মুসলমানদের বড় দুইটি ধর্মীয় উৎসব ঈদ। একটি হলো ঈদুল ফিতর আর আরেকটি হলো ঈদুল আযহা। মহান আল্লাহ তালার প্রতি শুকরিয়া স্বরূপ আমরা দুইটি ঈদেই ২ রাকাত বিশিষ্ট নামায আদায় করে থাকি। আমরা যেমন প্রতিনিয়ত ৫ ওয়াক্ত নামায আদায় করে থাকি আর এইগুলোর নিয়ম বলতে গেলে প্রায়ই একই। তাই আমরা এগুলোর নিয়মকানুন ভুলি না। কিন্তু ঈদের নামায যেহেতু বছরে ২ বার আসে। তাই এটির নিয়মকানুন ভুলাটাই স্বাভাবিক। তাই যারা আমার মত ভুলে গিয়েছেন তাদের জন্যই আমার আজকের এই পোস্ট। যাতে করে আমরা সঠিকভাবে ঈদের নামাযটি আদায় করতে পারি। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে আসা যাক।
আমরা মূলত এখানে হানাফী মাযহাবের নিয়ম অনুযায়ী ঈদের নামাযের নিয়ম দেখব। কারণ আমাদের দেশের অধীকাংশ মুসলিমই হানাফী মাযহাবের অনুসারী।
ঈদের নামায একাকী আদায় করা যায় না। তাই সর্বপ্রথম আপনাকে কাতারবদ্ধভাবে দাড়িয়ে জামাতে শরীক হতে হবে। প্রত্যেক নামাযেরই নিয়ত করতে হয়। ঈদের নামাযের নিয়ত করা ফরজ। তাই আপনি মনে মনে নিয়ত করবেন যে, আমি দুই রাকাত ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব নামায আদায় করার জন্য কাতারবদ্ধ হয়েছি। উল্লেখ্য যে, আপনি যদি আরবি নিয়ত পারেন তাহলে সেভাবেও বলতে পারেন। আবার ইচ্ছে করলে বাংলায়ও বলতে পারেন এখানে কোন সমস্যা হবে না। নিয়ত করার পর ইমাম যখন “আল্লাহু আকবর” বলবে তখন আপনিও “আল্লাহু আকবর” বলে কান পর্যন্ত হাত তুলে নিয়ত বেঁধে নামায শুরু করে দিবেন। তারপর অন্যান্য নামাযের ন্যায় মনে মনে “সানা” পড়বেন। প্রথম রাকাতে ৩টি তাকবীর দিতে হবে। তাই “সানা” পড়া শেষ হলে ইমাম ৩ বার তাকবীর দিবেন ইমামের সাথে আপনিও তিনটি তাকবীর (আল্লাহু আকবর) দিবেন। এই তিনটি তাকবীরের মধ্যে প্রথম তাকবীরে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিবেন। অর্থাৎ নিয়ত বাঁধার মত হাত বাঁধবো না। দ্বিতীয় তাকবীরেও ঐ একই কাজ করবেন। তৃতীয় তাকবীরের সময় হাত নাভির নিচে বাঁধবেন। এরপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা পড়বেন। তারপর অন্য কোনো সূরা পড়বেন। এরপর অন্যান্য নামাযের ন্যায় রুকু সিজদা আদায় করে ইমাম সাহেব প্রথম রাকাত শেষ করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। এইবার শুরুতে ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়বেন। তারপর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে ইমাম প্রথম রাকাতের মত তিনটি তাকবীর দিবেন। পূর্বের মত প্রথম তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিবেন। দ্বিতীয় তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিবেন। তৃতীয় তাকবীরের সময়েও কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিব। (১ম রাকাতের ৩য় তাকবীরের মত হাত বাঁধব না। বরং হাত ছেড়ে দিব)। এরপর ইমাম সাহেব চতুর্থ তাকবীর বলবেন। এটি হচ্ছে রুকুতে যাওয়ার জন্য তাকবীর। চতুর্থ তাকবীর শুনার সাথে সাথে রুকুতে চলে যাবেন। এরপর বাকি সকল নিয়মকানুন অন্যান্য নামাযের মতই। আর এইভাবেই ইমামকে অনুসরণ করে ঈদের ২ রাকাত নামায শেষ করবেন।
নামায শেষ হওয়ার পর ইমাম দুইটি খুৎবা দিবেন। এই খুৎবা চলাকালীন আমাদের মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কেননা খুৎবা শুনা ওয়াজিব।
আশা করি উপরোক্ত বিষয়টি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকলে আপনার আর ঈদের নামায আদায় করতে গেলে ভুল হবে না। তাই চেষ্টা করবেন অন্তত ঈদের নামাযে যাওয়ার পূর্বে এই আর্টিকেলটি পড়ে যেতে। উল্লেখ্য যে, উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে লিখতে বসে আমি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসরণ করেছি। আর হ্যাঁ আমি উক্ত বিষয়ের উপর একটি অ্যানিম্যাশন ভিডিও আমার চ্যানেলে পাবলিশ করেছি। আপনি যদি চান ভিডিওটি দেখতে চান তাহলে আমার চ্যানেলে গিয়ে অথবা এই লিংকে https://youtu.be/fJCWlcr-DhU গিয়ে ভিডিওটি দেখতে পারেন। তাহলে আপনাদের বুঝতে আরো সুবিধা হবে।
আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।
সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।