আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ !!!
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম । ?
সুপ্রিয় পাঠক , আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন । আমি রিফাত ।
বিশ্বাস করেন আর নাই করেন , দুনিয়ার সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ কে জানেন ??
যে ব্যক্তি আল্লাহর খুব নিকটবর্তী । অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারেন , ইসলামের যাবতীয় বিষয় মেনে চলতে পারেন , জীবনটাকে সুন্দরতম ফুলের ন্যায় গড়ে তুলেছেন । ফুল কিন্তু নিজের জন্য ফোটে না কখনো । কিন্তু তবুও কত সুবাস ! কত সুন্দর দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায় ! মন ভরে যায় । এমন করে নিজেকে গড়ে তুলতে পারলে আপনার জীবন সার্থক । এবং আপনি মহা ভাগ্যবান । আল্লাহ তাআলার কাছে প্রিয় বান্দা ! এর থেকে সৌভাগ্যের আর কি হতে পারে বলেন ??
✓ একটি মানুষ কখনও সবার কাছে ভালো হতে পারে না । আপনি যদি ভালো মানুষ হন তাহলে খারাপ মানুষের কাছে আপনি খারাপ । আর যদি খারাপ মানুষ হন তাহলে আপনি ভালো মানুষের কাছে খারাপ ।
–#রিফাত
আল্লাহর হেদায়েত পাওয়াও অনেক ভাগ্যের ব্যাপার । হেদায়েত কোথায় দিবেন ? – আপনার মনে । হেদায়েত প্রাপ্ত হওয়ার মানে খারাপ পথ থেকে সরে ভালো পথে দাঁড়ানো । জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাতের গন্তব্যে পথ চলা ।
আসুন এই হেদায়েত নিয়েই একটি গল্প শুনি ।
একটি শহরে ছিল এক ধনী লোকের পরিবার। সে সংসারে ছিল মা-বাবা আর ছিল দুইটি ছেলে । বড় ছেলেটির নাম মোঃ মিনহায হোসেন আর ছোট ছেলেটির নাম মোঃ আলহায হুসেইন । তাদের পরিবারটাই ছিল খুব যমযমাট । সব সময় আনন্দ-অনুষ্ঠান-পার্টি- গান বাজনা নিয়ে সবাই লেগেই থাকতো । আর ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকত।
কিন্তু ছোট ছেলেটির এইসব কখনোই পছন্দ হত না। ছোট থেকেই সে ছিল নিরব এবং স্কুলে যেতে বেশী একটা পছন্দ করত না। মাদরাসা-মসজিদে যেতে পছন্দ করত । সব সময় পায়জামা পাঞ্জারি টুপি পরতে ভালোবাসতো। মসজিদে নামায পড়তে আরো বেশী ভালোবাসতো ।
তাই তার মা-বাবা তার এই মাদ্রাসার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে তাকে নিয়ে মাদরাসায় ভর্তি করল। ধীরে ধীরে ছেলেটি মাদরাসায় পড়াশুনা করতে শুরু করল । কিন্তু তার মা ছোট ছেলেটির প্রতি বেশী একটা খেয়াল নিতেন না। তার বড় ছেলের প্রতি ছিল খুব খেয়াল। বড় ছেলের স্কুল কোচিং প্রাইভেট টিফিন নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতেন। ছোট ছেলের আসা-যাওয়া; খানা-পিনা নিয়ে বাড়ির দারওয়ান মাদরাসায় যাতায়াত করত। ছোট ছেলেটি এক সময় বুঝতে পারল, আমার পরিবারের প্রত্যেকেই দুনিয়া নিয়ে খুবই ব্যস্ত হয়ে গেছেন। এক সময় যে, মরতে হবে, আল্লাহ্ পাকের কাছে যেতে হবে, হিসাব দিতে হবে, তা নিয়ে সে খুব ভাবত আর কাঁদত। সে তার পরিবারের সবার জন্য আল্লাহর কাছে হেদায়াতের দোয়া করত।
হঠাৎ একদিন ছেলেটির নানা মারা গেল, ছেলেটির নানার খুব আদরের মেয়ে ছিল ছেলেটির মা। যখন মৃত্যুর সংবাদ আসল পরিবারের প্রত্যেকেই সেখানে চলে গেলো। মা‘র অনেক কান্না-কাটি দেখে ছোট ছেলেটি বলল- মা কেঁদোনা। আমাদের একদিন সবাইকে এইভাবেই চলে যেতে হবে। নানার সব বাড়ি-গাড়ি; অর্থ-সম্পদ সবইতো রেখে গিয়েছেন, কিছুই তো নিয়ে যাননি। সাথে গেছে তার শুধুই আমল। নানার জন্য যদি এতোই তোমার খারাপ লাগে তাহলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পরে নানার জন্য দোয়া করো, সেটাই নানা পাবেন। মা চোখ ভরা জল নিয়ে ছেলের দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে দেখলেন, যেন এভাবে ছেলের দিকে আর কখনো দেখেন নি। শুধু তাই না বাবার( তার মায়ের বাবা , মানে নানা) সাথে এতো বড় বড় নেতা, এমপি, জজ, মেজিস্ট্রেট, ডাক্তার আরো অনেক শিক্ষিত লোকরাও কোন কাজে আসে নাই। বাবার মৃত্যুও পর লাশের সামনে সূরা-ক্বেরাত পড়তে হয় কুরআন তেলাওয়াত করতে হয়। দাফন ও কাফনের ব্যবস্থা করতে হয়। জানাযা তো আছেই।
মূহুর্তের ছেলেটির মায়ের হৃদয়ের পর্দা সরে গেল। যে গন্তব্যে সকলকে যেতে হবে, যে ঠিকানায় হলো মানুষের আসল ঠিকানা, সেই ঠিকানায় যাওয়ার সকল সাজ সজ্জা সাজিয়ে দিয়েছে তো তার সেই ছোট ছেলেটিই। কিন্তু বড় ছেলেটির তো এ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র এলেম নেই। শুধু বড় ছেলেকে দোষ দিয়েই বা কি হবে? পরিবারের আর কারো তো সে এলেম নেই।
মনে মনে ছেলেটির মা ভাবলো- শুনেছি মৃত্যুর সময়ই সবচেয়ে বড় কষ্টকর।
তিনি প্রতিদিন নানার কবরে ছোট ছেলেকেই যেতে দেখেন। কবর জিয়ারত করতে দেখেন। মা বলতেন বাবা কোথায় গিয়েছিলে, ছেলে বলতো মা নানার কবরে গিয়েছিলাম নানার জন্য দোয়া করতে। যাতে নানা আযাব থেকে মুক্ত থাকে।
মা খুব খুশি হলেন আর মনে মনে বললেন- ” না আমার ছেলে ভুল করেনি, আমার ছেলেই সঠিক পথ বেছে নিয়েছে, যা দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি আনবে। তারপর মাও নামায পড়তে লাগলো, এবং তার পরিবারকেও দ্বীনের জন্য তাড়না দিতে লাগলো। ছোট ছেলে খুব খুশি হলো মায়ের এমন পরিবর্তন দেখে। ”
গল্পটি পড়ে আমরা যা কিছু শিখেছি তার অর্থ অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ।
” হে আল্লাহ ! আপনি আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন । ”
আপনার হেদায়েত ছাড়া কিছুই সম্ভব নয় ।
” লা হাওলা ওলা ক্কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ !! ”
আমিন !!