কিয়ামতের পূর্বের লক্ষন ? কি কি আলামত প্রকাশ হলে কিয়ামত সংঘটিত হবে?
বর্তমান সময়ে আমাদের মাঝে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। যেখানে আমরা অনেক সময় ভাবি কিয়ামত এখনো হাজার বছর পূর্বে সংগঠন করা হবে। তবে এখানে আপনাদের একটি ধারণা দেওয়া আবশ্যক বলে মনে করি। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, পৃথিবীর শেষ নবী তারপরে আর কোন নবীর আগমন ঘটবে না।
এই কথা আমরা বিশ্বাস করেও , অনেক সময় ভাবি কেয়ামত এখনো অনেক বছর পূর্বে সংগঠন করা হবে। আপনার কি সত্যি মনে হয় কেয়ামত এখনো হাজার বছর পূর্বে সংগঠন হবে। কখনো নয় তবে আল্লাহই ভালো জানেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলে, কেয়ামত কবে কখন কিভাবে সংগঠন করা হবে?
উত্তরে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ক্বিয়ামত সংঘটিত কবে হবে কিভাবে হবে একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই ভাল জানেন। আমাদের নবী কিয়ামত সঠিক কবে হবে সেটা না জানলেও, কিয়ামতের পূর্বে এর বিভিন্ন ধরনের আলামত লক্ষণ সম্পর্কে হাদিস কোরআন থেকে আমরা জানতে পারি। সুতরাং আজকে কিয়ামতের পূর্ব লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করব।
কিয়ামতের পূর্ব লক্ষণ সম্পর্কে আমাদের জানা জরুরীঃ বন্ধুরা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীর শেষ নবী ও রসূল। তারপরে আর কোন নবীর আগমন পৃথিবীতে ঘটবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে,
হাদিসে অনেক কিছু পাওয়া যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কথা স্পষ্ট করে বলেছেন যে, দুই আঙুলের মাঝে যেমন বেশি ব্যবধান জায়গা নেই। ঠিক একইভাবে আমি (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আগমন) ও কিয়ামতের তেমন কোনো ব্যবধান নেই!
সুতরাং আমাদেরকে এখান থেকে বুঝতে হবে যে কেয়ামত আমরা, যতটা দূরে ভাবি ঠিক ততটাই নিকটবর্তী। এমন হাদিস থেকে জানা যায় যে, কেয়ামত এমন সময়ে সংঘটিত হবে মানুষের অজান্তেই সেটি ঘটবে। তাছাড়া কিয়ামতের সাধারণত দুই ধরণের আলামত রয়েছে।
###তার মধ্যে একটি হলো কিয়ামতের আলামত ছোট। অর্থাৎ কিয়ামতের ছোট আলামত।
###আর অন্যটি হলো কিয়ামতের আলামত বড়। অর্থাৎ কিয়ামতের বড় আলামত।
বিভিন্ন হাদিস কোরান গবেষণায় বর্তমান স্কলার আলেমরা, এ কথার সাথে একমত যে কেয়ামত খুবই নিকটবর্তী। কেননা হাদিস থেকে যত কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে আলামত রয়েছে। তার বেশিরভাগ লক্ষণ বর্তমান সময়ে প্রকাশিত হচ্ছে। একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই ভাল জানেন কিয়ামতের দিন বাকি আছে আর কত?
কেউ স্পষ্টভাবে বলতে পারবে না কেয়ামত কবে সংগঠন হবে। তবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভবিষ্যৎবাণী থেকে, প্রত্যেকটি ভবিষ্যৎ বাণী প্রায়ই বর্তমান সময়ে, প্রকাশিত হওয়ায় কেয়ামত খুবই নিকটবর্তী। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন আলামত আমাদের বিশ্বে প্রকাশিত হচ্ছে, কিনা আপনারাই বিবেচনা করে দেখুন। আশা করি কেয়ামতের লক্ষণ সম্পর্কে জানা জরুরী কিনা সেটি বুঝতে সক্ষম হয়েছেন।
কিয়ামতের পূর্বের লক্ষন ? কি কি আলামত প্রকাশ হলে কিয়ামত সংঘটিত হবে?
কেয়ামতের পূর্বের লক্ষণঃ হাদিস থেকে কেয়ামত হওয়ার ব্যাপারে, অনেক ধরনের আলামতঃ রয়েছে। বড় আলামত দশটি পাওয়া যায় কেয়ামতের পূর্বে সংঘটিত হবে। তবে এই দশটি বড় বড় কিয়ামতের আলামত, তখনই দেখা যাবে যখন ছোট ছোট কিয়ামতের আলামত গুলো প্রকাশ পাবে। যখন বড় আলামত এর একটি আলামত সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ পাবে,
তখন থেকেই দ্রুতগতিতে সকল বড় আলামত প্রকাশ পেতেই থাকবে। সুতরাং ছোট ছোট আলামত সম্পর্কে আমাদের জানা খুবই জরুরী। একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভালো জানেন কেয়ামত কবে সংগঠন হবে। কিয়ামত আমাদের থেকে কতটা নিকটবর্তী একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন। চলুন এখন আমরা কিয়ামতের ছোট লক্ষণ আলামত সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।
কেয়ামতের পূর্বে এর ছোট ছোট আলামত সমূহ নিম্নে দেওয়া হল!
*আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমন পৃথিবীতে, এবং তার মৃত্যু।
*কিয়ামতের পূর্বে বিভিন্ন ধরনের শ্রেণীর লোক সংগঠন হবে! এবং বেদাত মানুষের সামনে উপস্থাপন করা হলেও বেদাত মনে করবে না অনেকে!
*কিয়ামতের পূর্বে উলঙ্গ নারী বের হবে। তাদের গায়ে প্রসাদ থাকা অবস্থায়ও উলঙ্গ মনে হবে, তাদের অঙ্গভঙ্গি দেখে।
*বড় বড় বিল্ডিং নিয়ে গর্ব এবং মসজিদ বানানো নিয়ে গর্ব করা হবে কিয়ামতের পূর্বে।
*কিয়ামতের পূর্বে মানুষ মানুষকে বিনা কারণে হত্যা করবে। কিন্তু কী কারণে তাকে হত্যা করা হলো সেটা সে বুঝতে পারবে না জানতে পারবে না।
*নারীদের বাজারে যাতায়াত বেশি পরিমাণে দেখা যাবে কেয়ামতের পূর্বে!
*মানুষ হালাল জিনিসকে হারাম এবং হারাম জিনিসকে হালাল মনে করবে।
*কিয়ামতের পূর্বে ঈমান ধরে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে যাবে!
*ভালো মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে অর্থাৎ ইমানদার মানুষ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে! কিয়ামতের পূর্বে ইমানদার মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে যাবে।
*ভালো জিনিস কি মানুষ খারাপ এবং খারাপ জিনিসকে মানুষ ভালো, এমনকি মানুষের চরিত্র খারাপ যেটি সেটাকে খারাপ না ভেবে ভাল মনে করা হবে!
*মানুষ পুরুষেরা সাধারণত চুলে রং প্রয়োগ করবে, পুরুষেরা চুলে কালো রং ব্যবহার করবে।
*কেয়ামতের পূর্বে মুসলমানদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া থাকবে না।
*মানুষ মানুষকে হিংসা করবে ভালো কে খারাপ হিসেবে গণ্য করা হবে!
*মদ বিড়ি মাদক জাতীয় দ্রব্য গুলো মানুষ হালাল মনে করে পান করবে, এবং মাদকদ্রব্য জাতীয় খাবার প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে কেয়ামতের পূর্বে।
*কিয়ামতের পূর্বে বিভিন্ন বড় বড় ভূমিকম্প সহ অনেক ধরনের গজব আল্লাহর পক্ষ থেকে আগমন ঘটবে।
*পৃথিবীতে হারাম জিনিস কে হালাল হিসেবে চিহ্নিত করা হবে মানুষ সেটি বুঝতেও পারবেনা।
*নারীর উপস্থাপন করা হবে এমন ভাবে যেখানে ঈমান ধরে রাখা কষ্টকর। কিয়ামতের পূর্বে নারীদের প্রতি আকৃষ্ট পুরুষের বেড়ে যাবে।
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ গন আজকের আর্টিকেলে আমরা সাধারনত, কেয়ামতের পূর্বে এর বেশ কিছু লক্ষণ সহ আলামত নিয়ে আলোচনা করেছি। যেখানে আপনারা হয়তো অনেক ধরনের আলামত সম্পর্কে জেনে একটু অবাক হতে পারেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে যেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করার তৌফিক দান করে। বরাবরের মতো আমাদের আজকের আর্টিকেল এ পর্যন্তই। আশা করি আবার অন্য কোন আর্টিকেলে আবার দেখা হবে। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।