Site icon Trickbd.com

আপনি কি জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রের সম্পকে জানেন..না জানলে জানুন বিশতারিত ও আমার অভিজ্ঞতা

Unnamed

আমার অভিজ্ঞতা।
আইসক্রিমের দাম পাঁচ টাকা বেশি
নিয়েছিল… অভিযোগ করার ফলে
জরিমানার টাকা হিসেবে
অতিরিক্ত ১২৪০ টাকা উল্টা পেলাম…
আপনিও পেতে পারেন। কিন্তু
বেশিরভাগ লোকই এটা জানে না…
অথচ খুবই জরুরী।
দুই মাস আগে হাইওয়ের ধারে একটা
হোটেলে মধ্য বিরতির সময় বাস
থেমেছিল… হোটেলটি ঐ বাস
কোম্পানিরই। অন্যান্য হাইওয়ে
হোটেলের মত এখানেও গলাকাটা
খাবার দাম।
ইগলুর মালাই আইসক্রিম আমার প্রিয়…
এটার কোম্পানি নির্ধারিত দাম
পনের টাকা হলেও এখানে নিল পাঁচ
টাকা বেশি… অর্থাৎ বিশ টাকা…
বিলের কপি নিলাম… এরপর বিলের
কপির ছবি তুলে একটি অভিযোগপত্র
লিখে (ছবি কমেন্টে) সেটা পাঠিয়ে
দিলাম জাতীয় ভোক্তা অধিকার
সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর ইমেইল ঠিকানায়…
এরপর ব্যাপারটা প্রায় ভুলেই
গিয়েছিলাম।
বুধবার হঠাৎ একটা নাম্বার থেকে ফোন
এল… ভোক্তা অধিকারের পাবনা
অফিসের সহকারী পরিচালক এএসএম
মাসুমউদ্দৌলা… তিনি আমার
অভিযোগের বিষয়টা জানালেন। এর
সাথে এটাও বললেন, পরদিন বৃহস্পতিবার
তিনি ঐ রেস্টুরেন্টে অভিযানে
যেতে চান। আমি যেতে পারব কি না?
সেটা অন্য জেলা হওয়াতে ও আমার
হাসপাতালে কাজ থাকাতে, আমার
জন্য যাওয়া সম্ভব ছিল না।
পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি
নিজেই আবার ফোন দিলেন…

রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়েছেন
এবং প্রথবারের মত অভিযোগ হওয়ায়
পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
ভোক্তা অধিকার আইনের ধারা ৭৬(৪)
অনুযায়ী, আদায়কৃত জরিমানার ২৫
শতাংশ তাৎক্ষণিকভাবে
অভিযোগকারী পাবেন। সে হিসেবে
তিনি আমাকে কিছুক্ষণ আগে ১২৪০
টাকা (দশ টাকা স্ট্যাম্প খরচ) বিকাশ
করে দিলেন। আর ইমেইলে একটা
প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ পাঠিয়ে
দিলেন।
ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ধারা
৪০ অনুযায়ী, “কোন ব্যক্তি নির্ধারিত
মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোন পণ্য বা
সেবা বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব
করলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড
বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা
অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন”।
নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে দাম বেশি
নেওয়া ছাড়াও ভোক্তার অধিকার
ক্ষুণ্ণ হয় এমন সকল বিষয়েও অভিযোগ করা
যায়। যেমন-
মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা
সাধারণকে প্রতারিত করা, ভেজাল
পণ্য বিক্রি, পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না
করা, খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ,
ওজনে কারচুপি, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা
যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা
ইত্যাদি… (ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ
আইন, ২০০৯, চতুর্থ অধ্যায় ধারা ৩৭ থেকে
৫৩ দ্র.)
এরকম কিছু ঘটলে ভোক্তা অধিকারের
মহাপরিচালক, উপ-পরিচালক বা
প্রত্যেক জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
(ডিসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ
দিতে হবে।
লিখিত অভিযোগ সরাসরি,
ডাকযোগে বা ফ্যাক্স, ই-মেইল এর
মাধ্যমেও দেওয়া যাবে। অভিযোগের
সাথে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রশিদ
সংযুক্ত করতে হবে। শেষে নিজের নাম,
পেশা, ঠিকানা, পিতা-মাতার নাম,
মোবাইল নাম্বার আর ই-মেইল ঠিকানা
উল্লেখ করতে হবে।
আমার অভিযোগপত্রটি আমি ই-মেইলেই
লিখেছি… আইসক্রিমটি কোথা
থেকে কিনেছি, প্যাকেটে লেখা
নির্ধারিত দাম কত, আর তারা আমার
কাছে থেকে কত দাম নিয়েছে,
সেটা উল্লেখ করেছি অভিযোগপত্রে।
সাথে প্রমাণ হিসেবে বিলের ছবি।
পাঁচ টাকা বেশি না আমার কাছে…
কিংবা আমি জরিমানার টাকা
পাওয়ার জন্য অভিযোগ করিনি, আমি
অভিযোগ করেছিলাম আমার ভোক্তা
অধিকার ক্ষুণ্ণ করার জন্য। ধন্যবাদ
তাদেরকে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা
গ্রহনের জন্য। তারা নিজে থেকেই সব
করেছে।
জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রের
মোবাইল নাম্বার: ০১৭৭৭-৭৫৩৬৬৮
ই-মেইল: nccc@dncrp.gov.bd
আসলে, সবসময় জনসাধারণকে সাহায্য
করতে প্রস্তুত, কিন্তু জনসাধারণই তাদের
দ্বারস্থ হয় না। লোকে অভিযোগ খুব কম
করে তাদের কাছে।
আমাদের সমস্যা হল, আমাদের
বেশিরভাগ লোকই সঠিক জায়গায়
অভিযোগ না করে শুধু সমালোচনা আর
ভুল ধরতে ব্যস্ত…
নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হন,
অপরকেও সচেতন করুন
Exit mobile version