আসসালামু আলাইকুম।
সবাই কেমন আছেন?
বরাবরের মতো আজকেও আবার হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকের বিষয় হলো ভরের আপেক্ষিকতা বা Rest Mass সম্পর্কে।
তো চলুন কথা না বাড়িয়ে সরাসরি পোস্টে চলে আসি।
বিস্তারিত পোস্ট
দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতায় আমরা ভরকে ধ্রুব হিসেবে দেখেই অভ্যস্ত। এক কেজি লোহা কখনো দুই কেজি হবে না। যা বদলায় তা হচ্ছে ওজন। মহাশূন্যে মানুষ ওজনহীন অনুভব করে কিন্তু ভর যা ছিল তাই থাকে। ১৯০৫ সালে আইনস্টাইনের দেয়া আপেক্ষিক তত্ত্ব অন্য অনেক কিছুর মত ভরের ধারণাকেও বদলে দেয়। এ তত্ত্ব অনুযায়ী ভরও আপেক্ষিক। অর্থাৎ এক কেজি লোহার ভর অন্য কোথাও কম বা বেশি হতে পারে। ভর বস্তুর জড়তা নির্দেশ করে। জড়তা হচ্ছে বস্তুর গতির পরিবর্তনে সৃষ্ট বাধা। স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে বল প্রয়োগ করতে হয় আবার গতিশীল বস্তুকে স্থির অবস্থায় আনতে বল প্রয়োগ করতে হয়। এই বলের পরিমাণ নির্ভর করে বস্তুর জড়তা ধর্ম বা ভরের ওপর। আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব অনুযায়ী কোন বস্তু পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে স্থির থাকা অবস্থায় ভর নির্ণয় করলে একরকম ফল পাওয়া যাবে আর বস্তুটি পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল থাকলে আরেক রকম ফল পাওয়া যাবে। পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল বস্তুর ভর স্থির অবস্থার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়। বেগ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বস্তুর গতিশক্তি বৃদ্ধি পায় আর শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ভরও বৃদ্ধি পায়। যেমন আপনি রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো অবস্থায় গতিশীল ট্রেনে থাকা আপনার বন্ধুর ভর নির্ণয় করতে পারলে সেটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পাওয়া যাবে।
রেস্ট ম্যাস বা স্থির অবস্থার ভর বস্তু পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে স্থির অবস্থায় তার যে ভর পাওয়া যায় তাই স্থির অবস্থার ভর বা রেস্ট ম্যাস আর এটিই বস্তুর সর্বনিম্ন ভর।
ভর পরিবর্তনের ঘটনাটি নিচের সমীকরণটির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়:
এখানে,
v = বস্তুর বেগ
c = আলোর বেগ
mv = v বেগে চলন্ত অবস্থায় বস্তুর ভর
m0 = স্থির অবস্থায় বস্তুর ভর
ভরের আপেক্ষিকতার এ সমীকরণ অনুযায়ী বস্তুর বেগ শূন্য হলে সমীকরণের নিচের রাশির মান (1-v2/c2) হয় 1 । এ অবস্থায় mv = m0।
বেগ v বাড়তে থাকলে সমীরণের নীচের রাশিটির মান 1 এর চেয়ে কমে যায়। ফলে mv এর মান m0 এর চেয়ে বেশি হয়। বস্তুর বগ v বাড়তে থাকলে mv বাড়তে থাকে আর বেগ আলোর বেগের সমান হলে নিচের রাশিটির মান শূন্যে পৌঁছায় তখন তাত্ত্বিকভাবে বস্তুর ভর অসীম হয়। আলোর বেগ সেকেন্ডে ১,৮৬,০০০ মাইল। বাস, ট্রেন, উড়োজাহাজ কোন কিছুই এত বেশি বেগে চলতে পারে না যে আপেক্ষিক তত্ত্ব অনুযায়ী সেগুলোর ভর লক্ষণীয়ভাবে বাড়বে। তবে কণাত্বরক যন্ত্রে (particle accelerator) ইলেকট্রন, প্রোটনের মত কণিকাকে প্রচণ্ড বেগে চালিত করার সময় সেগুলোর ভর বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে। পুরনো দিনের টেলিভিশন বা কম্পিউটার মনিটরের পিকচার টিউবে প্রচণ্ড বেগে ইলেকট্রনকে পর্দার ওপর ছুঁড়ে দেয়ার সময় সেগুলোর ভর বৃদ্ধি পায় আর সেটি বিবেচনায় রেখেই টেলিভিশনের পিকচার টিউব তৈরি করা হয়।
→তো আজ এই পর্যন্তই। আপনারা সাবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর ট্রিকবিডির সাথেই থাকবেন। এই পোস্টা আপনাদের কেমন লাগল? জানাতে ভুলবেন না।
যদি কোনো কারণে আমাকে আপনাদের দরকার হয় তাহলে ফেসবুক অথবা ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন।
★ফেসবুকে আমাকে নক করুন এখানে ক্লিক করে
★অথবা আমাকে মেইল করুন।
ধন্যবাদ।