্ছে তো? বাচ্চা ঠিক মতো পুষ্টি পাচ্ছে তো? সারাদিন অফিসে কাজ করলেও কিছুক্ষণ পরপর ফোন করে খোঁজ নেয় স্ত্রী ঠিক আছে কিনা।

তারপর যখন সন্তান জন্ম হওয়ার দিন ঘনিয়ে আসে তখন তার খুশি কে দেখে। কত ছুটাছুটি, কত পরিকল্পনা,র্ফানিচার সরানো , ঘর গোছানো। শেষ পর্যন্ত যে দিন বাচ্চার ডেলিভারি হয়, সে দিনের খুশি, আনন্দ, সাফল্যের অনূভুতি যে কত তীব্র, তা শুধু একজন স্বামীই জানে।

স্ত্রীদের শস্য ক্ষেতের সাথে তুলনা করে আল্লাহ তায়ালা যথার্থই উপমা দিয়েছেন। এর সাথে সুন্দর উপমা আর কিছুতেই হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বুঝার তৌফিক দান করুক আমিন

প্রিয় ভাই ও বোনেরা লাইক কমেন্ট শেয়ার করে ইসলামি দাওয়াতে আপনিও অংশগ্রহণ করুন।প্রিয় বন্ধুরা জানার স্বার্থে দাওয়াতি কাজের স্বার্থে আর্টিকেলটি অবশ্যই শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন।হতে পারে আপনার একটি শেয়ার বহু মানুষ উপকৃত হবে ইনশাআল্লাহ।