Site icon Trickbd.com

[লাইফ স্টাইল]ব্রনের কিছু কারণ এবং দূর করুন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে।

Unnamed

ব্রণ, এক পরিচিত সমস্যা:

মানবদেহের ত্বকের গঠন বেশ বিস্ময়কর ও জটিল, যা সমস্ত শরীরকে ঢেকে রাখে। ত্বক মূলত তিনটি কাজ করে থাকে। যেমন দেহের অভ্যন্তরীণ গঠনকে রক্ষা করে। শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষের অব্যবহূত জিনিস বর্জন করে। ব্রণ একটি সাধারণ অথচ দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের সমস্যা। এটিকে যত্নের সঙ্গে সারিয়ে না তুললে শেষ পর্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় এসে দাঁড়ায়। ব্রণ দেহের চর্বিযুক্ত গ্লান্ড সেবাকাস টিস্যুতে বেশি দেখা যায়। যেমন মুখ, ঘাড়, বুক ও কাঁধে। সাধারণত ১২-১৪ বছরের ছেলেমেয়েরা এই রোগে বেশি ভোগে। তৈলাক্ত ত্বকেই ব্রণ বেশি হতে দেখা যায়। এদিকে ২০-৩০ বছরের পর এর প্রভাব কমে গিয়ে ভালো হয়ে যায়। ব্রণের ফলে মুখ ও ঘাড়ের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায় ও মুখে ব্ল্যাকহেড, ছোট গুটি এবং ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ব্ল্যাকহেড বা কালো তিল। এতে আক্রান্ত হয় কপাল, কপালের পাশে, গলা, চিবুক, বুক ও পিঠ। এই ব্ল্যাকহেডগুলো সংক্রামক এবং দ্রুত বিস্তার লাভ করে। ব্রণ বেশি দিন স্থায়ী হলে মুখে বিশ্রী দাগ দেখা যায়। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এই রোগে বেশি ভোগে। এর সঠিক কারণ অবশ্য নির্ণয় করা যায়নি। তবে মেয়েদের ত্বকের নিচে চর্বির পরিমাণ বেশি এবং হরমোনের পরিবর্তনগুলোও ছেলেদের চেয়ে বেশ প্রকট হওয়ায় ব্রণ দেখা যায় বলে ধারণা করা হয়।

ভুল খাদ্যাভাস, অনিয়মিত আহার গ্রহণ, অনুপযোগী খাবার, অত্যধিক শর্করা, অত্যধিক চর্বিযুক্ত খাবার ইত্যাদির জন্য ব্রণ দেখা দিতে পারে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনও ব্রণ হওয়ার অন্যতম কারণ। অত্যধিক চা কফি অ্যালকোহল পান, তামাক সেবন ইত্যাদিও এর কারণ। আবার বয়ঃসন্ধিক্ষণে রাত জেগে পড়াশোনা ও বসে থাকার ফলে বদহজম সৃষ্টি হওয়া, সাধারণ দুর্বলতা ও দুশ্চিন্তা থেকেও ব্রণ হতে পারে।

দিনে ৮-১০ গ্লাস পর্যন্ত পানি এবং তেল-ঝাল-মসলাবিহীন খাবার খাওয়া উচিত। অত্যধিক গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। চিনি ছাড়া লেবুর পানি, তাজা ফলের রস, আপেল, নাশপাতি, আঙুর, আনারস খেতে পারলে ভালো হয়। কাঁচা সবজি অঙ্কুরিত ছোলা, ডাল, কাঁচা বাদাম, যব ও লাল চাল খুবই উত্তম। অধিক শর্করা, অধিক মিষ্টি, অধিক চর্বি সবই পরিহার করা উচিত।
কিছু কিছু খাবার ব্রণের সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয়। যেমন—ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোমল পানীয়, সংরক্ষিত খাবার।

কড়া চা ও কফি, গুরুপাক খাবার ইত্যাদি।
দেখা যায়, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন বি৬ ব্যবহারে ব্রণ দূর হয়। যেকোনোভাবেই হোক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা প্রয়োজন। চিকিৎসক এবং ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রণ হলে ত্বকের যত্ন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা প্রয়োজন। মুখের ত্বকের যত্ন হলো প্রথমে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। তা ছাড়া শসার রস, গাজরের রস মুখে ব্যবহার করলে উপকর পাওয়া যাবে। অত্যধিক গুরুপাক খাবার না খাওয়া, অধিক রাত না জাগা, শরীরে ধুলাবালি, ঘাম জমতে না দেওয়া, অ্যাসিডিটি হতে না দেওয়া উচিত। মাঝেমধ্যে গরম জলের ভাপ নিলে ভালো হয়।
ব্রণ সারাতে খনিজ লবণের মধ্যে জিঙ্ক, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন বি৬ ভালো কাজ করে। এ জন্য খেতে হবে শস্যজাতীয় খাবার, মাছ, গরুর কলিজা, মসুর ডাল, বরবটি, রাজমা, পনির, গরুর দুধ, কর্নফ্লেকস, ডিম, তেল, মুলাজাতীয় সবজি, তৈলবীজ, বাদাম, সবুজ সবজি ইত্যাদি।