Site icon Trickbd.com

যে ব্যক্তি কোনো দিনও জান্নাতে যাবে না। বেশি ভাগ লোকের এ অভ্যাস রয়েছে। সবার জানা উচিত।

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

যে ব্যক্তি কোনো দিনও জান্নাতে যাবে না।

দাইয়ুস শব্দটা শুনলেই যেন কোনো অযোগ্য বর্বর অকর্মা নপুংসক ব্যক্তির একটা চিত্র ভেসে উঠে মনের মনি কোঠায়। জ্বি হ্যাঁ !!! আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো দাইয়ুস সম্পর্কে, যে তাঁর অযোগ্যতা বর্বরতা এবং অকর্মন্যতার দরুন কোনোদিনও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

দাইউস কোনদিন জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। রাসূল (সাঃ) বলেন → ৩ ব্যাক্তির জন্য আল্লাহ তায়ালা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। (১)নেশাকারী ব্যাক্তি, যে নেশাদ্রব্য গ্রহন করে। (২) যে পিতামাতার অবাধ্য ব্যাক্তি (৩) দাইয়ুস (মুসনাদে আহমাদ ৬১৮০,নাসাঈর কুবরা ২৩৪৩,হাকেম ২৫৬২,সহীহুল জামে ৩০৭১)

এবার আসুন আপনাদের দাইয়ুস ব্যাক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেই।দাইয়ুস শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো : অসতী, বেহায়া,বেশরম,নির্লজ্জ,বিবেকহীন এবং আত্নমর্যাদাহীণ ব্যাক্তি ইত্যাদি। দাইয়ুসের পারিভাষিক অর্থ হলো : যে ব্যাক্তি তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যিনা ব্যাভিচার ও অশ্লীল কাজ কর্ম সে ভালো মনে করে গ্রহন করে অথবা প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে।

রাসূল (সাঃ) বলছেন → দাইয়ুস এমন বেহায়া, যে তার পরিবারের অশ্লীলতাকে মেনে নেয়। ( মুসনাদে আহমাদ ৬১১৩)

অন্য বর্ণনায় এসেছে : দাইয়ুস এমন বেহায়া, যে তার পরিবারের অশ্লীলতা ও খারাপ কর্মসমূহ মেনে নেয়। (আহমাদ ৫৩৭২)

আরেকটি বর্ণনায় এসেছে : দাইয়ুস অর্থাৎ বেহায়া হলে সে ব্যাক্তি যে, তার পরিবারের নিকট অশ্লীলতা প্রবেশ করতে দেখলে কিন্তু সে এ ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপ করেনা। (বায়হাক্বী শু’ আবুল ঈমান হাদিস নাম্বার ১০৮০০)

অর্থাৎ বিশদভাবে বলতে গেলে দাইয়ুস ঐ ব্যক্তি, যে তার পরিবারে পর্দা প্রথা চালু রাখেনি। পরিবারের সদস্যদের মাঝে বেপর্দা ছিলো, বেহায়াপনা ছিল কিন্তু সে তাতে বাধা প্রদান করেনি।

পরিবারের কর্তা হিসেবে বেপর্দা বেহায়াপনা বন্ধ না করার জন্য, এই জন্য সে শাস্তি পাবে। আপনি যত৷ বড় ইবাদতকারীই হোন না কেন, মক্কার মাটিতে যতবারই হজ পালনে ঘুরে আসুন না কেন, পাঞ্জাবী আপনার যতই সুন্নতি শক্তিশালী এবং সুন্দর হোক না কেন পরিবারে যদি পর্দা না থাকে রাসূল ( সাঃ) এর হাদিস অনুযায়ী আপনি অবশ্যই জাহান্নামী। জান্নাত এই শ্রেণীর মানুষের জন্য হারাম ( মুসনাদে আহমাদ ২/৬৯)

দাইয়ুস সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহ ইঙ্গিত দিয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন → তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্নরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর ( সূরা আত তাহরীম ৬)

বুখারী মুসলিম বর্নিত হয়েছে : রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন → তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।

রাষ্ট্রনেতা তার প্রজাদের সম্পর্কে দায়িত্বশীল আর তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞেসাবাদ করা হবে। একজন পুরুষ ব্যক্তি তার পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞেসাবাদ করা হবে। একজন মহিলা তার স্বামীর ঘরের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকে সেটার পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞেসাবাদ করা হবে। একজন পরিচারক তার মালিকের সম্পদের সংরক্ষক, আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞেসাবাদ করা হবে।

এক কথায় তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞেসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে। ( বুখারী ৭১৩৮;মুসলিম ১৭০৫)

আজকের এই হাদিস গুলো থেকে শিক্ষানীয় বিষয় হলো :

১. জাহান্নাম থেকে আত্নরক্ষার্থে নিজেদেরকে সংস্থার ও সংশোধন করতে হবে।

২.পরিবার পরিজনের লোকদেরকেও জাহানারা থেকে রক্ষার্থে সংস্থার ও সংশোধন করতে হবে।

৩. মুমিনদের মধ্যে যেনা ব্যভিচার অশ্লীলতার প্রচার প্রসার করা হারাম।

৪. দাইয়ুস, আত্নমর্যাদাহীণ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

৫. তিন ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তাকাবেন না ( সূরা আলে ইমরান ৭৮)

৬.তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে পৃথিবীর প্রায় অনেক নারী পুরুষ দাইয়ুস (বেহায়া,আত্নমর্যাদাহীণ) এর অন্তর্ভুক্ত।

তাই আমাদের ব্যক্তি, পরিবার ও সামাজিক জীবনে দাইয়ুস ( বেহায়া,আত্নমর্যাদাহীণ) এর ভয়াবহ পরিনত থেকে আত্নরক্ষার্থে সংস্থার ও সংশোধন মূলক আমল করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাওফিক দান করুন আমিন।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা লাইক কমেন্ট শেয়ার করে ইসলামি দাওয়াতে আপনিও অংশগ্রহণ করুন।প্রিয় বন্ধুরা জানার স্বার্থে দাওয়াতি কাজের স্বার্থে আর্টিকেলটি অবশ্যই শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন।হতে পারে আপনার একটি শেয়ার বহু মানুষ উপকৃত হবে ইনশাআল্লাহ।