আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। এ পৃথিবীতে আমরা সারা জীবনের জন্য আসি নাই। এক সময় না এক সময় সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। এমনকি আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে সঠিক একমাত্র মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই ভাল জানেন কবে কিয়ামত সংঘটিত হবে?
তবে কুরআন এবং হাদিসে কেয়ামত হওয়ার আগে বেশ কিছু আলামত রয়েছে।এ আলামত গুলো প্রকাশ হলেই কেয়ামত সংঘটিত হবে ইনশাল্লাহ।নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন সাহাবীদের সাথে। যেটা আমরা হাদিস থেকে স্পষ্ট জানতে পারি।
আজকে আমরা এই আর্টিকেলটিতে কেয়ামত হওয়ার আগে কি কি আলামত দেখা যাবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।তাই শুরুতেই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।
কিয়ামত অর্থাৎ পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগে কি কি আলামত দেখা যাবে?
১ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম এবং মৃত্যু। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আমি এবং কিয়ামত একসাথেই অবতীর্ণ হয়েছে। আমি সবাই জানি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ আল্লাহর পাঠানো নবী এবং রাসূল। তারপরে আর কোন নবী রাসুল দুনিয়াতে আসবে না।আমরা সবাই জানি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়াতে প্রায় হাজার বছর আগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এবং তিনি 63 বছর পর্যন্ত পৃথিবীতে বেঁচে ছিলেন। তারপর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এখান থেকে আমরা স্পষ্ট ধারণা পায় কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত প্রকাশ পেয়েছে।
২ বায়তুল মাকদিস (ফিলিস্তীন) বিজয়।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ কিয়ামতের পূর্বে ছয়টি বস্ত্ত গণনা করো। তার মধ্যে বায়তুল মাকদিস বিজয় অন্যতম। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)এর শাসনামলে হিজরী ১৬ সালে বায়তুল মাকদিছ বিজয়ের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর ভবিষ্যৎ বাণী বাস্তবায়িত হয়েছে।এ হাদীসটি আপনারা পাবেন- বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল জিযইয়্যাহ।
তাহলে আমরা কিয়ামতের দুটি আলামত প্রকাশিত পেয়ে গেলাম। তাহলে আমরা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি, নিশ্চয়ই কিয়ামত খুব নিকটবর্তী। তবে কেয়ামত কবে সংঘটিত হবে একমাত্র মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সবচেয়ে ভালো জানেন।
৩ কিয়ামতের পূর্বে অনেক ফিতনার আবির্ভাব হবে। ফিতনা শব্দটি বিপদাপদ, বিশৃংখলা, পরীক্ষা করা ইত্যাদি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ এই উম্মতের প্রথম যুগের মুমিনদেরকে ফিতনা থেকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। আখেরী যামানায় এই উম্মতকে বিভিন্ন ধরণের ফিতনায় ও বিপদে ফেলে পরীক্ষা করা হবে।প্রবৃত্তির অনুসরণ ফির্কাবন্দী এবং দলাদলির কারণে ফিতনার সূচনা হবে। এতে সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে যাবে এবং ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হবে। বর্তমানের শাইখ ইমাম এবং স্কলাররা এই জামানার সাথে অনেক মিল পাচ্ছে এই আলামত টি।
৪ মানুষের ধন সম্পদ বৃদ্ধি পাবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। কেয়ামতের আগে ধন সম্পদ বৃদ্ধি পাবে। এমনকি ভিক্ষা করার জন্য কোন লোক খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে। হাদিস থেকে জানা যায় ধন সম্পদ বৃদ্ধি পাবে আলামত প্রকাশ পেয়েছে কোন এক সাহাবীর যামানায়।সঠিকভাবে সাহাবীর নামটি আমার মনে আসছে না। তবে প্রকাশ পেয়েছে এই আলামত টি এটাই স্পষ্ট। এমনকি এই আলামতই আবারো প্রকাশ পাবে। সেটা খলীফাতুল্লাহ আল মাহাদী আলাই সালাম এর আসার আগে। খলীফাতুল্লাহ আল মাহাদী আলাই সালাম পৃথিবীতে সাত বছর অথবা 9 বছর রাজত্ব করবেন।
৪ চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়া। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়েছেন চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়েছে এবং কিয়ামত নিকটবর্তী হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ কুরআন থেকে সংগৃহীত কথা। এমনকি চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার আলামত টি প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে।এ আলামতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে প্রকাশ পেয়েছিল।হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগের লোকেরা যখন তাকে নবুওয়াতের প্রমাণ চাইল, তখন তিনি চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করে দেখিয়েছিলেন। এটা সম্পূর্ণ সহি হাদিস। আপনারা হাদিস গুলো পড়লে খুব সহজেই এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন।
উপরে আমি যে আলামতগুলোর কথা বলেছি সেই আলামত গুলো ছিল ছোট ছোট আলামত। এই আলামত সহ আরো অনেক আলামত রয়েছে কেয়ামত হওয়ার আগে । উপরের আলামত গুলো ছিল আলামতের ছোট আলামত।তবে কিয়ামতের পূর্বে আরো বড় বড় আলামত প্রকাশ পাবে।
এমনকি খুবই ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে পৃথিবীর এমন আলামত রয়েছে। আপনারা যদি এই বিষয়ে জানতে চান বা জানার আগ্রহী হন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। আপনাদের আগ্রহ হলে আমি আরো অনেক আলামত নিয়ে পোস্ট করব।আজকের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি লাইক দিবেন আশা করি।
পরিশেষে বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্তই। সবাই ভাল এবং সুস্থ থাকুন। এবং বেশি বেশি করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে ক্ষমা চাইবেন। এবং ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করার জন্য কান্নাকাটি করবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে। আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য ধন্যবাদ। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ