আসসালামু আলাইকুম
সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের টপিক।
বাংলাদেশ এ মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ এর কারনে হঠাৎ শীতকালে আষাঢ়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এসময় নানান রোগ দেখা দেয়। বিশেষ করে জ্বর সর্দি। বিপদ এড়াতে
যে ওষুধ সবসময় আপনার বাসায় বা হাতের কাছে
রাখবেন + ওষুধ সেবনে সতর্কতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধের উপায়…… ছোটখাটো সমস্যাগুলো যা
নিজেই জরুরি কিছু ওষুধের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব!!!
??এন্টিসেপটিক সল্যুশন (যেমন বিটাডিন/স্যাভলন/ডেটল ইত্যাদি)।
প্যারাসিটামল (Paracetamol)- ( নাপা, এইস,এক্সেল, প্যারাপাইরল, জেরিন প্যারাসেট,প্যানাডল…।) জ্বরের জন্য প্রথমে একটি প্যারাসিটামল খেতে পারেন। জ্বর বাড়লে (<১০৩F)বা ৩ দিনের বেশি জ্বর থাকলে ডাক্তার দেখান। তবে পেটে ব্যাথা, চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে
যাওয়া বা জন্ডিসের অন্য কোন উপসর্গ দেখলে প্যারাসিটামল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।… নোটঃঅধিক ব্যবহার যকৃতের জন্য ক্ষতিকর।দৈনিক সর্বোচ্চ
4000 mg (৪ গ্রাম) পর্যন্ত গ্রহণ করা যায় এর বেশি না।
??ট্রামাডল (Tramadol) কোন প্রকার ঝুঁকি ছাড়াই ট্রামাডল পেইনকিলার হিসেবে নেয়া যায়; এমনকি অ্যাসমা রোগীরাও এটি নিতে পারবেন। সিল্ভার সালফাডিয়াযিন (Silver sulfadiazine)
হালকা পুড়ে গেলে প্রথমে পোড়া জায়গাটি কলের পানির নিচে ধরুন। পানি শুকিয়ে গেলে যত্ন সহকারে পোড়া জায়গায় সিলভার সালফাডিয়াযিন অয়ন্টমেন্ট দিন। ফোসকা পড়লে সেটা উঠানোরনচেষ্টা করবেন না। তবে বেশি পুড়ে গেলে অবশ্যই
ডাক্তার এর সাথে যোগাযোগ করুন।
?? পভিডন-আয়োডিন মলম (Povidone-iodine ointment) হালকা রক্তপাত সহ ছোটখাটো কাটা-ছেড়ার ক্ষেত্রে ক্ষতটি শুকনা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চেপে ধরে রাখুন। রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেলে কাটা জায়গায় পভিডন-আয়োডিন অয়ন্টমেন্ট দিন। এসবক্ষেত্রে স্যাভলন দিয়ে পরিষ্কার না করাই ভাল। আপনি যদি কোন প্রকার ব্লাড থিনার (যেসব
ওষুধের কারণে রক্ত জমাট বাধার প্রক্রিয়া
বাধাগ্রস্থ হয়) নিয়ে থাকেন অথবা অনেক বেশি কেটে গেলে বা প্রচুর রক্তপাত হলে আপনার ডাক্তারের সাহায্য লাগতে পারে।
??এন্টিবায়োটিক ওয়েস্টম্যান (যেমন
ব্যাকট্রোবেন)।
?? স্যালাইন (ছোট বোতল)।
?? সালফা ডায়াজিন (সিল্ক ক্রিম), পোড়া
বা ক্ষতের জন্য। হাইড্রোকর্টিসন ক্রিমপোকায় কামড়ের চিকিৎসায় কাজে লাগে।
জ্বর ও মাথাব্যথার জন্য_প্যারাসিটামল সিরাপ,ট্যাবলেট ও সাপোজিটরি।
এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ_ঠাণ্ডা,
??অ্যালার্জির জন্য (যেমন অ্যালাট্রল/এভিল/লরাটিডিন)।
?? ভাব বা বমি রোধের জন্য_ডমপেরিডন
ট্যাবলেট,সাপোজিটরি, সিরাপ।
??ডায়রিয়ার জন্য মুখে খাবার স্যালাইন।
এসিডিটি রোধের জন্য এন্টাসিড ট্যাবলেট,
সিরাপ।এ ছাড়াও পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনভিত্তিক
কিছু ওষুধ যোগ করা যেতে পারে। যেমন তীব্র
ব্যথানাশক হিসাবে আইবুপ্রোফেন রাখা যেতে
??টাইমোনিয়াম সালফেট (Tiemonium sulphate)
যেকোন প্রকার পেটে ব্যাথার ক্ষেত্রে বিশেষ
করে পিরিয়ডের প্রথম কয়েক দিনের ব্যাথার জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর একটি ওষুধ। (আরও জানতে দেখুন কষ্টকর ঋতুস্রাব ও বাড়িতে বসে কষ্টকর স্রাবের নিরাময়)
??এসোমিপ্রাযল/ওমিপ্রাযল (Esomeprazole/ Omeprazole)
অধিকাংশ মানুষই কোন না কোন সময় বুক জ্বলা বা গ্যাসের সমস্যায় ভুগতে হয়; বিশেষ করে ভরপেট খাওয়ার পর। এসোমিপ্রাযল/ ওমিপ্রাযল পাকস্থলীতে অ্যাসিড গঠন কমিয়ে বুক জ্বলা কমাতে সাহায্য করে। অনেক সময় গ্যাসের জন্য অনেকটা হার্ট অ্যাটাকের মত বুকে ব্যাথা হয়, এজন্য ৩০ মিনিটের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত
নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যোগাযোগ করুন।
??অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড সাস্পেনশন
(Aluminum hydroxide suspension)
বুক জ্বলা এবং গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ২
চামচ করে অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড সাস্পেনশন খেতে পারেন। সাস্পেনশন্টি ফ্রিজে রাখতে পারবেন এবং ঠাণ্ডা খেলেই বেশি আরাম পাবেন। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কয়েকবার পাতলা পায়খানা হতে পারে, এতে চিন্তার কিছু নেই।
??ওরস্যালাইন(Oral Rehydration Saline) ডায়রিয়ার সময় খুব সহজেই শরীর থেকে অনেক পানি বেরিয়ে যায়। প্রত্যেকবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর স্যালাইন খাওয়া উচিত। শরীরে পানিশূন্যতা
হলে নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে।
অনতিবিলম্বে ডাক্তার দেখান যদি;আপনার
ডায়রিয়ার সাথে জ্বরও হয় ২ দিনের বেশি সময় ডায়রিয়া থাকে, মুখ শুকিয়ে
গিয়ে পিপাসা লাগে , খুব কম অথবা একেবারেই পেশাব না হলে ,প্রচণ্ড পেটে ব্যাথা হলে ,পায়খানার সাথে রক্ত গেলে
আপনার উচ্চ রক্তচাপ (hypertension) থাকলে ওরস্যালাইন খাওয়ার আগে রক্তচাপ মেপে নেয়া ভাল।
??ফেক্সোফেনাডিন/রুপাটিডিন (Fexofenadine/Rupatadine)
এই অ্যান্টিহিস্টামিনগুলো তুলনামুলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ। যাদের অ্যালারজিক রাইনিটিস (ধুলা,পরাগ, তেলাপোকা ইত্যাদির সংস্পর্শে আসলে হাঁচি হওয়া) আছে তারা রাতে একবার
ফেক্সোফেনাডিন বা রুপাটিডিন নিলে হাঁচি ও
নাক থেকে পানি পড়ার উপশম হবে।
??অ্যাসপিরিন (Aspirin)
আকস্মিক বুকে ব্যথা এবং পরবর্তীতে বাম হাত,চোয়াল বা গলার বাম দিকে ব্যথা হওয়া হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। হার্ট অ্যাটাকের যেকোন লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে ২/৩ টি বেবি অ্যাসপিরিন খেয়ে নিন এবং যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
হাঁপানির রোগীদের জন্য ইনহেলার, নেবুলাইজার, নাকের ওষুধ এখন থেকেই গুছিয়ে রাখা দরকার। ওষুধ সেবনে সতর্কতা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধ…
আপনার সামান্য একটু অসাবধানতা … অনেক বড় ঝুকি
নিয়ে আসতে পারে আপনার অজান্তেই … তাই জেনে নিন … ঔষধ কখন খাবেন …কিভাবে খাবেন এবং এর পরবর্তীতে কি কি খাওয়া উচিত আর কি উচিত না !
রোগ সারাতে ওষুধ খেতেই হয়।ওষুধ সেবনের জন্য আমাদের মনে বেশ কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। কোন ওষুধ কখন সেবন করতে হবে? খাবারের আগে না পরে?
নোটঃ
✮ কিছু কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো খাবারের আগে
সেবন করা একেবারেই মানা। এমন ওষুধের মধ্যে ব্যথানাশক ওষুধ অন্যতম। ব্যথানাশক ওষুধ,যেমনঃ—ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম,
ন্যাপ্রোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন,
কিটোরোলাক।কিটোরোলাক খালি পেটে গ্রহণ করলে অন্ত্র ফুটো হয়ে যেতে পারে।
এ ওষুধগুলো তাই খাবারের পর গ্রহণ করাই শ্রেয়।
✮ আবার ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে সেবন করতে হবে
প্রোটন পাম্প ইনহেবিটরজাতীয় ওষুধ।
ইসোমেপ্রাজল।
তবে এসব ওষুধ সেবন করতে হবে খাবারের আগে।
✮ আবার ঠান্ডা-সর্দি বা অ্যালার্জিজনিত রোগে
নির্দেশিত ব্যবস্থাপত্র অ্যান্টিহিস্টামিন খেতে
হয়।
যেমন : লোরাটাডিন, সেটিরিজিন,
ফেক্সোফেনাডিন এগুলো খালি পেটে গ্রহণ করলে
এর কার্যকারিতা বেশি হয়।
✮ অ্যান্টাসিড খাবারের পরপরই না খেয়ে ৩০ মিনিট
পর খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
✮ সিপ্রোফ্লোক্সাসিন সেবন করেননি এমন লোকের সংখ্যা কম। এটি খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে সেবন করাই ভালো। সিপ্রোফ্লোক্সাসিন গ্রহণের দুই ঘণ্টার মধ্যে দুগ্ধজাত খাবার বা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, আয়রন বা জিংকযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
কারণ, এসব উপাদানের সঙ্গে আন্তক্রিয়ার কারণে রক্তে ওষুধের মাত্রা কমে যায়। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায় না। এ কারণে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, মাল্টিভিটামিন সিপ্রোফ্লোক্সাসিন সেবনের বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে সেবন করতে পারেন।
✮ আবার পেনিসিলিন খালি পেটে সেবন করাই
ভালো। অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাবার রক্তে
প্রোপ্রানোললের শোষণ ও মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
তাই কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে বেশি শোষণের ফলে
বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। আবার
গ্রাইসিওফালভিন (একটি অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ)
উচ্চ চর্বিজাতীয় খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করলে এর শোষণমাত্রা বহুলাংশে বেড়ে যায়। তাই
চর্বিজাতীয় খাবারের সঙ্গে এটি গ্রহণ করলে বেশি কাজে আসে।
বিঃদ্র কোন রোগে কি ওষুধ খাবেন সেই বিষয়ে একটা পি,ডি,এফ ফাইল সংযোযন করা হবে। পোস্ট এর নিচে। যথা শিঘ্রই।
যে কোনো সময় ফেসবুকে আমি