Site icon Trickbd.com

কৃত্রিম চামড়ায় গজাচ্ছে লোম!

অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্যি যে, ল্যাবরেটরিতে তৈরি কৃত্রিম ত্বকে স্বাভাবিক লোম ও রসক্ষরণ গ্রন্থি তৈরি হবে বলে একদল গবেষক মানব প্রজাতিকে সুখবর দিয়েছেন।

জাপানের একদল বিজ্ঞানী ইঁদুরের স্টেম সেল থেকে অস্থি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

তারা জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে তারা মানুষের শরীরে এই ত্বক প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হবেন। এতে স্বাভাবিক ত্বক, লোম এবং রসক্ষরণ গ্রন্থি তৈরি হবে।

তারা জানান, এ সফল গবেষণার মাধ্যমে তারা পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তির বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হবেন।

বিজ্ঞানীরা আশাবাদ ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, কোনো ধরনের জৈবপদার্থ ছাড়াই ত্বক তৈরি করতে পেরেছেন তারা, যা মানুষের শরীরে পুরোপুরি স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। পরবর্তীতে কসমেটিক সার্জারির জন্য কোনো কোম্পানিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে পশুপাখির ওপর আর নির্ভরও করতে হবে না।

এ বিষয়ে গবেষক দল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ সাময়িকীতে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। নিবন্ধের প্রধান লেখক তাকাশি তসুজি (Takashi Tsuji) আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, আমাদের কল্পনা আজ সত্যি হতে চলেছে। আমরা ত্বককে নতুনভাবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের গবেষণায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ল্যাবরেটরিতে তৈরি কৃত্রিম ত্বক যথাযথভাবে কাজ করতে পারছে না। আমরা এখন যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি, তাহলো লোম গড়ে ওঠা ও গ্রন্থির ক্ষরণ যথাযথভাবে না হওয়া। তবে এ সীমাবদ্ধতা আমরা শিগগিরই কাটিয়ে উঠবো।

তাকাশি তসুজি জোর দিয়ে বলেন, আমরা ল্যাবরেটরিতে যে কৃত্রিম ত্বক তৈরি করেছি, তা স্বাভাবিকভাবেই ত্বক ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গঠন তৈরি করতে সক্ষম হবে।

ড. তসুজি ও তার গবেষক দল জাপানের টোকিও, সাগামিহারা ও স্যান্ডাইয়ের রিকেন সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি ইন কবে’তে গবেষণা করছেন।

তারা ইঁদুরের হাড়ের অস্থি থেকে কোষ নিয়ে তা স্টেম সেলে প্রতিস্থাপন করেন। ২০০৬ সাল থেকে স্টেম সেলের (ভ্রুণকোষ) কোষ প্রতিস্থাপনের কৌশল নিয়ে তারা কৃত্রিম ত্বক তৈরির গবেষণায় নিয়োজিত হন।

ত্বক প্রতিস্থাপনের সফল গবেষণার মাধ্যমে এই গবেষক দল আগুনে পুড়ে যাওয়া ত্বক স্বাভাবিক করতে ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে পারবেন বলে আশা দিয়েছেন। তবে এ জন্য আরো পাঁচ থেকে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে আমাদের। এটাই-বা কম কী!